হাতেনাতে: হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে অভিযানে পুলিশ। মঙ্গলবার, মিন্টো পার্কের কাছে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শব্দমুক্ত এলাকায় (সাইলেন্স জ়োন) হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল কলকাতা পুলিশ। রোজ দু’ঘণ্টা করে ওই অভিযান চালাবে তারা। স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের সামনে হর্ন দিলেই সংশ্লিষ্ট গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মঙ্গলবার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা মিন্টো পার্কের কাছে এই অভিযানের উদ্বোধন করেন।
শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে রাতেও বিকট শব্দে গাড়ির হর্ন বাজে। অফিসের সময় পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন স্কুলের সামনেও একই ঘটনা ঘটে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে কেন দিনে মাত্র দু’ঘণ্টা এমন অভিযান চলবে?
কলকাতা পুলিশের এক কর্তার ব্যাখ্যা, অফিসের সময়ে যানজট বেশি হয়। ফলে ওই সময়েই শব্দদূষণ বেশি হয়। এ দিনই ৮৬৯টি গাড়িকে শব্দ আইন ভাঙার জন্য জরিমানা করা হয়েছে। তবে আগামী দিনে এই ধরনের অভিযানের সময় বাড়বে বলেই ওই পুলিশকর্তা জানান।
পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, দূষণ সময় ধরে হয় না। গাড়ির হর্ন শুধু হাসপাতালে ভর্তি রোগীকেই প্রভাবিত করে না। ফুটপাতবাসী বৃদ্ধ বা শিশুর উপরেও প্রভাব ফেলে। ইএনটি চিকিৎসকদের অনেকের মতে, কানের সামনে টানা জোরে শব্দ হলে মেজাজ খিটখিটে, রক্তচাপের বৃদ্ধি-সহ নানা সমস্যা হয়। ফলে পরিবেশকর্মীরা মনে করছেন, মাত্র দু’ঘণ্টার অভিযান যথেষ্ট নয়। অবশ্য রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে দু’ঘণ্টা অভিযান চললেও এটা মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করবে। সে দিক থেকে আমি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’
শব্দদূষণ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দূষণের মাত্রা মেপে দেখেছে, সরকারি হাসপাতালগুলির সামনে শব্দমাত্রা অনেক বেশি। তার পরেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেয় আদালত। পর্ষদের দাবি, পুলিশকে শব্দমাত্রা মাপার যন্ত্র দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের অনেকেই মনে করছেন, এই আইনে খুব কড়া শাস্তির বিধান নেই। বাসচালকদের অনেকের দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতেই হর্ন বাজাতে তাঁরা বাধ্য হন। শব্দমুক্ত এলাকায় হর্ন না বাজানোর প্রচারে স্কুলপড়ুয়াদের যুক্ত করতে চায় লালবাজার। এ দিন ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের শব্দদূষণ বিরোধী একটি মোটরবাইক মিছিলেরও উদ্বোধন হয়।