বেলগাছিয়া সেতুতে ট্রামের দাবিতে প্রচার

রবিবার বেলগাছিয়া সেতুতে ট্রাম বন্ধের প্রতিবাদে কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা পথে নামেন। পরে তাঁরা ডিপো ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপিও দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৯ ০২:২৫
Share:

ফিরিয়ে দাও: ট্রাম চালানোর দাবিতে পোস্টার হাতে প্রচার। রবিবার, বেলগাছিয়া ট্রাম ডিপোয়। ছবি: সুমন বল্লভ

নানা জটিলতার কারণে ধর্মতলার সঙ্গে বেলগাছিয়ার ট্রামের মাধ্যমে যোগাযোগ গত দু’বছর ধরে বন্ধ। এ বার টালা সেতু বন্ধের জেরে বেলগাছিয়ায় ট্রাম ডিপোর অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বেলগাছিয়া সেতুর চাপ কমাতে গিয়ে ওই সেতু থেকে রাস্তার পিচের পাশাপাশি ট্রামলাইন তুলে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশের ফলে ট্রাম রক্ষণাবেক্ষণের কাজেও আর বেলগাছিয়া ডিপো ব্যবহার করা যাবে না বলে অভিযোগ। এর ফলে কলকাতায় ট্রামের অন্যতম ব্যস্ত রুট ধর্মতলা-শ্যামবাজার রুটের ট্রাম পরিষেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা।

Advertisement

রবিবার বেলগাছিয়া সেতুতে ট্রাম বন্ধের প্রতিবাদে কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা পথে নামেন। পরে তাঁরা ডিপো ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপিও দেন। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, টালা সেতু বন্ধ হওয়ার পরে বেলগাছিয়া সেতুতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। অতিরিক্ত যান চলাচলের কারণে সেতুর ক্ষতি এড়াতেই রেলের পরামর্শদাতা সংস্থা রাইটসের পরামর্শ মেনে সেতুর ভার কিছুটা লাঘবের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় রাস্তার পিচ তুলে ফেলার পাশাপাশি ট্রামের লাইন তুলে ফেলার বিষয়টিও রয়েছে।

যদিও ওই সেতুর স্বাস্থ্য নিয়ে টালা সেতুর মতো এখনই আশঙ্কার কিছু নেই বলেই খবর। তবে শহরের ট্রামপ্রেমীদের সংগঠনের অভিযোগ, ইতিমধ্যেই বেলগাছিয়া ডিপোর জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এর পরে ডিপো অকেজো হয়ে পড়লে ওই অঞ্চলে ভবিষ্যতে ট্রাম চলার সম্ভাবনা মুছে যাবে। গত দু’ বছর ধরে সেতু এবং সড়ক সংস্কারের কথা বলে ট্রাম চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কলকাতায় ট্রাম রুট আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে।

Advertisement

কলকাতা ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা ছাড়াও কলকাতা ক্লিন এয়ার নামে অপর একটি পরিবেশ সংগঠনের সদস্যেরাও পথে নামেন। ট্রাম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম সংগঠক দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব চেয়ে দূষণমুক্ত এবং সক্ষম পরিবহণ মাধ্যম হওয়া সত্ত্বেও কলকাতায় ট্র্যাফিকের যে কোনও সমস্যায় আগে ট্রামের উপরে কোপ পড়ে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। ট্রামকে বাদ দিয়ে পরিবহণের বিকল্প খোঁজার চেষ্টা শহরের পক্ষে নেতিবাচক।’’

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, কলকাতায় খুব বেশি হলে চার-পাঁচটি রুটে ট্রাম চলে। সারা দিনে গোটা ৩৫টি ট্রাম রাস্তায় নামে। এর মধ্যে ধর্মতলায় মেট্রোর কাজের জন্য দক্ষিণের ট্রাম রুট আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি মেরামতির কাজে টালিগঞ্জ-গড়িয়াহাট রুটের কোনও ট্রামকে নোনা পুকুরের ওয়ার্কশপে আনা যায় না। ধর্মতলা থেকে হাজরা হয়ে টালিগঞ্জ যাওয়ার ট্রামের রাস্তাও বহু দিন বন্ধ। এর মধ্যে বেলগাছিয়ায় ডিপো বন্ধ হলে বড় অংশের ট্রাম রক্ষণাবেক্ষণহীন হয়ে পড়বে বলেই দাবি ট্রামপ্রেমীদের। যদিও পরিবহণ দফতরের কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের ট্রাম ফিরিয়ে আনা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement