লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
পুলিশ এবং সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের জমির বেআইনি দখল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জমিও বেদখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে জন্য কলকাতা পুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল-সহ রাজ্য পুলিশের আধিকারিকেরা মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পড়েন। এ বার সরকারি জায়গা থেকে বেআইনি দখলদার এবং হকার সরাতে থানাগুলিকে নির্দেশ দিল লালবাজার। শুক্রবার লালবাজারের তরফে থানাগুলিকে বেআইনি দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। কোথায় কোথায় সরকারি জমিতে এমনটা রয়েছে, তার তালিকা বানিয়ে সোমবার লালবাজারে পাঠাতে হবে।
এক পুলিশকর্তা জানান, করোনার প্রথম দফা লকডাউনের আগে যত হকার ছিল, সেটাকে মাপকাঠি ধরে কোথায় কোথায় নতুন হকার বসেছে, তা খুঁজে থানাগুলিকে তালিকা করতে বলা হয়েছে। তা হলেই বোঝা যাবে, গত কয়েক বছরে ফুটপাত দখল করে কোথায় কোথায় হকার বসেছে। বেআইনি হকারদের সরিয়ে দিয়ে ওই ফুটপাত কী ভাবে দখলমুক্ত করা হবে, তা ঠিক হবে তালিকা হাতে পেলেই। পাশাপাশি, কোনও জমি দখলের অভিযোগ থানায় জমা পড়ে থাকলে তা কলকাতা পুলিশের অধীন থানাগুলিকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। শুক্রবারই লালবাজারে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই নির্দেশ জারি হয়েছে।
কলকাতায় সরকারি জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রী তোপ দেগেছিলেন। তার পরেই সরকারি জমি জবরদখল ঠেকাতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে রাজ্য সরকার। যাতে আছেন অর্থসচিব মনোজ পন্থ, সেচ সচিব প্রভাত মিশ্র, রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা এবং কলকাতাপুলিশের নগরপাল বিনীত গোয়েল। ওই কমিটি সরকারি জমির দখল রুখতে রূপরেখা তৈরি করবে। সরকারি জমির জবরদখল নিয়ে উদ্বেগ দেখান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।
তবে পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে বেআইনি হকারদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হলেও এখন তা প্রায় হয় না। গড়িয়াহাট ও অন্যান্য জায়গায় হকারদের স্থায়ী কাঠামো বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সবের মধ্যে লালবাজারের এই নতুন নির্দেশ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। যদিও সরকারি জমি দখল নিয়ে পুলিশ তৎপর হলেও রাজনৈতিক বাধা সরিয়ে তা কতটা কার্যকর হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।