প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি-সহ বিভিন্ন মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে বাড়ি বাড়ি ঘুরে তথ্য সংগ্রহ এবং বাড়ির ভিতরের অবস্থা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে বিধাননগর পুর এলাকায়। সেই কাজেই বিধাননগর (উত্তর) থানা এলাকার একটি ব্লকে গিয়েছিলেন পুরসভার কর্মীরা। একটি বাড়িতে কলিং বেল বাজানো সত্ত্বেও কেউ দরজা খুলছিলেন না। খানিক পরে এক মহিলা বেরিয়ে আসেন। পুরকর্মীরা নিজেদের পরিচয় দিলেও বাড়ির ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি তাঁদের। ওই মহিলা সাফ জানিয়ে দেন, অপরিচিত কাউকে তিনি এ ভাবে বাড়িতে ঢুকতে দেবেন না।
এই সমস্যা এক দিনের নয়। প্রতিদিনের। পুরকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, পুরসভার কর্মী বলে জানানো সত্ত্বেও অনেকেই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন। কেউ
কেউ আবার পোষ্য কুকুরকেও লেলিয়ে দিচ্ছেন। ভয়ে বাড়িতে ঢোকা যাচ্ছে না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার নিরাপত্তারক্ষীরাই দরজা থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন।
মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে গিয়ে এমনই সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিধাননগরের পুরকর্মীদের। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, যে সমস্ত বাড়ি থেকে তথ্য সংগ্রহ কিংবা মশার উৎসস্থল খুঁজে বার করার কাজে সহযোগিতা করা হবে না, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তাতেও কাজ না হলে আইনি পদক্ষেপ করবে পুরসভা।
বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, দিনভর সেলসম্যান থেকে শুরু করে নানা লোকের আনাগোনা থাকে। প্রত্যেকেই বিভিন্ন রকম পরিচয়পত্র দেখান। তা যাচাই করারও কোনও উপায় থাকে না। তাই নিরাপত্তার স্বার্থেই অপরিচিত লোকজনকে বাড়ির ভিতরে আসতে দিতে চান না তাঁরা।
ব্লক কমিটিগুলির বক্তব্য, বাসিন্দাদের যুক্তিটাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নিরাপত্তার দিকটাও ভাবার বিষয়। আবার পুরসভার কর্মীদেরও সহযোগিতা করতে হবে। তাই পুরকর্মীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কিংবা ব্লক কমিটির প্রতিনিধিরা সঙ্গে থাকলে ভাল হয়।
বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের তরফে কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘পুরসভাকে সহযোগিতা করতে হবে। তবে বাসিন্দাদেরও কিছু বক্তব্য আছে। এই ধরনের কাজে ব্লকের প্রতিনিধিদের যুক্ত করলে ভাল হয়।’’
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে পুরসভা বিশেষ নজর দিচ্ছে। পুরকর্মীরা ঠিক ভাবে কাজ করছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি পুরকর্মীদের যাতে এই ধরনের সমস্যায় পড়তে না হয়, তা-ও দেখা হচ্ছে।
মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়ের বক্তব্য, ‘‘মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত কাজ হচ্ছে। তাই সব দিন ব্লকের প্রতিনিধিদের না-ও পাওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের কর্মীদের কাজে লাগানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের কাজ কবে কোথায় হচ্ছে, তা বাসিন্দাদের আগাম জানানোর চিন্তাভাবনা চলছে।’’