Coronavirus Lockdown

লকডাউনে কাজ হারিয়ে অনটন, আত্মহত্যার চেষ্টা মা ও দুই ছেলের

পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যেরা সুস্থ হলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৩:৫৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কীটনাশক খেয়েছেন একই পরিবারের তিন জন। এমনই একটি ফোন এসেছিল থানায়। ফোনের ও প্রান্ত থেকে ঠিকানা পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। অচৈতন্য অবস্থায় ঘরে পড়ে থাকা এক প্রৌঢ়া ও দুই যুবককে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার সোনালি পার্কে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই তিন জন সম্পর্কে মা ও ছেলে। বছর চৌষট্টির প্রৌঢ়া ও তাঁর বড় ছেলের অবস্থা স্থিতিশীল। কিন্তু ছোট ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। ঘরে ঢুকে পুলিশ দেখে, বিছানায় আর মেঝেতে পড়ে রয়েছেন তিন জন। তাঁদের মুখ থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে। পুলিশের অনুমান, আত্মঘাতী হওয়ার জন্য তিন জনেই কীটনাশক খেয়েছিলেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পরে ওই প্রৌঢ়া দুই ছেলেকে নিয়ে সোনালি পার্কের ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন। বড় ছেলের বয়স ৪২, তিনি এক আইনজীবীর অধীনে কাজ করেন। ছোট জনের ৩৮ বছর বয়স। মানসিক অসুস্থতার কারণে কোনও কাজ করেন না তিনি।

এ দিন সকালে দুই ছেলের এক জন তাঁদের এক আত্মীয়কে ফোন করে জানান, তাঁরা তিন জনে একসঙ্গে বিষ খেয়েছেন। এর পরেই ওই আত্মীয় রিজেন্ট পার্ক থানায় ফোন করে সেই খবর দেন। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার করে তাঁদের।

Advertisement

পড়শি এবং আত্মীয়দের থেকে পুলিশ জেনেছে, সংসারের একমাত্র রোজগেরে বড় ছেলের কাজ লকডাউনের জন্য বন্ধ ছিল। বেতনও পাননি তিনি। গত কয়েক মাস টেনেটুনে সংসার চলছিল‌। কিন্তু তিন মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি ছিল। সম্প্রতি বাড়ির মালিক তাঁদের ভাড়া মেটাতে তাগাদা দিচ্ছিলেন। কিন্তু এখনও কাজ শুরু না হওয়ায় সেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি তাঁরা। আত্মীয় ও পড়শিদের অনুমান, টাকার অভাবেই তিন জনে একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।

তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, ছোট ছেলে আগে এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। বাড়ির সদস্যদের তৎপরতায় সে বার তিনি বেঁচে যান। আত্মীয়দের দাবি, সেটা তাঁর মানসিক অসু্স্থতার কারণেই হয়েছিল। কিন্তু এ বারে আর্থিক অনটনই মা-সহ দুই ছেলের এমন অবস্থার কারণ বলে দাবি তাঁদের। পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যেরা সুস্থ হলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement