বাঙালি আটপৌরে জীবনেই মিশে আছে শিল্প ও নান্দনিকতা। ব্রত-পার্বণের আলপনা থেকে সাবেক বিজ্ঞাপনের কাঠখোদাই ছবি, শিল্পকলার এক বিশাল ঐশ্বর্য ছড়িয়ে রয়েছে দৈনন্দিন যাপনের নানা পরিসরে। নাম না-জানা শিল্পীদের জাদু-ছোঁয়ায় আমাদের বাড়িঘর রাস্তাঘাট উৎসব-পার্বণ থেকে সর্বজনীন ব্যবহারের স্থানগুলিও যেন এক বিশাল সংগ্রহশালা। প্রাতিষ্ঠানিক সংগ্রহশালার চার দেওয়ালের বাইরে এমন শিল্পকর্মের প্রতি পথচলতি সাধারণ মানুষের মনোযোগ আর আদর এই সব ঐতিহ্য সংরক্ষণে সাহায্য করে। ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগামী ১৯ থেকে ২৫ নভেম্বর পালিত হচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ। সেই উপলক্ষে কলকাতার শিল্প-মানচিত্রে পরিচিত প্রতিষ্ঠান দিল্লি আর্ট গ্যালারি (ডিএজি) আয়োজন করেছে ‘দ্য সিটি অ্যাজ় এ মিউজ়িয়ম’ কর্মসূচি। আমাদের আর্থ-সামাজিক ও নান্দনিক পরিবেশ গড়ে তোলায় মিউজ়িয়মের বাইরের এই সব পারম্পরিক শিল্প ও ইতিহাসে তাদের প্রভাব ফিরে দেখাই অনুষ্ঠানের ভাবনা (ছবিতে হুগলি ইমামবাড়ায় গত বছরের কর্মসূচি)।
এ বছর কলকাতার চিৎপুর থেকে নদিয়ার তাহেরপুরের মতো নানা জায়গায় ঐতিহ্য বীক্ষণ। সেই এষণা কখনও তুলে আনবে বস্ত্র, বাসন, আসবাব বা প্রকাশনা, প্রতিদিনের জীবনচর্যার সামগ্রী, তারই মধ্যে রবীন্দ্রদর্শন-অনুসারী সুন্দরের বন্দনা, শান্তিনিকেতনের স্বদেশি জীবনশৈলী। আজ ১৮ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রোসিঙ্কা চৌধুরী ঘুরে দেখাবেন কলকাতায় ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকারের বাড়িটি— এখন যা তাঁর নামাঙ্কিত মিউজ়িয়ম ও গবেষণাকেন্দ্র— ‘স্বদেশি বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠান-ভাবনায়। কোনও অনুষ্ঠান উনিশ শতকের প্রেসিডেন্সি টাউনের ঔপনিবেশিক জীবনের জন্য তৈরি নিত্যব্যবহার্য জিনিসের নকশা ঘিরে; তার মধ্যে রয়েছে কলকাতার সাবেক মিষ্টির উৎপাদন ও তার শৈল্পিক উপস্থাপনার মতো কম-আলোচিত ইতিহাসও। আবার দীর্ঘ পরাধীনতা শেষে সদ্য-স্বাধীন এক দেশের নৈতিক মূল্যবোধের অন্যতম আধার হিসেবে যে আর্ট ও ডিজ়াইনকে বেছে নিয়েছিলেন সে সময়ের চিন্তানায়করা, সেই সরল অথচ বহুমাত্রিক জীবনচর্চাও প্রতিফলিত হবে ঘটি বা লোটার মতো সাধারণ, কেজো জিনিসের সূত্রে। কলকাতা-সহ বাংলার নানা জায়গা মিলিয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিটি শুরু হয়েছে গতকাল, অনুষ্ঠান চলবে আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত। বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে সংস্থার ওয়েবসাইটে।
বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ উপলক্ষে আরও নানা অনুষ্ঠান ও উদ্যাপন শহরে। গত ১০ নভেম্বর এ দেশের চলমান ঐতিহ্যের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ভারতীয় সংগ্রহালয়ে আলোচনা করলেন মিউজ়িয়মের প্রাক্তন অধিকর্তা বি বেণুগোপাল। আগামী ২৪ ও ২৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সংগ্রহালয় সমিতি এবং প্রভু জগদ্বন্ধু কলেজের বিভিন্ন বিভাগের একত্র উদ্যোগে আয়োজিত হবে একগুচ্ছ অনুষ্ঠান। প্রথম দিনে রয়েছে ঐতিহাসিক মৌড়ী-আন্দুল অঞ্চলে একটি ‘হেরিটেজ ওয়াক’ বা ঐতিহ্য সফর। দুই দিনই থাকবে ভারত ও বিশ্বের অমূল্য ঐতিহ্য নিদর্শনগুলির গুরুত্ব নিয়ে প্রদর্শনী; এ ছাড়াও আলোচনা হবে বাংলার পটচিত্রের প্রবহমান ঐতিহ্য নিয়ে।
সুরের যাত্রা
সলিল চৌধুরীর ৯৮ পূর্তিতে কলকাতার শ্রদ্ধার্ঘ্য— আগামী কাল ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়, উত্তম মঞ্চে ‘সেদিন আর কত দূরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। সলিল চৌধুরীর গণচেতনার গান ও কবিতার এই আয়োজন করছে ‘সুরধ্বনি’, অন্তরা চৌধুরীর পরিকল্পনা ও পরিচালনায়। ২০২৫-এ সলিল-জন্মশতবর্ষ, সেই পথেই এই উদ্যোগ তুলে ধরবে শিল্পীর গণচেতনার সুরযাত্রা। ‘সলিল চৌধুরী জন্মশতবর্ষ সমিতি’ গঠনের ঘোষণাও হবে এ দিন। গানে কবিতায় হৈমন্তী শুক্ল শ্রীকান্ত আচার্য শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় সৈকত মিত্র শ্রাবণী সেন লোপামুদ্রা মিত্র মনোময় ভট্টাচার্য শম্পা কুণ্ডু ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায় সুমন্ত্র সেনগুপ্ত কল্যাণ সেন বরাট ও কলকাতা কয়্যার-এর শিল্পীরা, অন্তরার সঙ্গে ‘সুরধ্বনি’-র সকলে; থাকবেন পবিত্র সরকার ও পণ্ডিত তন্ময় বসু। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় শোভাবাজার নাটমন্দির প্রাঙ্গণে আরও একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সৃষ্টি পরিষদ: ‘সুরে সুরে কাছে যেতে চাই’ শিরোনামে।
পরম্পরা
কলকাতার আইআইএম ও সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস থেকে গ্রন্থাগারিক হিসাবে অবসর নেওয়ার পরে প্রায় একক প্রচেষ্টায় বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে তৈরি করেছিলেন ‘ভবানী সেন গ্রন্থাগার’, ক্রমে যা রূপ পেয়েছে ভবানী সেন গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রে। আমৃত্যু ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য, অকালপ্রয়াত এই বইপ্রেমী মানুষটি— অরুণ ঘোষ। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত হয়ে থাকে ‘অরুণ ঘোষ স্মারক বক্তৃতা’। শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় সৌরীন ভট্টাচার্য রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য গার্গী চক্রবর্তী প্রমুখ বলেছেন বিভিন্ন বছরে, এ বছরের বক্তা রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক সুদীপ্ত কবিরাজ, বিষয় ‘পরম্পরার সন্ধানে’। ১৬২বি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের ভবানী সেন গ্রন্থাগারে, আগামী ২৫ নভেম্বর বিকেল ৪টায়।
প্রবীণে নবীনে
