ছবি: সংগৃহীত
শুধু থানাওয়াড়ি নয়, প্রতিটি থানা এলাকাকে কয়েকটি তল্লাট বা ‘বিট’-এ ভেঙে এ বার জনসংযোগ বাড়াতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের খবর, সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশন এই কাজ শুরু করেছে। নিউ মার্কেট-সহ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতিদিন কথাও বলেছেন পুলিশ আধিকারিকেরা। এই ধরনের বৈঠক বাড়াতে থানার ওসিদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন ডিসি (সেন্ট্রাল) সুধীর নীলকান্তম।
লালবাজারের একাংশ মনে করছেন, বহু বছর আগে থানা এলাকায় প্রতি জায়গায় নজরদারি থাকত। কিন্তু গত কয়েক বছরে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনেকটাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। তার ফলে নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ কমেছে। সেই ঘাটতি পূরণে ফের এই ধরনের যোগাযোগ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পুলিশকর্তাদের অনেকের মতে, নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়লে যেমন অপরাধ সম্পর্কে খবর মিলবে, তেমনই বড় ধরনের হাঙ্গামা এড়াতেও ‘সুসম্পর্ক’ অনেক বেশি কার্যকরী হবে।
পুলিশের অনেকেই বলছেন, গত বছরে শিশুচোর সংক্রান্ত গুজব ও গণপিটুনি ঠেকাতে প্রতি তল্লাটে জনসংযোগ বাড়াতে বলেছিলেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। তার সুফলও মিলেছিল। সাম্প্রতিক সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকত্ব পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে আন্দোলন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জেরে কোনও গোলমাল ঠেকাতেও এই জনসংযোগ কার্যকর হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেল, বাজার এলাকায় বহিরাগত কোনও দুষ্কৃতী এসে ঘাঁটি গাড়ছে কি না, সে সব জানতেও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুলিশের খবর, প্রতি থানা এলাকায় ‘বিট’প্রতি এক বা দু’জন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন বিটে গিয়ে বৈঠক করার সঙ্গেই তা ভিডিয়ো করে রাখতে বলা হয়েছে। প্রতি ‘বিট’-এর যাবতীয় খতিয়ান নথিবদ্ধ করতে হবে। নিজেদের আওতাধীন বিট বা তল্লাটে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে। প্রতি তল্লাটে যাতে পুলিশের
উপস্থিতি থাকে তার জন্য থানার ওসিরা তদারকি করবেন। নিজের তল্লাটে কোনও সমস্যা হলে তা সামলানোর প্রাথমিক দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের উপরে বর্তাবে। লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘প্রতি বিট বা তল্লাটে বৈঠক করা হয়েছে কি না এবং বৈঠক করে কী কী আলোচনা হয়েছে তা সবিস্তারে রিপোর্ট হিসেবে ২১ মার্চের মধ্যে ডিসি- সেন্ট্রালের অফিসে পাঠাতে বলা হয়েছে।’’