—ফাইল চিত্র
কলকাতা শহরে বর্তমানে যত সংখ্যক বৈধ পার্কিং লট রয়েছে, তার থেকে অবৈধ পার্কিং লটের সংখ্যা বেশি। এই স্বীকারোক্তি খোদ কলকাতা পুরসভার গাড়ি পার্কিং দফতরের কর্তাদেরই। আর তা জেনেও এত দিন কিছু করতে পারেনি পুর প্রশাসন। যার ফলে এক শ্রেণির মানুষ বছরের পর বছর পুরসভার ভাঁড়ারে একটি পয়সাও জমা না দিয়ে অবৈধ পার্কিং জোন করে লক্ষ লক্ষ টাকার মুনাফা করে চলেছে। আর সেই অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যে শহরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে তা-ও মানছেন পুরকর্তারা। কিন্তু কিছুই করা যায়নি।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের চাপে শহরের পরিবেশ রক্ষার উপায় খুঁজতে সম্প্রতি নবান্নে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। সেখানে বলা হয়, যত্রতত্র পার্কিং লট তুলে দিয়ে ফাঁকা কোনও জায়গায় একাধিক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে গাড়ি চলাচল স্তব্ধ না হয়। তাতে বায়ুদূষণও কমবে বলে জানানো হয় বৈঠকে।
শুক্রবার রাতে পুর ভবনে এ নিয়ে বৈঠক করেন পুরসভার পার্কিং দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারও। সেখানে অবৈধ পার্কিংয়ে রাখা গাড়ির সম্বন্ধে জানতে নতুন একটি অ্যাপ চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দেবাশিসবাবু জানান, যে অ্যাপের সাহায্যে এখন কলকাতা পুলিশ ট্র্যাফিক সিগন্যাল ভাঙা গাড়িকে জরিমানা করছে, পুরসভার অ্যাপও সেই ধাঁচেই হবে। অবৈধ পার্কিংয়ে থাকা গাড়িকে জরিমানা করা হবে। গাড়ির মালিকের মোবাইলে চলে যাবে তার হিসেব। জরিমানার পরিমাণ হবে এক হাজার টাকা।
তিনি বলেন, ‘‘বারবার বলেও অবৈধ পার্কিং রোখা যায়নি। বৈধ পার্কিং লটে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি গাড়ি রাখছেন যাঁরা, তাঁদের বিরুদ্ধেও অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পার্কিং ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু করতে গত সপ্তাহে পুর ভবনে এক বৈঠক হয়। সেখানে খড়্গপুর আইআইটি-র এক বিশেষজ্ঞও হাজির ছিলেন। তাঁর পরামর্শ ছিল, বৈধ পার্কিং লটেও গাড়ি বা বাইক রাখার ভাড়া বাড়াতে হবে। প্রথম ঘণ্টার জন্য গাড়ির ক্ষেত্রে ১০ টাকা হলেও পরের প্রতি ঘণ্টায় তা অনেকটাই বাড়ানো দরকার। তাতে অনেকেই সারা দিন পার্কিংয়ে গাড়ি রাখা থেকে বিরত থাকবেন। এতে দূষণ কমবে, রাস্তার পরিসরও কমবে না।
পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে বৈধ পার্কিং লটের সংখ্যা প্রায় ৬৫০। বাইক বা স্কুটারের ক্ষেত্রে ভাড়া ঘণ্টায় ৫ টাকা, গাড়ির ক্ষেত্রে ১০ এবং লরি বা বাসের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা। প্রথম ঘণ্টার ভাড়া এক রেখে পরবর্তী ঘণ্টার জন্য ভাড়া কতটা বাড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।