পরিত্যক্ত জমির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা একাধিক বার জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ফাইল ছবি।
ফাঁকা, পরিত্যক্ত জমির মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার কথা একাধিক বার জানিয়েছে কলকাতা পুরসভা। বিশেষত, যে সমস্ত জমি দীর্ঘদিন ফাঁকা থাকার কারণে সেখানে জঞ্জাল, আবর্জনা জমে মশার প্রজননস্থল-সহ নানা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার অন্য বাসিন্দারাও এর জেরে ভুক্তভোগী। শনিবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও সেই প্রসঙ্গই উঠে এসেছে।
এলাকার একটি ফাঁকা, পরিত্যক্ত জমিতে জঞ্জাল, আবর্জনা জমার কারণে সেখানে মশা ওইঁদুরের আস্তানা গড়ে ওঠায় কী ভাবে এলাকার অন্য বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে, এ দিন সে ব্যাপারে জনৈকনাগরিক মেয়রের কাছে অভিযোগ জানান ফোনে। মেয়র ওই নাগরিককে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে শহরের এই ধরনের জমিগুলির ক্ষেত্রে কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
মেয়র আধিকারিকদের জানান, এই ধরনের পরিত্যক্ত জমির মালিকদের বিরুদ্ধে আদালতে যাবে পুরসভা। দীর্ঘ বছরের বকেয়া করের প্রসঙ্গটি সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আইনি লড়াইয়ের ফল পুরসভার পক্ষে এলে তখন সংশ্লিষ্ট জমি নিলামে তোলা হবে।
পুর প্রশাসনের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছে, এই কাজ পুরসভা নিজেই করতে পারে। কারণ, বকেয়া করের সূত্রে আইনি পদক্ষেপ করার ক্ষমতা পুরসভার রয়েছে। কলকাতা পুর আইনের ২২০-২২১ ধারা অনুযায়ী, বকেয়া করের জন্য অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও বিক্রি করতে পারে পুরসভা। একই ভাবে পুর আইনের ২২১এ এবং ২২১বি ধারা অনুযায়ী যথাক্রমে স্থাবর সম্পত্তিবাজেয়াপ্ত ও বিক্রির পদক্ষেপও করতে পারে পুরসভা। তবে, পুর আইনের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হলেও তা বিক্রি করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট জটিলতা রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জমি নিলামে তোলার সামগ্রিক প্রক্রিয়াটিই বেশ জটিল ও সময়সাপেক্ষ। বরং নিলামেরথেকে পুরসভার পক্ষে অনেক বেশি সহজ ফাঁকা, পরিত্যক্ত জমির ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ (ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল) করা। বার বার খোঁজারপরে, বিজ্ঞাপন দিয়ে, জমিতে বোর্ড টাঙিয়েও মালিককে খুঁজে পাওয়া না গেলে এই পদ্ধতি গ্রহণ করা যেতেই পারে। তার পরে আইনি সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ফাঁকা জমি নিজের প্রয়োজনে ব্যবহারও করতে পারে পুরসভা।
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বকেয়া কর দিচ্ছেন না, এমন সম্পত্তির মালিক কে, তা জানা থাকলে কর আদায়ে বিশেষঅসুবিধা হয় না। কিন্তু মূল সমস্যা হল, যখন সম্পত্তির মালিক কে, সেটাই জানতে পারে না পুরসভা। কারণ, মালিক কে, তা জানা নাথাকলে বকেয়া করের চিঠি পাঠানো বা আইনি পদক্ষেপ করা সম্ভব হয়না। ফলে শহরের পরিত্যক্ত জমিনিয়ে কী করা হবে, সেই সমাধানের খোঁজ চলছেই বলে পুর প্রশাসন সূত্রের খবর।