এই সেই প্রতিবাদ সভা।— নিজস্ব চিত্র।
আলিঙ্গন-কাণ্ডের প্রতিবাদে দমদম মেট্রো স্টেশন চত্বরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চলছিল অবস্থান-বিক্ষোভ। সেই সময়েই দু’জন মহিলাকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল এক মাঝবয়সি ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
সোমবার রাতে দমদমমুখী মেট্রোর কামরায় এক যুবক-যুবতী আলিঙ্গনরত অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তাঁদের উপরে চড়াও হয়েছিলেন একদল সহযাত্রী। গত চার দিন ধরে যে ঘটনা ঘিরে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। তার পাশাপাশি, দমদম মেট্রো স্টেশন চত্বরেও মঙ্গলবার থেকে জমায়েতের ধারা অব্যাহত। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
যাদবপুর, কলকাতা, প্রেসিডেন্সি-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্রছাত্রী এবং এলজিবিটি গোষ্ঠীর সদস্যেরা বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ জড়ো হন। তবে অন্য দিনের তুলনায় এ দিন প্রতিবাদের ধরন ছিল আলাদা। গোটা ঘটনার পক্ষে-বিপক্ষে মত জানাচ্ছিলেন জমায়েতে যোগদানকারীরা। বস্তুত, প্রকাশ্যে বিতর্ক-মঞ্চের একটা প্রেক্ষিত তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তি আচমকা সেখানে হাজির হন। মেট্রোর ওই যুগলকে নিগ্রহের বিরুদ্ধে যাঁরা কথা বলছিলেন, তাঁদের উপরেই তিনি চড়াও হন বলে অভিযোগ।
আক্রান্তদের এক জন, বেঙ্গালুরুর একটি উড়ান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছাত্রী বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আচমকা চিৎকার করে বলেন, এ সব বন্ধ করো। ওদের মেরেছে, বেশ করেছে। আরও মারা উচিত। অসভ্য সব ছেলেমেয়ে।’’ তাঁর দাবি, ওই ব্যক্তিকে শান্তিপূর্ণ ভাবে তাঁর বক্তব্য জানানোর জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি তাতে কান না দিয়ে কয়েক জন যুবককে ধাক্কা মারেন।
আক্রান্ত ছাত্রীর কথায়, ‘‘সিনিয়র দাদাদের ধাক্কা দিয়ে উনি পালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমি এবং আর একটি মেয়ে ওই ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করি, পালাচ্ছেন কেন? তার পরেই উনি আমাদের গায়ে হাত দেন। বুকে ধাক্কা মারেন।’’ ওই ছাত্রীর দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিপাকে পড়েছেন দেখে তাঁর পক্ষ নিয়ে আর এক জন এগিয়ে আসেন। জমায়েতে উপস্থিত মৈনাক দত্ত নামে এক জন জানান, পুলিশের সামনেই অভিযুক্তেরা বেরিয়ে যান। তাঁদের আটক করার কোনও চেষ্টা হয়নি।
রাতে সিঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তির লড়াই চলছিল। তাতে না পেরে গায়ে হাত দিল।’’