সমস্যায় কলকাতা পুরসভা। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার কর্মীদের দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য কাজে লাগানো হয়। চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে আবার শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকারের শিবির। সেটি চলবে আগামী এক মাস। পুরসভা সূত্রের খবর, এ বার দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য ৬০০ জন পুরকর্মীকে বিভিন্ন দফতর থেকে ডাকা হয়েছে। অতীতে এই প্রকল্পের জন্য কর্মী তুলে নেওয়ায় পুরসভার বিভিন্ন দফতরের কাজে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। এ বারও একই পরিস্থিতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন পুরসভার আধিকারিকেরা।
অতীতে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের জন্য পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-সহ পুরসভার লাইসেন্স, সম্পত্তিকরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ থেকে কর্মীদের তুলে আনায় ওই সব দফতরের কাজ বিঘ্নিত হয়েছিল। আগামী মাসে পুরসভার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের বার্ষিক পরীক্ষা রয়েছে। দুয়ারে সরকার কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগে প্রায় ৩০০ জন স্থায়ী শিক্ষককে এর জন্য নেওয়া হয়েছিল। পরে পরিবর্তিত নির্দেশে ৩০০ জন স্থায়ী শিক্ষকের বদলে ১৫০ জন স্থায়ী ও ১৫০ জন অস্থায়ী শিক্ষককে প্রকল্পের জন্য ডাকা হয়। পুরসভা পরিচালিত বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এমনিতেই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব। তার উপরে পুজোর ছুটির পরেই এ ভাবে শিক্ষকদের সরকারি প্রকল্পের কাজে ডাকায় পঠনপাঠন বিঘ্নিত হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, অন্যান্য বারের মতো এ বারেও লাইসেন্স ও সম্পত্তিকর বিভাগ থেকে কর্মী তুলে নেওয়ায় রাজস্ব আদায়ে সমস্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পুরসভাতেও কর্মীর অভাব রয়েছে। তার উপরে ভোটার কার্ড সংশোধন থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য বছরভর পুরসভার প্রায় ৩০০ স্থায়ী কর্মী নির্বাচন কমিশনে কাজ করে থাকেন। পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই ভাবে পুরকর্মীরা অন্য জায়গায় কাজে চলে যাওয়ায় পুরসভার কাজে সমস্যা হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে লাইসেন্স বা কর রাজস্ব বিভাগের কর্মীরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিদর্শনে যেতে পারছেন না। নজরদারির অভাবে রাজস্ব আদায় আশানুরূপ হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
উল্লেখ্য, ২০২২-’২৩ আর্থিক বছর শেষ হতে আর মাত্র তিন মাস বাকি। পুরসভার কর রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, নভেম্বরের পর থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে লাইসেন্স বা সম্পত্তিকর বিভাগের রাজস্ব আদায়ে জোর দেওয়া হয়। এখন সেই কাজ ব্যাহত হচ্ছে। যদিও পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘‘দুয়ারে সরকার প্রকল্পও গুরুত্বপূর্ণ। সেটাও করতে হবে। এতে অন্যান্য দফতরের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’