কৃষ্ণা চক্রবর্তী।
নতুন মেয়র কে হচ্ছেন, তা ঠিক হয়ে যাওয়ার পরেই এ বার প্রশ্ন উঠেছে, কবে থেকে পুরোদস্তুর চালু হবে বিধাননগর পুরসভা?
সল্টলেক ও রাজারহাট মিলিয়ে রাস্তা এবং নিকাশি-সহ একগুচ্ছ সমস্যা রয়েছে বিধাননগর পুর এলাকায়। তাই মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরেই শুক্রবার পরিষেবা নিয়ে কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত এ দিন জানান, ভাঙা রাস্তা এবং ওভারহেড তারের সমস্যা থেকে বিধাননগরকে মুক্ত করতে হবে।
গত কয়েক বছর ধরেই রাজারহাট-গোপালপুরের একাধিক জায়গা বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। সেই কারণে তৃণমূল এ বার নিজেদের ইস্তাহারে নিকাশির সমস্যাকেই গুরুত্বের দিক থেকে প্রথমে রেখেছিল। কৃষ্ণা এ দিন বলেন, ‘‘দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে বসে সব সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। রাস্তার কাজ চলছে। নিকাশির পাম্পিং স্টেশনের শিলান্যাস হয়ে গিয়েছে। সল্টলেকের মানুষ যেমন মিষ্টি জল পান, রাজারহাটে সর্বত্র এখনও তা দেওয়া যায়নি। এ বার ওই দিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিধাননগর পুরসভা কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার পরে প্রথম মেয়র হন সব্যসাচী। ২০১৯-এ তিনি মেয়র পদে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে চলে যান। সে বছরই মেয়র নিযুক্ত হন কৃষ্ণা। তার আগে কৃষ্ণা ছিলেন বোর্ডের চেয়ারপার্সন। ২০২০ সালে বোর্ড ভেঙে যাওয়ার পরে দু’বছর প্রশাসক হিসেবে কাজ চালান কৃষ্ণা। অতিমারির ভরা মরসুমে তিনি পুরসভা চালিয়েছেন। নিজেও কোভিডে আক্রান্ত হন।
এ দিন মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা হতেই মেয়র কৃষ্ণা, ডেপুটি মেয়র অনিতা মণ্ডল ও চেয়ারম্যান সব্যসাচীর অনুগামীদের মধ্যে খুশির মেজাজ দেখা যায়। নিজেদের মধ্যে মিষ্টিমুখ করেন তাঁরা। আবার মিষ্টি নিয়ে ছুটে যান নেতানেত্রীর বাড়িতেও। ২৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কৃষ্ণার বাড়িতে, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সব্যসাচীর বাড়িতে এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অনিতার বাড়িতে পৌঁছন তাঁদের অনুগামীরা।
এ দিন সন্ধ্যায় কালীঘাটে ফিরহাদ হাকিম মেয়র হিসেবে কৃষ্ণার নাম ঘোষণা করার পরে তিনি আনন্দে কেঁদে ফেলেন। ধরা গলায় কৃষ্ণাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘হঠাৎ করে এমন খবর এলে নিজেকে সামলানো কঠিন হয়ে যায়। নেত্রী ভরসা রেখেছেন। দায়িত্ব বেড়ে গেল।’’ আবার খোশমেজাজে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন সব্যসাচীও। সম্ভাব্য মেয়র হিসেবে আলোচনায় থাকা সত্ত্বেও চেয়ারম্যান পদ পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দল আমাকে যা দিল, আমি কৃতজ্ঞ। আমি তো ভুল পথে চালিত হয়ে দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম। তার পরেও তো আমাকে দিদি টিকিট দিয়েছেন। অভিষেক তাতে সম্মতি দিয়েছেন।’’ নিজের বাড়িতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার পরে তিনি বেরিয়ে যান বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণে।
২০১০ সালে তৃণমূল বিধাননগর পুরসভার ক্ষমতায় আসার পরে চেয়ারপার্সন হন অনিতা মণ্ডল। আবার এক বছর পরে তাঁকে সরিয়ে কৃষ্ণাকে চেয়ারপার্সন করেছিল তৃণমূল। শেষ পুরবোর্ডে পাঁচ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন ছিলেন তিনি। এ দিন অনিতা বলেন, ‘‘অনেক বড় দায়িত্ব দিল দল। আমি কৃতজ্ঞ যে, নেতৃত্ব আমার উপরে এতটা ভরসা করেছেন।’’