বাংলা বইয়ের আলোচনাকে উদার পরিসর দিতে এক বছর আগে যাত্রা শুরু বইকথা পত্রিকার। ইতিমধ্যে নব্বই জন লেখক আলোচনা করেছেন প্রায় দেড়শো বই-পত্রিকা নিয়ে; অগ্রণী লেখকদের পাশাপাশি আছে নবীন লেখকেরা, যাঁদের অনেকেরই সাহিত্যচর্চা মহানগর থেকে দূরে। পত্রিকার চতুর্থ ও ছোটগল্প সঙ্কলন বিশেষ সংখ্যার প্রকাশ আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় জীবনানন্দ সভাঘরে। থাকবেন ভগীরথ মিশ্র আনসারউদ্দিন অরিন্দম বসু প্রমুখ; ‘বই আলোচনার একটি নতুন পত্রিকার কি প্রয়োজন আছে?’ আলাপনে তরুণ লেখকেরা। পত্রিকা-সম্পাদক অনিতা অগ্নিহোত্রীর মা, মরমি পাঠক নমিতা চট্টোপাধ্যায় নামাঙ্কিত সাহিত্য সম্মানে ভূষিত হবেন সুপ্রতিম কর্মকার।
বিজ্ঞানব্রতে
মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করতে না পারলে, যুক্তির আলোয় বিচারের পথ দেখাতে না পারলে কুসংস্কার চেপে বসবে, মুক্ত চিন্তার পথে প্রধান বাধা কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস। জন্মলগ্ন থেকেই মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে তোলাকে ব্রত বলে গ্রহণ করেছিল উৎস মানুষ পত্রিকা, এখনও অব্যাহত যা। ভিন্নধর্মী এই পত্রিকা প্রকাশের ভাবনা যাঁদের ভাবিয়েছিল তাঁদের অন্যতম পত্রিকা-সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রয়াণের পর সহযাত্রীদের চেষ্টা পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, দেখতে দেখতে তেতাল্লিশ বছর পেরোতে চলেছে পত্রিকাটি। প্রতি বছর ওঁর স্মরণে একটি বক্তৃতার আয়োজন করেন পত্রিকা কর্তৃপক্ষ। আজ, ১৮ নভেম্বর বিকেল ৫টায় ইন্দুমতী সভাগৃহে ত্রয়োদশ স্মারক বক্তৃতা, রূপালী গঙ্গোপাধ্যায় বলবেন ‘বিজ্ঞানীর নীতিবোধ বনাম ভারতীয় জ্ঞানধারা’ নিয়ে।
পাঁচ মহাদেশ
‘পাঁচ মহাদেশের চলচ্চিত্র উৎসব’ নামে চমৎকার এক ছবি-উৎসব হয়ে চলেছে কলকাতায় গত এগারো বছর ধরে, সিনেমাপ্রেমী মাত্রেই রাখেন সে খবর। ‘ফোরাম ফর ফিল্ম স্টাডিজ় অ্যান্ড অ্যালায়েড আর্টস’-এর আয়োজনে দ্বাদশ বছরের ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ফাইভ কন্টিনেন্টস’ আগামী ১৯ থেকে ২৩ নভেম্বর জ্ঞান মঞ্চে। ভারত বাংলাদেশ জার্মানি ডেনমার্ক পোল্যান্ড আমেরিকা আর্জেন্টিনা চিলি মেক্সিকো ব্রাজিল ভেনেজ়ুয়েলা-সহ নানা দেশের এই সময়ের চলচ্চিত্রকারদের কাহিনিচিত্র, ছোট ছবি, তথ্যচিত্র। আগামী কাল দুপুর ৩টেয় উদ্বোধন বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে, প্রথম ছবিটি ভারতের— আই অ্যাম নট রিভার ঝিলাম। এ ছাড়াও উল্লেখ্য কমিটমেন্ট ফোবিয়া, রোম্যান্স, দ্য গোল্ডেন উইংস, গ্লসারি অব নন-হিউম্যান ছবিগুলি।
চেনা-অচেনা
