ঝড়ে বেসামাল সিইএসসি

সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের ঝড়ে সিইএসসি এলাকায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই গাছ উপড়ে, তার ছিঁড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ পরিষেবা।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

মঙ্গলবারের ঝড়ে এ ভাবেই জ্বলে যায় বিদ্যুতের বহু তার। —ফাইল চিত্র।

প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিশেষত ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য সিইএসসি-র বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন মার্চ মাস থেকে। এ বছরও চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। পুরসভাগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কমিটি গঠন করে কাটা হয়েছিল রাস্তার ধারে গাছের ডালপালাও। কিন্তু গত মঙ্গলবার মাত্র এক মিনিটের কালবৈশাখীর দাপটে যে শহর থেকে শহরতলির বিস্তীর্ণ এলাকা বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কবলে পড়বে, তা বোধহয় সিইএসসি-র আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মী— কেউই আঁচ করতে পারেননি। ফলত সেই প্রাথমিক ধাক্কা সামলাতে তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়েছিল।

Advertisement

সংস্থা সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের ঝড়ে সিইএসসি এলাকায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই গাছ উপড়ে, তার ছিঁড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ পরিষেবা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় হাওড়া-শ্রীরামপুরের একটা বড় এলাকা সহ দমদম, বাঙুর, লেক টাউন, বরাহনগর, সিঁথি, সোদপুর, কামারহাটি এবং উত্তর শহরতলির বেশ কিছু অঞ্চলের। সিইএসসি-র অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট অনুযায়ী, মোট বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের প্রায় ৭০ শতাংশই হয়েছিল ওই সব এলাকায়। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই হয় ভেঙেছিল গাছের ডাল, অথবা গাছ উপড়ে ছিঁড়ে গিয়েছিল ওভারহেড লাইন।

সিইএসসি-র পরিসংখ্যান বলছে, ঝড়ের পরে তাদের হেল্পলাইনে ৩৪ হাজার ফোন আসে। এর মধ্যে ২৭ হাজার ফোন এসেছিল সেই সব গ্রাহকদের থেকে যাঁদের বাড়িতে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। আর ৬৫০টি ফোন ‘লাল’ তালিকাভুক্ত হয়। অর্থাৎ, ওই সব অঞ্চলে তার ছিঁড়ে আগুন লাগা বা ধোঁয়া বেরোতে দেখা গিয়েছিল। সিইএসসি জানাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে তাঁদের কর্মীরা প্রথমেই ওই এলাকাগুলিতে গিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করেন। পরে ধাপে ধাপে ছিঁড়ে যাওয়া তার জোড়া লাগানোর কাজ শুরু হয়। সংস্থার দাবি, বুধবার সকালের মধ্যেই ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে পরিষেবা চালু করে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। ফলে কোথাও বড় ধরনের গোলমাল হয়নি।

Advertisement

সিইএসসি-র অন্যতম কর্তা (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ঝড়ের পরে লাইন সারানোর কাজে বিদ্যুৎকর্মীদের নিয়ে অতিরিক্ত ৬০টি দলকে রাস্তায় নামানো হয়। এ ছাড়া আমাদের নিজস্ব ১০০টি গাড়ি তো ছিলই। সব মিলিয়ে আমাদের অফিসারেরা ছাড়াও প্রায় দেড় হাজার কর্মী নিরলস পরিশ্রম করে পরিষেবা স্বাভাবিক করেছেন।’’

সংস্থার কর্তাদের একাংশ বলছেন, বহু বছর পরে হঠাৎ এমন ঝড় হল। ফলে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা তাঁদের কাছে ছিল চ্যালেঞ্জ। স্থানীয় পুলিশ, বিভিন্ন পুরসভা এবং সাধারণ মানুষের সহযোগিতা না পেলে তাঁরা এর মোকাবিলা করতে পারতেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement