পথচারীদের মৃত্যু ঠেকাতে শহরের ৪৬টি মোড়ে জ়েব্রা ক্রসিংয়ে বুম ব্যারিয়ার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশ। ফাইল চিত্র।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম চার মাসে শহরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। কিন্তু সেই সংখ্যার মধ্যেও পথচারীদের মৃত্যুর ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছে লালবাজারের। তাই দুর্ঘটনায় পথচারীদের মৃত্যু ঠেকাতে শহরের ৪৬টি মোড়ে জ়েব্রা ক্রসিংয়ে বুম ব্যারিয়ার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশ।
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে শহরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৪ জনের। যাঁদের মধ্যে রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জন পথচারীর। পথচারীদের এমন মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত লালবাজার। তাই বেপরোয়া ভাবে রাস্তা পারাপার রুখতে শহরের পথে বসানোর জন্য ৮৭টি বুম ব্যারিয়ার কিনছে পুলিশ। যার জন্য খরচ হবে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে বুম ব্যারিয়ার কেনার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ৩০টি বুম ব্যারিয়ার রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের কোন কোন মোড়ে বুম ব্যারিয়ার দরকার, তা ট্র্যাফিক গার্ডগুলির কাছে জানতে চেয়েছিল লালবাজার। সেই মতো ট্র্যাফিক গার্ডগুলি নিজেদের এলাকা নিয়ে তথ্য জানিয়েছিল। এর পরেই ট্র্যাফিক বিভাগের ‘রোড মার্কিং’ সেকশন চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করে।
লালবাজার জানিয়েছে, পথচারীরা পারাপারের যথাযথ জায়গা দিয়ে সিগন্যাল মেনে রাস্তা পেরোলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই কমে। এ কথা মাথায় রেখে গত বছর পার্ক স্ট্রিট, এক্সাইড মোড়ে বুম ব্যারিয়ার বসানো হয়েছিল। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, যে সমস্ত মোড়েপথচারীদের চাপ সবচেয়ে বেশি, সেখানেই দ্বিতীয় দফায় বুম ব্যারিয়ার বসানো হচ্ছে। পরে ছোট-বড় সব মোড়েই বসানো হবে। তবে বিভিন্ন মোড়ে বুম ব্যারিয়ার থাকলেও পথচারীরা যেখান-সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার করেন বলেও অভিযোগ। এমনকি, যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরাও মাঝেমধ্যে বুম ব্যারিয়ারের ব্যবহার ঠিক মতো করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে। লালবাজার জানিয়েছে, বুম ব্যারিয়ারের যথাযথ ব্যবহার করা নিয়ে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পথচারীদের বেলাগাম ভাবে রাস্তা পারাপার ঠেকাতে শহরের বেশ কিছু মোড়ে ২০১৭ সালে প্রথম বুম ব্যারিয়ারের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই নজরদারির অভাবে আবার অবস্থা যে-কে-সেই হয়ে দাঁড়ায়। এ বার যাতে তেমন পরিস্থিতি না হয়, তা দেখতে বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক।