বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে নজরদারির কাজে কলকাতার নাগরিকদের সাহায্য নিতে চায় কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় মুখ পুড়েছে কলকাতা পুরসভার। বেআইনি নির্মাণ রুখতে যে কলকাতার পুর প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে, সেই সমালোচনাও সহ্য করতে হয়েছে তাদের। এ বার বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে নজরদারির কাজে কলকাতার নাগরিকদের সাহায্য নিতে চায় কলকাতা পুরসভা। গার্ডেনরিচের ঘটনার পরেই বেআইনি নির্মাণ রুখতে আলোচনা শুরু হয়েছে আধিকারিকদের মধ্যে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, শহরের অবৈধ নির্মাণ রুখতে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হবে। কোনও নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন জাগলে যে কোনও ব্যক্তি পুরসভার ওয়েবসাইটে গিয়ে অনুমোদিত নকশার সঙ্গে নির্মীয়মাণ বাড়ির নকশা মিলিয়ে নিতে পারবেন।
মেয়র ফিরহাদ হাকিমের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ পাওয়ার পরেই কলকাতা পুরসভা এই সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে। প্রত্যেক দিনের অনুমোদিত নকশা নিয়ম করে পুরসভার ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবসাইটে বিল্ডিং বিভাগের জায়গায় সেই নকশাগুলি আপলোড করা হচ্ছে। কোনও নির্মাণ নিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করার আগে পুরসভার ওয়েবসাইটে ঢুকে তাঁর অভিযোগের যথার্থতা যাচাই করে নিতে পারবেন। কোনও বাড়ির নির্মাণ বৈধ না কি অবৈধ, তা ঠিকানা দিয়ে নকশা খুঁজে দেখে নেওয়া যাবে। এমনকি, গত ১০ বছর ধরে পুরসভা শহরে যত নতুন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করেছে, সবটাই ওয়েবসাইটে তোলার কাজও শুরু হয়েছে বলেই কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর।
তবে গার্ডনরিচের ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ রুখতে একটি অ্যাপ চালু করেছে কলকাতা পুরসভা। বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারেরা নিয়মিত এলাকা পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট নির্মাণের ছবি আপলোড করছেন সেই অ্যাপে। ফলে বেআইনি নির্মাণের ব্যপারে ব্যবস্থা নিতে পুরসভার সুবিধা হচ্ছে বলেই দাবি করেছেন বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তা। সেই সঙ্গে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে নাগরিক সচেতনতাও বৃদ্ধি করা যাবে বলেই মনে করছে কলকাতা পুরসভা। বিল্ডিং বিভাগের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘কলকাতা শহরের অলিতে-গলিতে যে সব বেআইনি নির্মাণ হয়, তা পুরসভার নজর এড়িয়ে যেতেই পারে। কিন্তু শহরের নাগরিকেরা যদি সচেতন ভাবে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ পুরসভাকে জানান, তা হলে আমাদের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই নাগরিকেরাও সুরক্ষিত থাকবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রতি সপ্তাহেই ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে মেয়রের কাছে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। এ বার মেয়রকে জানানোর আগেই যাতে নাগরিকেরা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য হাতে পেয়ে যান, সেই বিষয়টিও আমাদের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে হতে পারে বলেই মনে করছি আমরা।”