খন্দপথ: বাইপাস থেকে ধাপাগামী রাস্তার ভাঙাচোরা অবস্থা। বুধবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
প্রতি বছর বর্ষাতেই খানাখন্দময় রাস্তা নিয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয় শহরবাসীকে। এ বারও তা থেকে রেহাই মেলেনি। বুধবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে দেখা গেল, খানাখন্দে ভরা বহু রাস্তায় তাপ্পি দেওয়ার কাজ চলছে। কোথাও আবার তাপ্পির পরেও অবস্থা ফের বেহাল। ফলে টানা বৃষ্টি হলে পথের অবস্থা আবারও যে-কে-সেই হয়ে দাঁড়াতে পারে। বর্ষার মরসুমে শহরের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বুধবার কলকাতা পুর ভবনে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে পুরসভার বিভিন্ন দফতরের শীর্ষ কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেএমডিএ, পূর্ত দফতর, পুলিশ-সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, বর্ষার সময়ে সিইএসসি, পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগ বা অন্য কোনও সংস্থা শহরের রাস্তা কাটার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে মনে করলে আগেভাগে তা পুরসভার সিভিল ও রাস্তা বিভাগকে জানাতেই হবে।
পুর রাস্তা বিভাগের এক আধিকারিক জানান, মাটির নীচে জলের লাইন বা সিইএসসি-র বিদ্যুৎ সংযোগ করার সময়ে পুরসভার রাস্তা ও সিভিল বিভাগকে ঠিক মতো না জানানোয় সংস্কারের অভাবে দিনের পর দিন সেই রাস্তা বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। মেয়র পারিষদ (রাস্তা) জানান, মাটির নীচে বিভিন্ন পরিষেবার কাজ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই কাজ করার সময়ে পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতরকে আগে জানানো বাধ্যতামূলক। তা হলে কাজ শেষ হওয়া মাত্র সংশ্লিষ্ট রাস্তা মেরামত করা যাবে। আগামী সপ্তাহে কলকাতা পুরসভা ও পুলিশ যৌথ ভাবে শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শনে বেরোবে।
এ দিন শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে অবশ্য একাধিক রাস্তার বেহাল দশা চোখে পড়েছে। ইএম বাইপাসের উপরে, কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামের সামনে বিপজ্জনক গর্ত দেখা গেল, যা বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। স্থানীয়েরা জানান, বিশেষত মোটরবাইকের ক্ষেত্রে এমন ছোটখাটো গর্ত বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। অতীতে এমন গর্তে চাকা পড়ে মৃত্যুও হয়েছে একাধিক বাইকচালকের।
বাইপাস থেকে ধাপা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে যাওয়ার রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ। বাইপাস সংলগ্ন কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুকুন্দপুরে রয়েছে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও স্কুল। অথচ, সেই হাসপাতালের সামনের রাস্তায় হাঁ হয়ে রয়েছে বড় বড় গর্ত। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, দুপুরে স্কুল ছুটির পরে অনেকেই সন্তানদের স্কুটার বা বাইকের পিছনে বসিয়ে এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরেন। এমনকি, এই গর্তে পড়ে অতীতে সাইকেল ভ্যান উল্টে গিয়েছিল বলেও জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।
বাইপাস সংলগ্ন ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের মার্টিনপাড়া রোডের অবস্থাও একই। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি সুশান্ত ঘোষ জানান, মার্টিনপাড়া রোড সারানোর জন্য পুরসভাকে একাধিক বার জানানো হয়েছে। তবে কলকাতা পুরসভার রাস্তা বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, পুরসভার তরফে বাইপাসের বিভিন্ন গর্ত বোজানোর কাজ চলছে। সমস্ত খানাখন্দও সংস্কার করা হবে।