চার মাসেও মিলল না নিহতের পরিচয়

লালবাজার সূত্রে খবর, ৪ জানুয়ারি বরাহনগর জুটমিলের কাছে গঙ্গার কেলভিন ঘাট থেকে বছর তিরিশের ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৮ ০১:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

খুনের মামলার তদন্তে নেমে সূত্র পাচ্ছে না কলকাতা পুলিশ! প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও নিহত যুবকের পরিচয়ও জানতে পারেননি তদন্তকারীরা। শেষমেশ লিফলেট ছড়িয়ে পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন তাঁরা। পুলিশ জানায়, খুন হওয়া ওই যুবকের বিবরণ দিয়ে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ পর্যন্ত গঙ্গার দু’ধারের এলাকায় লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।

Advertisement

লালবাজার সূত্রে খবর, ৪ জানুয়ারি বরাহনগর জুটমিলের কাছে গঙ্গার কেলভিন ঘাট থেকে বছর তিরিশের ওই যুবকের দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর পরনে ছিল কালো টি-শার্ট এবং নীল জিন্স। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট থেকে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই যুবককে খুন করার পরে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাঁর মাথায় এবং দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যার ভিত্তিতে পুলিশ গত মাসে উত্তর বন্দর থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু ওই যুবকের পরিচয় মেলেনি।

এই পরিস্থিতিতে ওই যুবকের পরিচয় পেতে লিফলেট ছাপিয়ে বিলি করার কথা ঠিক করেন তদন্তকারীরা। এক পুলিশকর্তার মতে, ‘‘খুনের মামলায় দেহ শনাক্ত না হলে আসামি ধরা কঠিন। দেহটি কার, সেটা জানতে পারলেই কে তাঁকে খুন করতে পারে সে ব্যাপারে আঁচ পাওয়া সম্ভব।’’

Advertisement

পুলিশের একাংশ বলছে, সাগর থেকে জোয়ারের জল ঠেলে ঢুকলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় এলাকা থেকে দেহ এতটা ভেসে আসা সম্ভব নয়। আবার জোয়ারের জল কৃষ্ণনগরের উজানে পৌঁছয় না। ফলে বজবজ থেকে কৃষ্ণনগর, গঙ্গার দু’পারের এলাকা থেকে কোথাও দেহটি ফেলা হয়েছিল। ওই এলাকার সব ক’টি থানা এবং স্থানীয় বাজার, স্টেশন, বসতির বাসিন্দাদের কাছে লিফলেট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সূত্র মেলেনি। ওই যুবকের বর্ণনার সঙ্গে মেলে এমন নিখোঁজ ডায়েরিও কোনও থানায় হয়নি।

খুনের তদন্তে নেমে এমন হয়রানি অবশ্য এই প্রথম নয়। বছর দেড়েক আগে ময়দান এলাকায় ড্রামের মধ্যে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। তাঁর গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপের দাগ ছিল। প্রথমে ময়দান থানা এবং পরে লালবাজারের হোমিসাইড শাখা তদন্ত করলেও ওই যুবকের পরিচয় মেলেনি। খুনিরাও কেউ ধরা পড়েনি। গোয়েন্দা বিভাগের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই ঘটনায় প্রথামাফিক বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও ওই যুবকের পরিচয় জানতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের একাংশের দাবি, অনেক সময়ে প্রত্যন্ত এলাকার কোনও দুষ্কৃতীকে খুন করে বিরোধী গোষ্ঠীর লোকেরা রাতের অন্ধকারে গঙ্গায় দেহ ফেলে দেয়। তেমন ঘটনা হলে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বা প্রথামাফিক পথে এগিয়ে পরিচিতি পাওয়ার আশা থাকে না। ‘‘এ বারে তাই কিছুটা নতুন পথে চলতে চাইছি। যদি তাতে সূত্র মেলে’’— মন্তব্য এক পুলিশকর্তার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement