পরিযায়ী শ্রমিকদের কারণে ডেঙ্গি ও ম্য়ালেরিয়ার মোকাবিলায় সমস্যায় পড়েছে কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভা। সেই পরিস্থিতির মধ্যেই তাদের সমস্যা বাড়িয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে সেই উদ্বেগের ছবিই ধরা পড়ল। পুর অধিবেশনে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তার জেরেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার সমস্যা নিয়ে জবাব দেন ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।
কাউন্সিলর হিসেবে নিজের সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে ইলোরা বলেন, ‘‘২৪ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন বাজার ও ব্যবসায়ী অঞ্চলে প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিকের বসবাস এবং জেলা থেকে আগত বহু মানুষ আমাদের ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য বিভাগে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন। কিন্তু সবাই ঠিকানা রেজিস্ট্রার করছেন না। সে ক্ষেত্রে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া রোগীকে স্বাস্থ্যকর্মীরা খুঁজে পাচ্ছেন না।’’ তাঁর মতে, এ কারণে ম্যালেরিয়া রোগীর পরিসংখ্যান জানতেও সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে পরামর্শ হিসাবে তিনি বলেন, কলকাতা পুরসভা কি রোগীদের জন্য আধার কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করতে পারে?
জবাবে ডেপুটি মেয়র অতীন বলেন, ‘‘যে কোনও মানুষ জ্বর হলেই কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা করাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পুরসভা আগত ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করাতে বাধ্য। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই পুরসভা আধার কার্ড দেখানো বাধ্যতামূলক করার কথা বলতে পারে না।’’ তবে কাউন্সিলরের দাবিকে মান্যতা দিয়েছে পুরসভার অন্দরমহল। এ ক্ষেত্রে এক পুর আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের কারণে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হচ্ছেন। কারণ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে রক্ত পরীক্ষা করার পর কারও ম্যালেরিয়া বা ডেঙ্গি ধরা পড়লে তাঁর দেওয়া ঠিকানায় খুঁজতে যাওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রোগীর সংখ্যা ও রোগের মোকাবিলা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে।’’
এ ক্ষেত্রে রোগীদের স্বাস্থ্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডেপুটি মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘ম্যালেরিয়া ধরা পড়লে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে রোগীকে ওষুধ নিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যদি রোগীকে খুঁজে না পাওয়া যায়, তা হলে সমস্যা হতে পারে। তবে রক্ত পরীক্ষা করার পর যদি কারও ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে, তাঁকে সব রকম সহায়তা দেওয়ার জন্য কলকাতা পুরসভা প্রস্তুত।’’