ফাইল চিত্র।
শহরের আনাচকানাচে তৈরি হওয়া বিভিন্ন বহুতল ও সেখানকার গাড়ি রাখার জায়গা ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উপরে কী প্রভাব ফেলেছে, পুলিশের কাছে তা জানতে চেয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তাই ওই সমস্ত বহুতলে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী পার্কিং লট তৈরি হয়েছে কি না, তা জানতে ‘ট্র্যাফিক অডিট’ শুরু করতে চলেছে লালবাজার। দ্রুত ওই অডিটের কাজ শুরু হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, সম্প্রতি পুরসভার সঙ্গে বৈঠকের পরে শহরের বহুতলগুলির ট্র্যাফিক অডিট শুরু করার কথা জানিয়েছে লালবাজার। কিন্তু কেন? ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা জানান, ২০১৭ সাল থেকে চালু হওয়া নিয়ম অনুযায়ী, বহুতলের (ছোট ও মাঝারি বহুতল বাদে) নকশার অনুমোদনের জন্য তাঁদের কাছ থেকে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নিতে হয়। গত কয়েক বছরে লালবাজার ১৬টি বহুতল এবং দু’টি বেসরকারি হাসপাতালের নকশার অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের দাবি, যে নকশা অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হয় ও শেষে যা তৈরি করা হয়, তার মধ্যে ফারাক থাকে। ফলে বাস্তবে বহু ক্ষেত্রে বহুতলগুলির সামনে গাড়ি রাখার জায়গা তৈরি করার ফলে পথে যানজট হয়। সম্প্রতি পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের তরফে ওই অনুমোদনের বিষয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয়। তখন লালবাজারের ট্র্যাফিক কর্তাদের মনে হয়, তাঁরা যে সব বহুতলের নকশার অনুমোদন দিয়েছেন, সেগুলির পার্কিং লট ঠিকঠাক রয়েছে কি না, তা জানা প্রয়োজন। আর তাই ট্র্যাফিক অডিটের সিদ্ধান্ত। ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওই অডিট হলেই জানা যাবে, কোথায় কোথায় নকশায় বদল ঘটেছে। প্রাথমিক ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অনেক বহুতলেই নকশার পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে।’’ ওই অডিট করা মানেই ভীমরুলের চাকে ঢিল মারা বলে মত ওই আধিকারিকের।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিভিন্ন বহুতলে পার্কিং লটের জায়গা না থাকা সত্ত্বেও আগে তা তৈরির অনুমোদন মিলে যেত। ফলে রাস্তায় গাড়ি রাখার জেরে যানজট সামলাতে অসুবিধায় পড়তে হতে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের। ২০১৭-এ ঠিক হয়, বহুতল তৈরির ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক পুলিশের অনুমোদন বাধ্যতামূলক। এর পরেই পুলিশ পার্কিংয়ের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেওয়া শুরু করে। কিন্তু অনুমোদন মেনেই বহুতল তৈরি হয়েছে কি না বা পরে নকশার পরিবর্তন ঘটেছে কি না, তা দেখা হত না। ট্র্যাফিক অডিটে সে সব সামনে আসবে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা।