ছবি: সংগৃহীত।
বাহিনীতে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। পুলিশকর্মীদের মধ্যে সুস্থতার হার বেশি ঠিকই, তবু সংক্রমণের হার কমাতে চায় লালবাজার। আর সে কথা মাথায় রেখেই বাহিনীর সদস্যদের জন্য নির্দিষ্ট কার্যবিধি বা ‘এসওপি’ তৈরি করল লালবাজার। ৩০ পাতার ওই কার্যবিধিতে করোনা-কালে কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, তা বলা রয়েছে।
সূত্রের খবর, এপ্রিলের মাঝামাঝি নাগাদ গার্ডেনরিচ থানার এক আধিকারিক প্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার পর থেকেই সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে কলকাতা পুলিশের কর্মী-অফিসারদের মধ্যে। বুধবারই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন পুলিশকর্মী। যার মধ্যে রয়েছেন, দক্ষিণ শহরতলি ডিভিশনের এসি। এ দিন রাত পর্যন্ত বাহিনীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৬২৮। তবে এ দিনই আবার সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩৫ জন। এ নিয়ে মোট ১৩২৫ জন সুস্থ হলেন।
লালবাজারের এক কর্তা বললেন, ‘‘করোনায় রাজ্য পুলিশের থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন কলকাতা পুলিশের সদস্যেরা। কারণ, করোনার বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করছেন তাঁরা। সংক্রমণ ঠেকাতে এ বার একটি কার্যবিধি চালু করা হচ্ছে। বুধবার রাতের মধ্যেই সব থানা, ট্র্যাফিক গার্ড ও ইউনিটে সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা পৌঁছে যাবে।’’
লালবাজার জানিয়েছে, থানা, ট্র্যাফিক গার্ড ও পুলিশের সমস্ত ইউনিটে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। ট্র্যাফিক গার্ড ও থানায় বহিরাগতদের জন্য একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দিতে বলা হয়েছে। সেখানেই তাঁরা অভিযোগ নথিবদ্ধ করিয়ে যাবেন। বহিরাগতদের সঙ্গে পুলিশকর্মীদের কথা বলার জন্য আলাদা ভিজিটর্স রুমও তৈরি করতে বলা হয়েছে সদ্য তৈরি করা কার্যবিধিতে। এ ছাড়া, থানা কিংবা ট্র্যাফিক গার্ডে প্রবেশের আগে বহিরাগতদের থার্মাল স্ক্রিনিং ও হাত জীবাণুমুক্ত করার বিষয়টিও বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে। তার জন্য এক জন পুলিশকর্মী গেটের সামনে ডিউটিতে থাকবেন।
লালবাজারের ওই কার্যবিধিতে বলা হয়েছে, ‘অন ডিউটি’ অবস্থায় প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে বাধ্যতামূলক ভাবে ফেস শিল্ড ও মাস্ক পরতে হবে। এ ছাড়া, সঙ্গে স্যানিটাইজ়ারও রাখতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন অফিস ও থানার প্রবেশপথ জীবাণুনাশক রাসায়নিক দিয়ে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই কার্যবিধিতে থানা, ট্র্যাফিক গার্ড কিংবা অন্য ইউনিটের বাইরে সরকারি গাড়ি ও বেসরকারি গাড়ির পৃথক পার্কিং লট তৈরি করতে বলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই কার্যবিধিতে রাস্তায় নাকা তল্লাশির সময়ে ত্রিস্তরীয় মাস্ক এবং গ্লাভস পরতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নথি পরীক্ষার সময়ে ২০ গজ দূরে গাড়ি দাঁড় করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে চালক কিংবা মালিকের সঙ্গে যাতে তাঁদের শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে পুলিশকর্মীদের। গ্লাভস না পরে তল্লাশির সময়ে কোনও নথি ধরতে বারণ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।