মিছিলের জেরে জট, গাড়ি ঘুরিয়ে সামাল দিল পুলিশ

ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, শাসক দলের মিছিলের জেরে এ দিন ওই সব রাস্তা দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল যান চলাচল। আর তাতেই দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩১
Share:

অপেক্ষা: মিছিলের জেরে আটকে স্কুলবাস। মঙ্গলবার দুপুরে, শরৎ বসু রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ

নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মঙ্গলবারের মিছিল সোমবারের চেয়েও বেশি যানজট তৈরি করল শহরে। বিভিন্ন রাস্তায় বাস-অটো বন্ধ থাকায় অসুবিধায় পড়েন রাস্তায় বেরোনো মানুষজন। তবে পুলিশ বিভিন্ন বিকল্প রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ায় সেই অসুবিধা মাত্রাছাড়া হয়নি।

Advertisement

প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও মিছিলের নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন ওই মিছিল শুরু হয় যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে। ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট মোড়, দেশপ্রিয় পার্ক, রাসবিহারী মোড়, হাজরা মোড় হয়ে যদুবাবুর বাজারে শেষ হয় মিছিল।

ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, শাসক দলের মিছিলের জেরে এ দিন ওই সব রাস্তা দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছিল যান চলাচল। আর তাতেই দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। যার জেরে অফিসযাত্রীদের পাশাপাশি অসুবিধায় পড়তে হয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও। বিভিন্ন স্কুলের তরফে অবশ্য আগের দিনই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, মঙ্গলবার তারা স্কুলবাস চালাবে না।

Advertisement

লালবাজার জানিয়েছে, মিছিলটি রাজা এসসি মল্লিক রোড, গড়িয়াহাট রোড, রাসবিহারী অ্যাভিনিউ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড এবং আশুতোষ মুখার্জি রোড হয়ে যাবে বলে ওই সব রাস্তায় বেলা সাড়ে ১২টার কিছু পর থেকেই গাড়ি

চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মিছিলের জন্য জমায়েত শুরু হতেই যাদবপুরের এক দিকের রাস্তা বেলা ১১টার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্য দিক দিয়ে কিছু ক্ষণ গাড়ি চললেও ১২টার পরে তা-ও বন্ধ করে দেওয়া হয়। ওই সময়ে গড়িয়া থেকে যাদবপুরের দিকে আসা বাসগুলিকে পাটুলি কানেক্টর বা সুলেখা দিয়ে সন্তোষপুর হয়ে ইএম বাইপাসে পাঠায় পুলিশ। কিছু গাড়িকে বাঘা যতীন মোড় থেকে পল্লিশ্রীর দিকেও পাঠানো হয়েছিল। এ দিন বেশ কিছুটা সময়ের জন্য বন্ধ ছিল গড়িয়া-গোলপার্ক রুটের অটোও। বাসের রুট পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে অটো বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।

বাঘা যতীনের বাসিন্দা সুব্রত সরকার পার্ক সার্কাসে কাজে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন এ দিন দুপুরে। রাজা এসসি মল্লিক রোডের একাংশে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ঘুরপথেই ইএম বাইপাস হয়ে অনেক দেরিতে পার্ক সার্কাস পৌঁছন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, মিছিল শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ আগে থেকেই গোলপার্ক এবং গড়িয়াহাট থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল গাড়ি। একই ভাবে মিছিল গড়িয়াহাট মোড় হয়ে রাসবিহারী অ্যাভিনিউ পৌঁছতেই বন্ধ হয়ে যায় ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল। ফলে যানজট তৈরি হয় রাসবিহারী অ্যাভিনিউ কানেক্টরে। পরে অবশ্য কর্নফিল্ড রোড দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।

লালবাজার জানিয়েছে, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড এবং আশুতোষ মুখার্জি রোড বন্ধ থাকায় শরৎ বসু রোড দিয়ে গাড়ি ঘোরানো হয়েছে এক্সাইড মোড় থেকে। আবার হাজরার দিকে আসা গাড়ি পাঠানো হয়েছে টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড এবং প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড দিয়ে। এ দিন শরৎ বসু রোড, এ জে সি বসু রোড, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ের মতো বেশ কয়েকটি রাস্তায় গাড়ির চাপ ছিল অন্য দিনের তুলনায় বেশি।

এক পুলিশকর্তা জানান, এ দিন শহরে গাড়ির সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম ছিল। ফলে মিছিলের জন্য তীব্র যানজটের কবলে পড়েননি শহরবাসী। অবস্থা সামাল দিতে বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়ায় ভোগান্তিও খুব বেশি হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement