Coronavirus

শহরকে ঘরবন্দি করতে বিশেষ বাহিনী নিয়ে তৈরি লালবাজার

শহরে এই লকডাউন কড়া ভাবে পালন করতে চায় লালবাজার। এ জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। লকডাউন সফল করতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা ছাড়াও শহরের ৫৬টি বাজারকে বেছে নিয়ে সেখানে পুলিশের বিশেষ দল রাখা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৪:০৫
Share:

ছবি পিটিআই

আজ, বৃহস্পতিবার, শনিবার এবং আগামী বুধবার গোটা রাজ্যে পূর্ণ লকডাউন হতে চলেছে। এত দিন রাত ১০টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত লকডাউন ছিলই, তা বহাল থাকছে। সেই সঙ্গে সকাল ছ’টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পূর্ণ লকডাউন থাকবে।

Advertisement

শহরে এই লকডাউন কড়া ভাবে পালন করতে চায় লালবাজার। এ জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। লকডাউন সফল করতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা ছাড়াও শহরের ৫৬টি বাজারকে বেছে নিয়ে সেখানে পুলিশের বিশেষ দল রাখা হয়েছে। সব রকম পরিস্থিতি সামলাতে অতিরিক্ত তিনটি কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। যেখানে থাকবে বিশাল বাহিনী। পাশাপাশি প্রতিটি কন্ট্রোল রুমে কমব্যাট ফোর্সের ১০ জন করে জওয়ান থাকবেন। প্রসঙ্গত লকডাউনের শুরুতে কমব্যাট ফোর্সকে বাজার পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছিল। ওই বাহিনীর কেউ কেউ সংক্রমিত হওয়ায় বিক্ষোভ ছড়িয়েছিল এ নিয়ে। এ বার তাই শুধু রিজার্ভে রাখা হচ্ছে ওই বাহিনীকে‌। বাসিন্দারা যাতে লকডাউন এবং করোনার বিধি মেনে চলেন সে জন্যে বুধবার বিভিন্ন থানা এলাকায় মাইকিং শুরু হয়েছে।

করোনা মোকাবিলায় মার্চেই প্রথম দফার লকডাউনের শুরুতে কঠোর হয়ে গোটা শহরকে গৃহবন্দি করে দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু কিছু দিন পর থেকেই পুলিশের ভূমিকার বদল ঘটে। কার্যত ‘নরম’ পুলিশের জেরেই ওই সময়ে লকডাউন সফল হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাই এ বার লকডাউন পুরোপুরি মানতে থানাগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছে লালবাজার।

Advertisement

সূত্রের খবর, বৃৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের ২৮টি জায়গায় নাকা তল্লাশির পোস্ট তৈরি করে সেখানে থাকবেন পুলিশকর্মীরা। পাঁচ জন করে কর্মী এক জন অফিসারের নেতৃত্বে সেখানে থাকবেন। গাড়ি তল্লাশি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: করোনার ভয়ে কুমোরটুলি ছাড়ছেন কারিগরেরা

লালবাজার জানিয়েছে, এই লকডাউনে কোনও বাজার খোলা থাকবে না। বন্ধ থাকবে পোস্তা, কোলে মার্কেটের মতো পাইকারি বাজারও। বাজারগুলি যাতে বন্ধ থাকে তার নজরদারিতে প্রতিটি বাজারে তিন জন করে পুলিশকর্মী থাকবেন। এ ছাড়া ডিভিশনাল ডিসির অফিসে থাকবে ৩০ জন কর্মীর একটি রিজার্ভ বাহিনী। ওই দলের নেতৃত্বে থাকছেন এসি পদমর্যাদার দু’জন অফিসার। যাঁদের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকা ঘুরবে ওই বাহিনী।

এক পুলিশকর্তা জানান, লকডাউন সফল করতে অনেকটা ধর্মঘটের মতো শহর জুড়ে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এ বার। ৫৬টি বাজারের বাইরেও যে সব বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়নি, সেখানে থানা থেকে বাহিনী দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ডিভিশনের তরফে নজরদারি চালাতে একটি করে দল থাকছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাহিনীর আটশোর বেশি পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত। সুস্থতার হার বেশি হলেও কাজে যোগ দিতে সময় লাগবে তাঁদের। আক্রান্তদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি রয়েছে থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মী এবং অফিসারেরা। আগের বারের লকডাউনে এই দুই বিভাগ অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল। এ বার সেই চাপের কথা মনে রেখেই লকডাউন সফল করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, সাপ্তাহিক লকডাউনের দিনে সব অফিস, বন্ধ থাকবে। কোনও গণ পরিবহণও চলবে না। তবে ওষুধের দোকান, বিদ্যুৎ, জরুরি পণ্য পরিষেবা, বাড়িতে খাবার পৌঁছনোর পরিষেবা চালু থাকবে।

লালবাজারের খবর, কন্টেনমেন্ট জ়োনে লকডাউন ৩১ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকছে। তার সঙ্গেই সপ্তাহে দু’দিন করে পূর্ণ লকডাউন হবে।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে একাকী বৃদ্ধার পাশে থানা

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement