‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ ছবি সংগৃহীত।
নদীতে স্নান করতে নেমে জলে তলিয়ে যাচ্ছেন এক জন। দূর থেকে সেই দৃশ্য দেখতে পেয়েই ওই ব্যক্তিকে বাঁচাতে দূর-নিয়ন্ত্রিত একটি যন্ত্র জলে ছেড়ে দিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই যন্ত্র, ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ বা ‘ক্রাফট’ পৌঁছে গেল ডুবন্ত সেই ব্যক্তির কাছে। তিনি কোনও মতে সেটি ধরে নিতেই টহলদারি দল ড্রোনটিকে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে টেনে নিয়ে এল পাড়ে। উদ্ধার করা হল ওই ব্যক্তিকে। বিদেশে এ ভাবে এমন যন্ত্রের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চললেও কলকাতায় এর প্রচলন ছিল না। সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশ এ বার এই ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের এবং বিদেশের দু’টি সংস্থা ইতিমধ্যেই ওই যন্ত্রের মহড়া দিয়েছে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সামনে। ডুবন্ত মানুষকে ওই ড্রোনের সাহায্যে কী ভাবে উদ্ধার করা সম্ভব, তা দেখানো হয়েছে। কী কী ধরনের পরিবেশে ওই ড্রোন কাজ করতে পারবে, তা-ও বুঝিয়ে বলা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রের খবর, জলে উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ওই ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে ডুবে যাওয়ার মতো ঘটনা আটকাতে নতুন ওই যন্ত্র অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মত পুলিশকর্তাদের। আপাতত মহড়া দেখে মোটের উপরে সন্তুষ্ট তাঁরা। আগামী দিনে ওই যন্ত্র কেনার জন্য দরপত্র ডাকা হবে। যন্ত্র হাতে এলেই শুরু করে দেওয়া হবে তার ব্যবহার।
পুলিশ সূত্রের খবর, অনেক সময়েই এমন হয় যে, টহল দেওয়ার সময়ে পুলিশ হয়তো দেখতে পেল, গঙ্গায় কেউ ডুবে যাচ্ছেন। কিন্তু সাঁতরে বা নৌকা নামিয়ে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে প্রায়ই দেরি হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ থাকলে ওই সময়টা বাঁচবে। রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এই ড্রোন। তাতে থাকবে ক্যামেরাও। যার ফলে দূরে বসেও ঘটনাস্থলের ছবি দেখতে পাবেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। ঘটনাস্থল সেখান থেকে কতটা দূরে, সেই তথ্যও জানতে পারবেন তাঁরা। ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ একসঙ্গে তিন জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম বলে জানা গিয়েছে। ফলে প্রতিমার বিসর্জন কিংবা মহালয়ার তর্পণের মতো দিনে ‘রেসকিউ ওয়াটার ড্রোন’ সঙ্গে থাকলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
লালবাজার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর হাতে ‘আন্ডারওয়াটার কমিউনিকেশন সিস্টেম’ তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই যন্ত্রের মাধ্যমে যে ডুবুরি তল্লাশি চালাতে জলে নামছেন, তাঁর সঙ্গে জলের উপর থেকেই যোগাযোগ করা বা কথা বলা যায়। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই যন্ত্রের সঙ্গে ক্যামেরা থাকায় ডুবে যাওয়া কিছু উদ্ধার করা অনেক সহজ হয়েছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।