এ ছবির জনপ্রিয়তা পেরিয়েছে ভাষা ও ভূগোলের গণ্ডি। লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চির আঁকা চেনা উল্তিমা আমাদের কাছে দ্য লাস্ট সাপার (ছবি) নামে পরিচিত। গত ৭ নভেম্বর আলিপুর মিউজ়িয়ম প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি নিয়ে বললেন ইটালির মিলানে ‘মিউজ়িয়ম অব দ্য লাস্ট সাপার’-এর প্রাক্তন অধিকর্তা, ছবিটির ‘রেস্টোরেশন’ প্রক্রিয়ায় যুক্ত শিল্প বিশেষজ্ঞ চিয়ারা রশটাগনো। তাঁর মতে এ ছবিতে বিধৃত সেই মুহূর্ত, যখন জিশু কোনও এক শিষ্যের বিশ্বাসঘাতক হওয়ার কথা ঘোষণা করলেও, জুডাস তখনও অশনাক্ত। শিষ্যদের শরীরী ভাষা ও অভিব্যক্তির মধ্যে তাঁদের মনের দোলাচলের চিত্রণ ছবিটিকে দিয়েছে চিরন্তন মহিমা। ৮ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে তিনি বললেন কলকাতার রাজভবন থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে সরিয়ে আনা রোমান সম্রাটদের এক ডজন আবক্ষ মূর্তির কথা, তাদের ক্লাসিক্যাল সৌন্দর্য ও সম্ভাব্য ইটালীয় উৎস নিয়ে। ইটালীয় কনসুলেটের সহযোগিতায় আয়োজিত এই দু’টি অনুষ্ঠান দিয়ে গেল ঐতিহ্য-সচেতনতার বার্তাও।
লোকোত্তীর্ণ
গ্রামে গ্রামে গেয়েছেন, আবার রেকর্ডেও জনপ্রিয় করে তুলেছেন লোকগীতিকে। ১৯০১ সালে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে জন্ম আব্বাসউদ্দীন আহমেদের (ছবি)। কলকাতায় গান শেখা জমিরউদ্দিন খানের কাছে; পল্লিগীতি, দেশের গান, ইসলামি গানের পাশাপাশি তাঁর কণ্ঠের ভাওয়াইয়া ভাটিয়ালি জারি সারি দেহতত্ত্বের গান বিচ্ছেদি গানে ভেসে যেত বাংলা। বেশ কয়েক বছর কলকাতায় ছিলেন, তাঁর গান পাকিস্তান আন্দোলনে মুসলিম জনমত গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। লিখে গেছেন স্মৃতিগ্রন্থ— আমার শিল্পী জীবনের কথা। ১৯৭৯ সালে গড়ে ওঠে ‘আব্বাসউদ্দীন স্মরণ সমিতি’, দীর্ঘ দিন তাঁকে নিয়ে কাজ করছে তারা, আয়োজন করে থাকে ‘আব্বাস মেলা’ও। আজ, ১৮ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টেয় কালিকাপুর স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে পঞ্চানন ভবনে শিল্পী স্মরণে গাইবেন ভূপতি ভূষণ বর্মা, তপন রায় প্রধান, ঊর্মি রায়, সুখবিলাস বর্মা প্রমুখ দুই বাংলার লোকসঙ্গীত শিল্পীরা।
গ্রামের আলোয়
বাংলার গ্রামের মেয়েদের অন্দর-অন্তর তিনি দেখেন গবেষকের চোখে। লিনা ফ্রুৎজ়েত্তি আমেরিকার ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে সমাজবিদ্যার অধ্যাপক, কিন্তু তাঁর জীবনপথ ছুঁয়েছে নানা ভূমি: ইরিট্রিয়া সুদান আমেরিকা ভারত। উদ্বাস্তু ও অভিবাসী হওয়া, ফেলে-আসা জীবনকে প্রশ্ন করা, নতুন দেশে ‘অন্য রকম’ তকমা আঁটা জীবনে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সঙ্কট, এ সবই তাঁর জীবনাভিজ্ঞতা; আবার নৃতত্ত্ববিদের চোখে দেখেছেন বিষ্ণুপুর-সহ এই বাংলার নানা অঞ্চল। গতকাল, ১৭ নভেম্বর যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়ম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে ‘তরুণ মিত্র স্মারক বক্তৃতা’য় লিনা বললেন গ্রামবাংলার আলোয় তাঁর জ্ঞানের নির্মিতি নিয়ে। আয়োজক তরুণ মিত্র স্মারক বক্তৃতা কমিটি, আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ান স্টাডিজ় ও সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস কলকাতা।