আধুনিক: কলকাতা স্টেশনের নতুন লাউঞ্জ। —নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের মধ্যেই সেজে উঠল কলকাতা স্টেশন। উত্তর কলকাতার ওই স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেন ছাড়ে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকলেও যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকটির অভাব ছিল কলকাতা স্টেশনে। খাওয়াদাওয়া কিংবা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা ছিল না সেখানে।
পূর্ব রেল জানাচ্ছে, ওই স্টেশনটি ঢেলে সাজানো হয়েছে। ঢাকাগামী মৈত্রী বন্ধনের মতো আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে যাতায়াতকারী ট্রেন ছাড়াও হলদিবাড়ি সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস, হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ও জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন ছাড়ে সেখান থেকে। অজমেঢ়, আগরা ক্যান্টনমেন্ট, লালকুয়াঁ (নৈনিতাল), আমদাবাদ ও পটনাগামী বহু ট্রেনও ছাড়ে।
এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের সুবন্দোবস্ত কোনও কালেই ছিল না। সেই সমস্যা মেটাতে লকডাউনেই প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে স্টেশন চত্বরে গড়ে তোলা হয়েছে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ। সেখানে পূর্ব রেল এই প্রথম বেবি ফিডিং রুম বা শিশুদের স্তন্যপান করানোর জন্য পৃথক ঘরের ব্যবস্থা করেছে। নতুন লাউঞ্জে থাকছে ছোট আকারের লাইব্রেরি এবং শিশুদের জন্য বিশেষ ‘কিডস জ়োন’। সেখানে শিশুরা পছন্দমতো খেলার সামগ্রী বেছে নিতে পারবে।
আরও পড়ুন: ঘাটতি ১৭১ কোটি, পেশ হল পুর বাজেট
আরও পড়ুন: বৌবাজারের রাস্তায় ‘হেনস্থা’য় জামিন পুলিশকর্তার
রেল সূত্রের খবর, নতুন এগজিকিউটিভ লাউঞ্জে ১৬টি রিক্লাইনিং সোফা (প্রয়োজনে শয্যা হিসেবে ব্যবহার করা যায়) ছাড়াও কাফেটেরিয়াতে ৫৮টি আসন রয়েছে। যেগুলি ঘণ্টার হিসেবে ভাড়া নিতে পারবেন যাত্রীরা। এ ছাড়াও বিমানবন্দরের আদলে আধুনিক শৌচালয়, ফিশ স্পা এবং সেলুন থাকবে। জিনিসপত্র সুরক্ষিত রাখার জন্য ভাড়া পাওয়া যাবে ক্লোক রুমও।
রেলের কামরার আদলে সজ্জিত কাফেটেরিয়ায় মিলবে নানা ধরনের খাবার এবং পানীয়। স্নানের জন্য ৫০ টাকার বিনিময়ে মিলবে সাবান, শ্যাম্পু, টুথব্রাশ, পেস্টের বিশেষ কিট। যাত্রীদের জন্য থাকছে মাসাজ চেয়ারও।
রেলকর্তাদের দাবি, নতুন ব্যবস্থা যাত্রীদের কাছে রেল সফরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে। ব্যবসায়িক প্রয়োজনে যাঁরা নিয়মিত সফর করেন তাঁরাও হোটেল ভাড়া করার বদলে বিলাসবহুল লাউঞ্জে বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি কাটাতে পারবেন। করোনা পর্ব কেটে গেলে ট্রেন চলাচল বাড়বে। সে ক্ষেত্রে লাউঞ্জের চাহিদাও বাড়বে। এ প্রসঙ্গে এক রেলকর্তা জানান, প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিতে ওই লাউঞ্জ তৈরি হয়েছে।
এ বার অপেক্ষা শুধু ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার।