কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলেন শহরের মেয়র ফিরহাদ হাকিম। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করল কলকাতা পুরসভা। সাত সদস্যের সেই কমিটিকে খুঁজে বার করতে হবে আটটি প্রশ্নের জবাব। সেই জবাবের ভিত্তিতে সাত দিনের মধ্যে পুরসভাকে রিপোর্ট দেবেন তাঁরা।
গার্ডেনরিচে বাড়ি ভেঙে দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, এই তদন্ত কমিটি তৈরি হয়েছে ফিরহাদের নির্দেশেই। কমিটি গঠন করেছেন পুর কমিশনার ধবল জৈন।
সাত সদস্যের এই কমিটির মাথায় রয়েছেন কলকাতা পুরসভায় যুগ্ম কমিশনার জ্যোতির্ময় তাঁতি। তিনিই এই কমিটির চেয়ারম্যান। এ ছাড়া কমিটিতে আছেন পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের প্রতিনিধি, জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের আধিকারিকরা। পাশাপাশিই কলকাতা পুলিশ, বিএলআরও এবং পুরসভার ‘ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল’ মুগ্ধা চক্রবর্তীকে রাখা হয়েছে কমিটিতে।
সাত সদস্যের এই কমিটি গার্ডেনরিচের ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে পরখ করবেন। এ ছাড়া খুঁজবেন আটটি প্রশ্নের উত্তর—
এক, জমির মালিকানা কার? কী ধরনের জমি? জমিতে কোনও বদল আনা হয়েছে কি না অর্থাৎ জমির পরিবর্তন হয়েছে কি না।
দুই, বাড়িটির প্ল্যান বৈধ কি না। তাতে অনুমোদন ছিল কি না। অনুমোদন দেওয়া হলে কারা দিয়েছে? বাড়ি তৈরির আগে যে মাটির পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে হয়, সেই রিপোর্ট আছে কি না। কারা ওই বাড়ি নির্মাণ করছিল, ইঞ্জিনিয়ার কে ছিলেন, কর্মী কারা ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, অগ্নি নির্বাপণ বিভাগের অনুমোদন ছিল কি না, সিইএসসি-র কাছে বিদ্যুতের সংযোগের কোনও আবেদন করা হয়েছিল কি না, নির্মাণ কাঠামো কতটা মজবুত তার রিপোর্ট যথাস্থানে দেওয়া হয়েছিল কি না— এ সবই জানতে হবে।
তিন, কী ধরনের মালমশলা ব্যবহার করা হয়েছিল নির্মাণকাজে।
চার, বাড়িটি ভেঙে পড়ার যথাযথ কারণটি কী?
পাঁচ, কতটা ক্ষতি হয়েছে? সম্পত্তির ক্ষতি এবং জীবনের ক্ষতি— দু’টি বিষয়েই জানতে হবে।
ছয়, সরকারি আধিকারিকদের জড়িত থাকার বা উদাসীন থাকার যে অভিযোগ উঠছে, তা কত দূর সত্যি?
সাত, গার্ডেনরিচের ওই বহুতলের ফ্ল্যাট কি তৈরি হওয়ার আগেই বিলিবণ্টন হয়ে গিয়েছিল, না কি নির্মাণ চলাকালীন তা বিক্রি করা হয়?
আট, ঘটনাস্থলে গিয়ে এই সমস্ত প্রশ্নের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কিছু জানা গেল কি না।
কলকাতা পুরসভার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, এই অনুসন্ধান কমিটি গার্ডেনরিচকাণ্ডের সমস্ত কারণ খতিয়ে দেখে আগামী সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। ২২ মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার এই কমিটি গঠনের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন পুর কমিশনার। ফলে আগামী ২৯ মার্চের মধ্যেই গার্ডেনরিচের ঘটনার রিপোর্ট পেশ হওয়ার কথা পুরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে।