থমকে পথ। মঙ্গলবার, মা উড়ালপুলে। — নিজস্ব চিত্র
এমনিতে কাজের দিনে হাওড়া স্টেশন থেকে ধর্মতলায় অফিসে পৌঁছতে মাধব ঘোষের সময় লাগে মেরেকেটে কুড়ি মিনিট। মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ হাওড়ায় বাসে চেপে ধর্মতলায় যখন নামলেন, তখন ঘড়ির কাঁটা এগারোটা পেরিয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসে মহড়ার জন্য রেড রোড, খিদিরপুর রোড বন্ধ থাকায় এ দিন মাধববাবুর মতো যানজটে নাকাল হলেন অনেকেই।
ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, প্রজাতন্ত্র দিবসের মহড়ার জন্য মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত রেড রোড, খিদিরপুর রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ থাকায় এ দিন বেলা বারোটা পর্যন্ত মধ্য ও দক্ষিণ-মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে যানজটে নাকাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষত হয়রানির শিকার হন অফিস যাত্রীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, খিদিরপুর থেকে ধর্মতলা, হাওড়াগামী গাড়িগুলিকে খিদিরপুর রোডের পরিবর্তে এজেসি বসু রোড, পার্ক স্ট্রিট, এবং স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। অফিসের ব্যস্ততার সময়ে রেড রোড বন্ধ থাকায় স্ট্র্যান্ড রোড, হাওড়া সেতু, ব্রেবোর্ন রোড, এজেসি বসু রোড, পার্ক স্ট্রিট-সহ ময়দান সংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ির গতি ছিল ধীর। সকালে দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে এজেসি বসু রোড হয়ে রবীন্দ্র সদন পৌঁছতে যেখানে ১০ মিনিট সময় লাগে, এ দিন লেগেছে প্রায় ৪০ মিনিট।
দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে খিদিরপুর রোডের দিকে যাওয়ার গাড়িগুলিকে হেস্টিংসের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। রেড রোড, খিদিরপুর রোড বন্ধ থাকায় রেহাই পায়নি লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউও। খিদিরপুর ও দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে বেশির ভাগ গাড়িকে এজেসি বসু রোডে ঘুরিয়ে দেওয়ায় মা উড়ালপুলও যানজটের কবলে পড়ে। উড়ালপুলের দু’দিকে দিকেই সার দিয়ে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি।
এ দিনই বিকেল তিনটে নাগাদ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের গ্রেফতারের প্রতিবাদে শাসক দল প্রভাবিত হকার সংগঠনের তরফে শিয়ালদহ থেকে একটি মিছিল বার হয়। একই সময়ে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের নির্মাণের প্রতিবাদে ক্রিক রো থেকে নকশালপন্থীরা একটি মিছিল করেন। জোড়া মিছিলের জেরে এ দিন বিকেলে শিয়ালদহ থেকে মৌলালি, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণির রাস্তায় গাড়ি চলেছে ধীরে। সে জন্যও ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।