কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ফাইল চিত্র।
ভিড় নিয়ন্ত্রণে কতটা প্রস্তুত পুজো কমিটি? মণ্ডপ চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদৌ ঠিক আছে তো? এই সব খুঁটিনাটি দিক খতিয়ে দেখতেই শনিবার, মহালয়ার আগের দিন শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপ পরিদর্শন করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা আরও আটোসাঁটো করতে মণ্ডপ চত্বরে আরও বেশি সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি, এ দিন বিকেলে লালবাজারে পুলিশের গাইড-ম্যাপ এবং ‘উৎসব’ অ্যাপেরও উদ্বোধন করেন তিনি। ওই অ্যাপের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই এ বছর মণ্ডপ দেখার সুযোগ মিলবে বলে জানানো হয়েছে।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একডালিয়া এভারগ্রিনের মণ্ডপে পৌঁছন সিপি। সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার-সহ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ এবং দমকলের কর্তারা। সেখানে মণ্ডপে ঢোকা-বেরোনোর পথ কোনটা, তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায় সিপি-কে। এর পরে সেখান থেকে বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের মণ্ডপে পৌঁছন পুলিশকর্তারা। মূলত, পুজোর ক’দিন মণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে করা হবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে এ দিন জানান পুলিশ কমিশনার।
করোনার বিধিনিষেধকে পিছনে ফেলে দু’বছর পরে ফের চেনা ছন্দে ফিরছে কলকাতার পুজো। তাই গত দু’বছরের তুলনায় ভিড় যে কয়েক গুণ বাড়বে, সে বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত পুলিশকর্তারা। ভিড় সামলানোটাই তাই এ বছরে পুলিশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। সেই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতেই যুগ্ম কমিশনারের (সদর) একাধিক মণ্ডপ পরিদর্শনের দু’দিন পরে, এ দিন খোদ সিপি শহরের উত্তর-দক্ষিণ মিলিয়ে মোট সাতটি মণ্ডপ ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তা-সহ যাবতীয় বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মণ্ডপে প্রবেশ এবং বেরোনোর জায়গা প্রশস্ত আছে কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে। উৎসবের দিনগুলিতে পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা মোতায়েন থাকবেন। পুলিশের তরফেও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, চতুর্থীর সকাল থেকেই রাস্তায় মোতায়েন থাকবেন অতিরিক্ত পুলিশকর্মীরা। যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৪৭টি ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমেও নজরদারি চলবে। নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত ৮৫টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে বলে খবর। প্রস্তুত থাকবে ১৪টি অ্যাম্বুল্যান্স এবং ১৩টি কুইক রেসপন্স টিমও। পাশাপাশি মেট্রো স্টেশনগুলিতেও অতিরিক্ত পুলিশি নজরদারির বন্দোবস্ত রাখা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
গত বছর লেক টাউনের শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোয় উপচে পড়া ভিড়কে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলার রেশ এসে পড়েছিল উল্টোডাঙা, বাইপাসে। ভিড়ের চাপে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় গোটা চত্বর। এ প্রসঙ্গে সিপি বলেন, ‘‘নিয়মিত বিধাননগর পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পুজোর ক’দিনও এই যোগাযোগ থাকবে।’’