মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনুজ শর্মা। —ফাইল চিত্র।
শহর এবং শহরতলির নিঃসঙ্গ বাসিন্দাদের ‘টার্গেট’ করছে দুষ্কৃতীরা। কখনও চুরি, কখনও ডাকাতি, এমনকি মাঝে মাঝে খুনের ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি নরেন্দ্রপুর এবং নেতাজিনগরের ঘটনায় নিঃসন্তান দম্পতিদের নিরাপত্তা ফের এক বার প্রশ্নের মুখে। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এর পরেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা পদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। কী ভাবে নিঃসন্তান বয়স্কদের দেখভালের বন্দোবস্ত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনার পর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতায় কত নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন তার একটি তালিকা তৈরি করা হবে। এলাকা ভিত্তিতে তাঁদের দেখভালের জন্য এক জন কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে। তাঁরা ওই বৃদ্ধ বা বৃদ্ধাকে সপ্তাহে এক দিন করে ফোন করবেন। ১৫ দিন অন্তর তাঁরা কেমন আছেন তাঁদের বাড়িতে গিয়ে তা দেখে আসবেন ওই কনস্টেবল।
এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ‘প্রণাম’ সংগঠনকে আরও সক্রিয় করার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। বয়স্কদের সাহায্যের জন্য কলকাতা পুলিশের একটি নম্বর (৯৮৩০০৮৮৮৪) আগে থেকেই রয়েছে। কোনও অসুবিধা হলে এই নম্বরে জানানো যেতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে নিঃসঙ্গ প্রবীণদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করল ট্যাংরা থানার পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: সিসি ক্যামেরায় সন্দেহভাজন! মিস্ত্রিদের সামনে আলমারি থেকে টাকা বার করাই কি কাল হল বৃদ্ধ দম্পতির?
ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়িতে যাঁদের যাতায়াত রয়েছে, যেমন— দুধওয়ালা, কাগজ বিক্রেতা, পরিচারিকা, মিস্ত্রিদের তথ্য নেবে পুলিশ। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বাড়ির সিকিউরিটি অডিটও করা হবে। যেমন— বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে কি না, আশপাশের এলাকা কেমন, ভাড়াটিয়া সংক্রান্ত কোনও সমস্যা আছে কি না এ সব দেখা হবে।
নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা সমস্যায় পড়লে আশপাশের প্রতিবেশীরা যাতে পুলিশকে বিষয়টি জানান, তাতেও জোর দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত সিপি (১) জাভেদ শামিম এ দিন লালবাজারে বলেন, “বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিরাপত্তার বিষয়ে সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিদেশে নেবারহুড পুলিশিংয়ের চল রয়েছে। আমারা চাই প্রতিবেশীরাও পুলিশকে সাহায্য করুক। কোনও কিছু সন্দেহ হলে আমাদের জানান। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন: ৪ প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া খুন, আতঙ্ক শহরে
পুলিশ সূত্রে খবর, নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবেন এসি পদমর্যাদার অফিসাররা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, “কোনও ঘটনা ঘটলে যেমন তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে পুলিশ, তেমনই এ বার বয়স্কদের নিরাপত্তার বিষয়টিও কলকাতা পুলিশ গুরুত্ব সহকারেই দেখবে।’’