আইআইটি খড়্গপুর। ফাইল চিত্র।
সিগন্যাল ছিল সবুজ। গাড়ি চলাচলের মধ্যেই রাস্তা পেরোনোর চেষ্টা করছিলেন এক পথচারী। সেই সময়ে গাড়িটি ধাক্কা মারে তাঁকে। জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মারা যান ওই ব্যক্তি। গত সপ্তাহে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল মানিকতলা মোড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, পথ-দুর্ঘটনার জন্য গাড়িচালকদের একাংশের পাশাপাশি বেপরোয়া পথচারীরাও দায়ী। অভিযোগ, অনেকে নিয়ম মেনে রাস্তা পারাপার করেন না। এই প্রবণতায় রাশ টানতে এ বার শহরের ১৭টি জনবহুল মোড়ে সুষ্ঠু ভাবে রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ বানানোর প্রস্তাব দিতে চায় লালবাজার। পাশাপাশি সেই ফুট ওভারব্রিজ বানানো কতটা যুক্তিসম্মত, তা যাচাই করার জন্য আইআইটি খড়্গপুরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে চিঠি দিয়েছে তারা। একই সঙ্গে পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করা প্রয়োজন, তা-ও সমীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে আইআইটি খড়্গপুরকে। গত সপ্তাহেই লালবাজারের তরফে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের কোন কোন মোড় বা বড় রাস্তার সংযোগস্থলে ফুট ওভারব্রিজ দরকার, তা খতিয়ে দেখার জন্য সম্প্রতি সব ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাতেই ১৭টি জায়গার নাম উঠে আসে। যার মধ্যে রয়েছে ধর্মতলা মোড়, বি বা দী বাগ, বড়বাজারের পগেয়াপট্টি, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনের রাস্তা, দেশপ্রিয় পার্ক, বাগমারি বাজারের মতো জায়গা।
লালবাজার জানাচ্ছে, রাস্তা পেরোতে গিয়ে গাড়ির ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছর শহরে পথ-দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ১৯৬ জনের। যাঁদের মধ্যে পথচারীর সংখ্যা ছিল ৭৭। সেই সংখ্যা কমিয়ে রাস্তায় পথচারীদের যাতায়াত আরও মসৃণ করা এবং রাস্তা পারাপারের সময়ে তাঁদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যাতে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পথচারীদের সুরক্ষার বিষয়টি দেখা হয়। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই ফুট ওভারব্রিজ তৈরি হলে পথচারীদের সুরক্ষা তো বৃদ্ধি পাবেই, বাড়বে গাড়ির গতিও। কারণ, পথচারীদের রাস্তা পার করাতে গিয়ে গাড়ি চলাচল বাধা পায়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তা পেরোনোর জন্য সাবওয়ে ব্যবহার করায় পথচারীদের একাংশের অনীহা রয়েছে। তাই প্রস্তাবিত ওই ফুট ওভারব্রিজে এসক্যালেটর এবং লিফট বসানোর কথাও বলা হয়েছে। যাতে বয়স্ক নাগরিক থেকে প্রতিবন্ধী— সকলের সুবিধা হয়।