সোমবার সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ। ছবি: সারমিন বেগম।
সিবিআই দফতরে আরজি কর সংক্রান্ত কিছু নথি জমা দিতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সেখান থেকে বেরিয়ে বাম জমানায় আরজি করের একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিলেন তিনি। ২০০১ সালে আরজি করের ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাসের মৃত্যুর কথা জানিয়ে কুণাল বলেছেন, সৌমিত্রকেও খুন করা হয়েছিল। আত্মহত্যা বলে সেই ঘটনাকে চালানো হয়েছিল। তা যেন কেউ ভুলে না যান।
কুণাল বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে, ২০০১ সালে আরজি করে সৌমিত্র বিশ্বাসের খুনকে আত্মহত্যা বলে চালানো হয়েছিল। যাঁরা এখন হুজুগ তুলছেন, অরাজকতার কথা বলছেন, তাঁরা ২০০১ সালের কথাও মনে রাখবেন।’’
বস্তুত, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় যখন চারদিক তোলপাড়, তখন কয়েক জন প্রাক্তনী সৌমিত্রের খুনের বিচার চেয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বাম জমানায় ২০০১ সালে আরজি করে পর্নোগ্রাফি তৈরির র্যাকেটের কথা জেনে ফেলেছিলেন সৌমিত্র। তার প্রতিবাদ করায় হস্টেলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে হস্টেলের ঘর থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ, আত্মহত্যার কথা বলে সে সময়ে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার প্রসঙ্গে আবার তুলে আনলেন কুণাল।
আরজি কর-কাণ্ডে মৃতের বাবা-মা প্রথম দিন থেকে অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পর তাঁদের ফোন করে বলা হয়েছিল, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। হাসপাতালের সহকারী সুপারের পরিচয় দিয়ে ওই ফোন করা হয়েছিল। পুলিশ প্রথম থেকেই জানিয়েছে, তারা ওই ফোন করেনি। কে ফোন করলেন নির্যাতিতার পরিবারকে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অভিযোগ, প্রথমে গোটা ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।
সোমবার সিবিআই দফতরে বেশ কিছু নথি নিয়ে গিয়েছিলেন কুণাল। তিনি জানান, আরজি করের কয়েক জন পড়ুয়া তাঁর কাছে ওই নথি জমা দিয়েছেন এবং সিবিআইয়ের হাতে তা তুলে দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। নথির সত্যাসত্য তিনি বিচার করেননি বলে জানান কুণাল। তবে তা সিবিআইয়ের কাজে লাগতে পারে বলে তাঁর মনে হয়েছে। আরজি কর সংক্রান্ত হলেও নথিতে কী রয়েছে তা খোলসা করেননি তৃণমূল নেতা।
সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার কাজের প্রশংসা করেছেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই যথাসাধ্য কাজ করছে। রবিবারের মধ্যে আমরা আশা করেছিলাম, তদন্তে ইতিবাচক অগ্রগতি হবে। আগামী ২৩ অগস্ট ধৃতকে আদালতে হাজির করানো হবে। সে দিন রিমান্ডে সিবিআই ইতিবাচক অগ্রগতির কথা জানাবে বলে আশা করছি। এই ঘটনায় যাঁকে ধরা হয়েছে, তিনিই একমাত্র অভিযুক্ত, না আরও কেউ জড়িত, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ ২৩ তারিখের মধ্যে সিবিআইয়ের কাছ থেকে জবাব পাওয়া যাবে বলে আমাদের আশা।’’