ফাইল চিত্র।
রাতের শহরে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তে থাকায় নড়েচড়ে বসেছেন লালবাজারের কর্তারা। বেপরোয়া ও মত্ত গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এ বার কোমর বেঁধে নামছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই বন্ডেল গেট উড়ালপুলে দু’টি বেপরোয়া বাইকের মধ্যে সংঘর্ষে দুই আরোহী মারা যান। জখম হন আরও দু’জন। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না বলে জেনেছে পুলিশ। এর পরে গত শনিবার বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে এসে রাস্তার পাশের দু’টি দোকানে ধাক্কা মারেন এক চালক। যাদবপুরের ওই ঘটনাতেও এক জনের মৃত্যু হয়।
দু’টি ঘটনাই ঘটেছে সপ্তাহান্তে, রবি ও শনিবার। একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতে থাকায় রাতের শহরে আরও কঠোর ভাবে নাকা-তল্লাশি চালাতে বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। সেই সঙ্গে রাত ৯টা থেকে শুরু হওয়া ওই নাকা-তল্লাশিতে ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি অথবা অতিরিক্ত ওসিদের রাত ১২টা পর্যন্ত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকর্তারা। রবিবার রাত থেকেই এই নয়া ব্যবস্থা চালু হয়েছে। উপরতলার নির্দেশ মোতাবেক নাকা-তল্লাশিতে উপস্থিত থাকছেন ট্র্যাফিক গার্ডের এক জন করে ইনস্পেক্টর।
রবিবার রাতের নাকা-তল্লাশিতে ৫২ জন মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে লালবাজার। সব চেয়ে বেশি সংখ্যক মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ড। সেখানে ওই রাতে সাত জন চালক ব্রেথ অ্যানালাইজ়ারে মত্ত হিসাবে ধরা পড়েন। এ ছাড়া, সাউথ ট্র্যাফিক গার্ড এবং যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ড পাঁচ জন করে মত্ত চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই রাতে নৈশ কার্ফু অমান্য করে রাস্তায় বেরোনোর অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ৮৬২ জন চালকের বিরুদ্ধে।
কেন শুধুমাত্র শুক্র, শনি ও রবিবারই ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে নাকা-তল্লাশিতে জোর দেওয়া হচ্ছে? ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, সপ্তাহ শেষের ওই তিন দিনই সব চেয়ে বেশি সংখ্যক চালক মত্ত অবস্থায় গাড়ি নিয়ে বেরোন। রবিবার রাতে বাইকের চেয়ে গাড়ির চালকেরাই বেশি সংখ্যায় মত্ত অবস্থায় ধরা পড়েছেন। নাকা-তল্লাশির কাজে যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তা নিশ্চিত করতেই ওসি বা অতিরিক্ত ওসিদের সেখানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
বছরকয়েক আগে শহর জুড়ে গভীর রাত পর্যন্ত নাকা-তল্লাশির ব্যবস্থা চালু করেছিল লালবাজার। থানা এবং ট্র্যাফিক পুলিশ যৌথ ভাবে সেই তল্লাশি চালাত। লালবাজারের কর্তাদের দাবি, ওই ভাবে নাকা-তল্লাশি চালানোয় তাতে সাফল্য এসেছিল। রাতের শহরে দুর্ঘটনা এবং অপরাধে কিছুটা লাগাম দেওয়া গিয়েছিল। তখন উচ্চপদস্থ কর্তাদেরও নাকা-তল্লাশিতে থাকতে হত। খোদ পুলিশ কমিশনার পুরো বিষয়টি পরিচালনা করতেন। পুলিশ বাহিনীর একাংশের দাবি, মত্ত চালক এবং অপরাধীদের ধরতে রাতে ফের ওই রকম কড়া অবস্থান নিলে আবারও সাফল্য আসবে।