শিয়ালদহের ট্র্যাফিক ঢেলে সাজছে পুলিশ

সম্প্রতি নবান্নের নির্দেশে স্টেশন চত্বরের পুরো দায়িত্ব পেয়েছে লালবাজার। তার পরেই কী ভাবে সেখানে ট্র্যাফিক অরাজকতা কমানো যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০১:৪২
Share:

অপেক্ষা: শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে হলুদ ট্যাক্সি। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

অভিযোগ নতুন নয়। ট্রেন থেকে নামার পরে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বেরিয়েই ট্যাক্সিচালকদের জোরজুলুমের সম্মুখীন হননি, এ শহরে এমন যাত্রী পাওয়া কঠিন। এই ধরনের ‘অত্যাচারে’ অনভ্যস্ত, বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে অবস্থাটা হয় আরও সঙ্গীন। ওই অবস্থায় কী করণীয়, তা বুঝে উঠতে পারেন না অনেকেই। পুলিশেরও কোনও তৎপরতা চোখে পড়ে না। দেখা যায় না রেলের তরফে কোনও উদ্যোগও। দীর্ঘ দিনের এই ছবিই হয়তো এ বার বদলাতে চলেছে। সৌজন্যে কলকাতা পুলিশ।

Advertisement

সম্প্রতি নবান্নের নির্দেশে স্টেশন চত্বরের পুরো দায়িত্ব পেয়েছে লালবাজার। তার পরেই কী ভাবে সেখানে ট্র্যাফিক অরাজকতা কমানো যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। এক পুলিশকর্তা জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে পুরো সুফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে মেট্রোর কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত।

পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির অন্যতম প্রবেশপথ শিয়ালদহ স্টেশনে প্রতি ঘণ্টায় হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা চলে। শিয়ালদহ চত্বরেই হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর স্টেশন। ফলে ভবিষ্যতে যাত্রীদের ভিড় আরও বাড়বে। তাই ওই অঞ্চলের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পরিকল্পনার প্রথম দফায় হলুদ ট্যাক্সি, প্রিপেড ট্যাক্সি বুথ এবং অ্যাপ-ক্যাবের জন্য আলাদা লেন করা হচ্ছে। বাইরের কোনও গাড়িকে যেমন বিনা কারণে স্টেশন চত্বরে যেতে দেওয়া হবে না, তেমনই কোনও ট্যাক্সিচালক হাওড়া স্টেশনের মতো যাত্রীদের কাছে পৌঁছতে পারবেন না।

Advertisement

বর্তমানে অন্য চালকেরাও গাড়ি নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে স্টেশন চত্বরে দরদাম করেন। বেআইনি ওই কাজ প্রথমেই বন্ধ করা হবে বলে পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে স্টেশন অঞ্চলের ছ’টি অটো রুটের স্ট্যান্ডকে বি আর সিংহ হাসপাতালের পাশে কোনও জায়গাতে করার পরিকল্পনা রয়েছে পুলিশের।

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ জানিয়েছে, শিয়ালদহ স্টেশনে ঢোকা-বেরোনোর পথ চওড়া নয়। একটি বিন্দুতে অত্যধিক চাপ এড়াতে পায়ে হাঁটা যাত্রীদের সাবওয়ে দিয়ে মৌলালির দিকে পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে শুধু শিয়ালদহ মেন শাখার যাত্রীদের ওই পথ ধরানো হলেও দক্ষিণ শাখার যাত্রীদের জন্য আগামী দিনে পৃথক সাবওয়ের ব্যবস্থা হবে। যাতে তাঁরা সরাসরি বি আর সিংহ হাসপাতালে সামনে দিয়ে বেলেঘাটা মেন রোডে যেতে না পারেন। মেট্রোর কাজ শেষ হলে ওই সাবওয়ে চালু হবে। দক্ষিণ শাখার যাত্রীরা ওই সাবওয়ে দিয়ে এনআরএস হাসপাতালের সামনে চলে যাবেন।

লালবাজার জানিয়েছে, শিয়ালদহ উড়ালপুলের নীচ দিয়ে গাড়ি যাওয়ার পথ সুগম করতে হকারদের একাংশকে সরিয়ে ওই রাস্তা খালি করা হয়েছে। এতে শিয়ালদহ স্টেশন থেকে বেরিয়ে আসা ছোট গাড়ি সোজা বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট দিয়ে যেতে পারে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে ওই রাস্তা দিয়েই মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতাগামী সব গাড়িকে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে সবচেয়ে বড় সমস্যা গাড়ি পার্কিং করা। সেই সঙ্গে রয়েছে শিয়ালদহ কোর্টে আসা গাড়িগুলি রাখার সমস্যা। বর্তমানে ওই গাড়িগুলি কোর্ট চত্বরের বাইরে থাকে। যান চলাচলের উপরে তার প্রভাব পড়ে।

এ নিয়ে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে ইতিমধ্যেই কেএমডি’র সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে শিয়ালদহ কোর্টের নীচেই গ্রাউন্ড ফ্লোরের সংস্কার করে সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement