লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
আধার কার্ডের মতো সরকারি নথিতে থাকা নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য আড়াল করতে রাজ্যের অর্থ দফতরকে চিঠি দিল কলকাতা পুলিশ। আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য ‘ক্লোন’ করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একের পর এক অভিযোগ সামনে আসতেই লালবাজার এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। বৃহস্পতিবার লালবাজারের তরফে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। পুলিশের আবেদন, সরকারি ওয়েবসাইটে আধারের যে তথ্য আপলোড করা হয়, তা যাতে যে কেউ দেখতে না পারে, এমন ব্যবস্থা করা হোক।
মাসখানেক আগে আধারের বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে বাগুইআটির বাসিন্দা তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ব্যক্তি শেক্সপিয়র সরণি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে মোক্তার আলম এবং রৌশন আলি নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে লালবাজার। বছর বাইশের অভিযুক্ত মোক্তার চোপড়া এলাকায় একটি আধার সেবা কেন্দ্র চালাত। ধৃত দু’জনকে ইতিমধ্যেই হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশি জেরার মুখে ধৃতেরা জানিয়েছে, একাধিক ওয়েবসাইট থেকে আধারের তথ্য হাতিয়েছিল তারা। প্রথমে ওই সমস্ত তথ্যের প্রতিলিপি বার করা হত। তার পরে ফোটোশপের মাধ্যমে কারিকুরি করে সেই তথ্য ‘ক্লোন’ করে নিত তারা। যা দিয়ে অন্যের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হত টাকা। এ সব জানার পরেই ঘটনার গুরুত্ব বুঝে লালবাজারের তরফে চিঠি দেওয়া হল অর্থ দফতরকে।
একাধিক সরকারি কাজে রাজ্যের তরফে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেখানে আধারের আঙুলের ছাপের মতো অতি ব্যক্তিগত তথ্যও থাকে। সাধারণ নাগরিকদের সেই তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে আপলোড করা থাকে। জালিয়াতেরা যে কোনও সময়ে সেখান থেকে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তদন্তকারীরা। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া দু’জনকে জেরা করে এ বিষয়ে আরও খানিকটা নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘একাধিক সরকারি কাজে নাগরিকদের আঙুলের ছাপ থেকে শুরু করে আধারের যাবতীয় তথ্য ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকে সেই তথ্য জালিয়াতদের হাতে পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই সেই সব তথ্য আড়াল করার অনুরোধ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’