বিপর্যস্ত: আগুনে পুড়ে যাওয়া বাগড়ি মার্কেট। নিজস্ব চিত্র
বাগড়ি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের পরে এ বার কি বদলাবে নিউ মার্কেট চত্বরের হকার রাজত্ব?
নিউ মার্কেট চত্বরের ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার সেই উদাহরণ দিয়েই সরব হলেন হকারদের বিরুদ্ধে। বাগড়ি মার্কেটে ডালা থেকেই কোনও ভাবে আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। নিউ মার্কেট চত্বর জুড়েও রয়েছে এমন হকারের রাজত্ব। দোকানগুলোর সামনে রাস্তা জুড়েই ডালা নিয়ে বসে পড়েন তাঁরা। এমন অবস্থাতেই বছরের পর বছর ধরে ব্যবসা চলছে। বাগড়ির ঘটনার পরে তাই নিউ মার্কেটের আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার কমিশনার খলিল আহমেদের সঙ্গে দেখা করে সে কথা জানান।
প্রসঙ্গত, আগেও একাধিক বার তাঁরা পুলিশ ও পুরসভাকে এই হকার সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। এ দিন হকারদের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষও।
ব্যবসায়ীদের মতে, যে ভাবে নিউ মার্কেট চত্বরে রাস্তা জুড়ে এবং দোকানের মুখে হকারেরা বসে রয়েছেন, বাগড়ি মার্কেটের পুনরাবৃত্তি সেখানেও হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। ‘জয়েন্ট ট্রেডার্স ফেডারেশন’-এর সম্পাদক রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘রাস্তার উপরে হকারেরা ডালা নিয়ে বসে পড়েছেন। সেই সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বারবার পুলিশে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও ওই পরিস্থিতি বদলাচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে সুনির্দিষ্ট ভাবে হকার নীতির কথা বলেছেন, সেখানে তাঁর কথাকেই তো অমান্য করা হচ্ছে। অথচ নজর নেই কারও!’’
হকার বসার ক্ষেত্রে পুর আইন যে লঙ্ঘিত হচ্ছে তা মানছেন পুরকর্তারাও। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘পুর আইনের ৪২৯ ধারা অনুযায়ী মার্কেটের সীমানার ৪৫ মিটারের মধ্যে কোনও হকার বসতে পারবেন না। কিন্তু কোন জায়গাতে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে?’’ মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন ববি বলেন, ‘‘শুধু নিউ মার্কেটই নয়, গড়িয়াহাট, ধর্মতলা সব জায়গাতেই এই সমস্যা। দোকানের ধার ঘেঁষে হকারেরা বসায় অসুবিধা তো হয়ই। মার্কেটের নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে যাতে হকারেরা বসতে না পারেন, সে জন্য দেখা যাক কী করা যায়।’’
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, পুর কর্তৃপক্ষ পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাতে অভিযান করার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকি, রাতে রাস্তায় কোনও ভাবে ডালা ফেলে রেখে চলে যাওয়া যাবে না। সে দিকে নজর দেওয়া হবে বলেও পুর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন।