আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গুজব ছড়ানো রুখতে ফের সমাজমাধ্যমে বার্তা দিল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশ লিখেছে, “অপরাধের তথাকথিত বিবরণ সম্পর্কে সামাজিক এবং মূলধারার মিডিয়ায় অজস্র গুজব ছড়িয়েছে, যা ইতিমধ্যেই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে... যাচাই না করে ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন।” গত রবিবারও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পর আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়া রুখতে বার্তা দিয়েছিলেন খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল।
মঙ্গলবার আরজি কর-কাণ্ডে দায়ের হওয়া পাঁচটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ— গাফিলতি রয়েছে আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের। পুলিশি তদন্তেও রয়েছে একগুচ্ছ অনিয়ম। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এর পরেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। এর পাশাপাশি, এই মামলায় রাজ্যের হাতে থাকা সব তথ্য, নথি, এমনকি যে সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল পুলিশ তা-ও সিবিআইকে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত।
এই নির্দেশের পরেই সমাজমাধ্যমে বার্তা দিল কলকাতা পুলিশ। তাতে লেখা হয়েছে, “আর.জি. কর হাসপাতালের ছাত্রীর সাম্প্রতিক মর্মান্তিক মৃত্যুর মামলার তদন্তে আদ্যন্ত পেশাদারিত্ব এবং সর্বোচ্চ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছে কলকাতা পুলিশ, যার ফলে চার দিনেরও কম সময়ে মামলাটির তদন্ত করা সম্ভব হয়েছে। মাননীয় হাইকোর্টের আদেশে আমরা এখন মামলার সমস্ত নথি সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করেছি। মৃতার পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পান, তা নিশ্চিত করতে আমরা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সবরকম সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” বার্তায় আরও লেখা হয়েছে, “পাশাপাশি এ কথাও বলা প্রয়োজন যে অপরাধের তথাকথিত বিবরণ সম্পর্কে সামাজিক এবং মূলধারার মিডিয়ায় অজস্র গুজব ছড়িয়েছে, যা ইতিমধ্যেই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত চলাকালীন এর চেয়ে বিশদে না গিয়ে আমরা আবারও সকলকে অনুরোধ করব, যাচাই না করে ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। এর ফলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা সে যার দ্বারাই পরিচালিত হোক না কেন।” গত রবিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, “এখন বিভিন্ন ধরনের গুজব চার দিকে চলছে। কোথাও বলা হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন, কোথাও বলা হচ্ছে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে— এমন একাধিক গুজব ছড়াচ্ছে। এ সব নিয়ে আন্দোলনকারীদের মনেও প্রশ্ন ছিল। সেগুলি নিয়ে কথা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে। আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ। যদি কারও কোনও প্রশ্ন থাকে, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। যদি কেউ সন্দেহ করেন, ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারেন— সেটি আমরা সব রকম গুরুত্ব দিয়ে দেখব। আমাদের কিছুই আড়াল করার নেই।’’ ‘ফেক নিউজ়’ বা মিথ্যা খবর নিয়েও সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছিল লালবাজার।