মাকে নিয়ে মুখ খুলছেন না শুভব্রত

তিনি শুভব্রত মজুমদার। বেহালার ২৫ জেমস লং সরণির বাড়ির ফ্রিজার থেকে বুধবার রাতে উদ্ধার হয়েছে তাঁর মায়ের দেহ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৩৫
Share:

শুভব্রত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

কয়েক জন সকাল থেকেই তাঁর উপরে নজর রেখেছিলেন। বেলা বা়ড়লে যেচেই কথা বলে ‘বন্ধুত্ব’ করতে এসেছিলেন। তবে তিনি কোনও কথাই বলেননি। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কোনও বন্ধুর দরকার নেই! তিনি রোগী, তাই শুধু চিকিৎসককেই সব কথা জানাবেন।

Advertisement

তিনি শুভব্রত মজুমদার। বেহালার ২৫ জেমস লং সরণির বাড়ির ফ্রিজার থেকে বুধবার রাতে উদ্ধার হয়েছে তাঁর মায়ের দেহ। মৃত্যুর পরে তিন বছর ধরে ফ্রিজারে তাঁর দেহ সংরক্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন শুভব্রত। শুক্রবার রাতে তাঁকেই পাভলভ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ওই হাসপাতাল সূত্রে খবর, পাভলভে নিয়ে যাওয়ার পরে কোনও উত্তেজনা দেখা যায়নি শুভব্রতের আচরণে। চিকিৎসকদের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। শনিবার রাতে খাওয়া-ঘুমও ছিল স্বাভাবিক। রবিবার অবশ্য বেশি চুপচাপ ছিলেন তিনি।

Advertisement

এ দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই হাসপাতাল চত্বরে পায়চারি শুরু করেছিলেন তিনি। কোনও ঘর বন্ধ না রেখে খোলামেলা ভাবেই শুভব্রতকে রাখা হয়েছে। তবে তাঁর মধ্যে কোনও অস্থিরতা দেখা যায়নি। কয়েক জন রোগী বার কয়েক তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে গেলেও তিনি কথা বলেননি। জলখাবারে পাউরুটি, ডিম আর দুধ খেয়ে ফের ঘোরাঘুরি করেছেন। তবে মাঝেমধ্যে শান্তভাবেই হাসপাতাল কর্মীদের জানিয়েছেন, তাঁর বা়ড়ি যাওয়া খুব দরকার। অনেক কাজ আছে। তবে কী কাজ, তা নিয়ে কোনও কথা বলেননি। বরং কয়েক জন রোগী কথা বলতে যাওয়ায় তিনি সাফ জানিয়েছেন, চিকিৎসক ছাড়া তিনি কারও সঙ্গে কথা বলবেন না।

তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খাওয়ার পরে শুভব্রত কর্মীদের জানান নব্বই ছুঁইছুঁই বাবার জন্য তাঁর দ্রুত বাড়ি ফেরা দরকার। তবে জরুরি কাজ কি সেটিই? তা অবশ্য বলেননি তিনি। শুধু বার কয়েক বলেছেন, তিনি বাড়ি যেতে না পারলে বড় গোলমাল হয়ে যাবে।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, অতিরিক্ত প্রশ্ন কিংবা বাড়তি কথা পছন্দ করছেন না শুভব্রত। নিজের মতো ঘুরে বেড়ানোই তাঁর পছন্দ। এ দিকে, মায়ের দেহ সংরক্ষণের ঘটনায় রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে-র প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। কিন্তু পাভলভের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, পার্থ দে-র আচরণের সঙ্গে কোনও মিল নেই শুভব্রতের আচরণের। পার্থ দে নানা প্রতিক্রিয়া দেখাতেন। কেন তাঁকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতেন। দিদির কথা বলতেন। শুভব্রত সে রকম কিছুই করছেন না। বাবার কথা বললেও মা সম্পর্কে কোনও কথাই তিনি বলেননি।

পাভলভ হাসপাতালের সুপার গণেশ প্রসাদ জানান, আপাতত শান্ত হয়েই রয়েছেন শুভব্রত। চিকিৎসকেদের সঙ্গে যথেষ্ট সহযোগিতাও করছেন। মঙ্গলবার ফের তাঁর সঙ্গে কথা বলবেন চিকিৎসকেরা। এই ঘটনার তদন্তে নতুন কোনও দিক পাওয়া যাবে কি না, সে দিনের কথার পরেই স্পষ্ট হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement