উৎসাহী: বিনামূল্যে বুস্টার ডোজ় নিতে গ্রহীতাদের ভিড়। শুক্রবার, মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ৩৫-৪০ হাজার নাগরিক করোনার সতর্কতামূলক (বুস্টার) ডোজ় নিচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৭ হাজার। কিন্তু শুক্রবার থেকে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদেরও বিনামূল্যে বুস্টার দেওয়া শুরু হতে এ দিন রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে গ্রহীতার সংখ্যা আড়াই লক্ষ পেরিয়ে গেল। যদিও কলকাতা পুর এলাকায় ওই বয়সিদের বুস্টার ডোজ় নেওয়ার সংখ্যা দশ হাজার পার করেনি।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রাজ্যে আঠারো বছরের ঊর্ধ্বে সব বয়সিদের বুস্টার ডোজ় নেওয়ার সংখ্যা ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬০২। এর মধ্যে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে নিয়েছেন প্রায় ছ’হাজার জন। রাজ্যে করোনা প্রতিষেধক প্রদানের জন্য ১৬৮৬টি সরকারি কেন্দ্র ও ১৫২টি বেসরকারি কেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার রাজ্যে ১২ বছর বয়স থেকে বুস্টারডোজ় নেওয়া পর্যন্ত প্রতিষেধক গ্রহীতার মোট সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২৩ হাজার। সেখানে কেন্দ্রের তরফে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদেরবিনামূল্যে ৭৫ দিন প্রতিষেধক পাওয়ার ঘোষণার প্রথম দিনে বুস্টার ডোজ়ে ভাল সাড়া মিলেছে বলেই দাবি স্বাস্থ্য ভবনের। রাজ্যে প্রতিষেধক প্রদানের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্তস্বাস্থ্য অধিকর্তা অসীম দাস মালাকার বলেন, ‘‘প্রথম দিনে রাজ্যে ভালই সাড়া মিলেছে। তা আরও বাড়বে বলেই মনে হয়।’’
এ দিন রাজ্যে বুস্টার নেওয়ার কর্মসূচিতে গতি এলেও, কলকাতা পুর এলাকায় ততটা আশানুরূপ হয়নি বলেই জানাচ্ছেন পুর স্বাস্থ্যকর্তারা। পুরসভা সূত্রের খবর, ১৮-৫৯ বছর বয়সিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এ দিন বুস্টার ডোজ় নেননি। এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রথম দিন শহরে বুস্টারের ডোজ় নিতে ভিড় ছিল না। এখনও ৭৪ দিন এই ডোজ় দেওয়া হবে।’’ কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের ৯৪৭৪ জন বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন। তার মধ্যে কোভিশিল্ড পেয়েছেন ৮৭২২ জন এবং ৭৫২ জন পেয়েছেন কোভ্যাক্সিন।
যদিও স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কলকাতায় আঠারো বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে বুস্টার ডোজ় পাবেন ৪৬ লক্ষ ৯১ হাজার ৯৩৮ জন (কোভ্যাক্সিন ৬ লক্ষ ৫৪ হাজার ৯০৬ জন এবং কোভিশিল্ড ৪০ লক্ষ ৩৭ হাজার ৩২ জন)। এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘সবাই যাতে বুস্টার ডোজ়ের আওতায় আসেন, সে জন্য পুর স্বাস্থ্য দফতর লাগাতার প্রচার করবে। কাউন্সিলরদেরও কাজে লাগানো হবে।’’ তবে ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের বুস্টার ডোজ় নিতে ভিড় বৃদ্ধির কথা ভেবেই শহরে প্রতিষেধক প্রদান কেন্দ্রও বাড়িয়েছে পুরসভা। মোট ১৩৩টি কেন্দ্রের মধ্যে কোভিশিল্ডের জন্য ৯২টি পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ৬টি মেগা সেন্টার। কোভ্যাক্সিনের জন্য ৩৪টি পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ১টি মেগা সেন্টার রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রাজ্যের ভাঁড়ারে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে প্রায় ৫৫ লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বুস্টার ও ১২ বছর থেকে অন্যান্য বয়সের প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ় মিলিয়ে মোট তিন লক্ষ ৩১ হাজার ৪০৬ জন প্রতিষেধক নিয়েছেন। বুস্টারের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ দিন বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলা, ও ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলা প্রতিষেধক নিয়ে গিয়েছে।