লালবাজার। ফাইল চিত্র।
ধাপে ধাপে কয়েক হাজার সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে এসেছে এ শহর। এ বার সেই ক্যামেরার ছবি বিশ্লেষণে ‘কৃত্রিম মেধা’ (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করতে চলেছে লালবাজার। শনিবার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সম্মেলন ‘ইনফোকম ২০১৯’-এর একটি অনুষ্ঠানে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এ কথা জানান। তিনি এ-ও জানান, কোনও ঘটনা ঘটলে সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়া সেই ছবিতে কোনও দাগি দুষ্কৃতী রয়েছে কি না, তা বার করতে কৃত্রিম মেধার ব্যবহার করা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারে দাগি দুষ্কৃতীদের তথ্য ভাঁড়ার বা ক্রিমিনাল রেকর্ডস সেকশন রয়েছে। সেই তথ্য ভাঁড়ারের সঙ্গে সিসি ক্যামেরার সংযোগ করা হচ্ছে। তার ফলে সিসি ক্যামেরার ছবিতে কোনও দাগি দুষ্কৃতীর গতিবিধি ধরা পড়লেই ক্যামেরা তা চিহ্নিত করতে পারবে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে দ্রুত সেই ছবি বিশ্লেষণ করে পুলিশ দুষ্কৃতী চিহ্নিত করতে সক্ষম হবে। ছবিতে দাগি দুষ্কৃতী থাকলে পুলিশকে সেই সঙ্কেতও পাঠাবে কৃত্রিম মেধা সম্পন্ন কম্পিউটারটি।
লালবাজারের দাবি, পাশাপাশি কোনও ধৃত অপরাধীর ছবি তুলে সফটওয়্যারে ফেললে কৃত্রিম মেধার সাহায্যে কম্পিউটার বলে দেবে, তার কোনও পুরনো অপরাধের নজির আছে কি না! এ ব্যাপারে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও চালু হবে। তাতে শুধু মুখ নয়, চোখের পাতা, দাঁতের গড়ন দিয়েও চিহ্নিত করা সম্ভব।
পুলিশের দাবি, সাইবার অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়াতেও নানা অপরাধের সূত্র লুকিয়ে থাকে। পুলিশ কমিশনার জানান, তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়াতেও নজরদারি চালান। এ জন্য পৃথক একটি শাখা রয়েছে। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য ‘ইনফরমেশন সিকিওরিটি ল্যাবরেটরি’ খোলা হচ্ছে।
সাইবার অপরাধ যে বাড়ছে তা ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড বুরো’র পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, নিত্য নতুন অপরাধের কায়দা বদলাচ্ছে অপরাধীরা। তার ফলে প্রতিনিয়ত পুলিশকেও ‘চোর’ ধরার কায়দা বদলাতে হচ্ছে। এ দিনের অনুষ্ঠানে পুলিশ কমিশনার মেনে নিয়েছেন, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে ‘চোর-পুলিশ’ খেলা অবিরাম
চলছেই। তবে তাঁর দাবি, সাইবার অপরাধের বাড়বাড়ন্ত কমাতে কলকাতা পুলিশ তৎপর।