—ফাইল চিত্র।
প্রায় সাড়ে ১১ মাস পরে মেট্রোয় টোকেন ফিরতে চলেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ মার্চ থেকে কলকাতা মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট লাইনে ফের আগের মতোই টোকেন ব্যবহার করে যাতায়াত করতে পারবেন যাত্রীরা।
সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় যাত্রী পরিষেবা আগের মতো স্বাভাবিক করতে চাইছেন মেট্রো। তারই অঙ্গ হিসেবে টোকেন ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি মেট্রো চলাচলের সময়সীমা বাড়ানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আগামিকাল বুধবার থেকে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যা ২৪৪ থেকে বাড়িয়ে ২৫২ করা হচ্ছে। সকালে দক্ষিণেশ্বর থেকে প্রথম ট্রেন সকাল ৭টার পরিবর্তে ৬টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে। একই ভাবে দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী এবং দমদম থেকে কবি সুভাষগামী ট্রেনও সকাল ৭টার পরিবর্তে ৬টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী প্রথম ট্রেনের সময়েও আগের সকাল ৭টা থেকে ১০ মিনিট এগিয়ে ৬টা ৫০ মিনিট হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বর থেকে আগের ৭৯টি ট্রেন বেড়ে নতুন সূচিতে ৮৫টি ট্রেন চলবে। দমদম থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী ট্রেনের সংখ্যা ৩টি থেকে বাড়িয়ে ৫টি করা হচ্ছে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী ট্রেনের সংখ্যাও ৭৯টি থেকে বাড়িয়ে ৮৭টি করা হচ্ছে।
রাতের অন্তিম ট্রেন দক্ষিণেশ্বর থেকে ৯টা ১৮ মিনিটের পরিবর্তে রাত ৯টা ২৮ মিনিটে ছাড়বে। একই ভাবে দমদম থেকে কবি সুভাষগামী রাতের অন্তিম ট্রেন সাড়ে ৯টার পরিবর্তে ওই দিন থেকে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ছাড়বে।
শনিবার ২২৮টি-র পরিবর্তে ২৩২টি ট্রেন চলবে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে সারাদিনে ১৫৬টির পরিবর্তে ১৬০টি ট্রেন চলবে। তবে, দিনের প্রথম এবং অন্তিম মেট্রোর সময় একই থাকছে। রবিবার মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যা ১০২ থেকে বাড়িয়ে ১০৪ করা হচ্ছে। যার মধ্যে, ১০২টি ট্রেন কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বরের মধ্যে চলবে। তবে রবিবার উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো পরিষেবা শুরু হবে সকাল ৯টায়। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় অবশ্য এখনই ট্রেনের সংখ্যা বাড়ছে না।
টোকেন চালু না থাকায় অনিয়মিত যাত্রীদের বড় অংশ সমস্যায় পড়ছিলেন। অনেকেই স্মার্টকার্ড কিনে যাতায়াতের পরে তা মেট্রো স্টেশনে জমা দিয়ে অবশিষ্ট অঙ্কের টাকা ফেরত নিয়ে যাচ্ছিলেন। এর জেরে প্রত্যেক যাত্রায় মেট্রো কর্তৃপক্ষের এক টাকা করে ক্ষতি হচ্ছিল। একাধিক হাতের স্পর্শ এবং ভিড় থেকে সংক্রমণ এড়াতে স্মার্টকার্ড ব্যবহারে জোর দেওয়া হলেও সেই উদ্দেশ্য সফল হচ্ছিল না। ফলে, যাত্রীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই টোকেন ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।
আপাতত, সব ক’টি স্টেশনে একটি করে টোকেনের কাউন্টার খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চাহিদা বাড়লে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ সাপেক্ষে টোকেনের কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো যাবে। বুকিং কাউন্টারের কর্মীরা যাত্রীদের টোকেন দেওয়ার সময়ে কী ধরনের সতর্কতা গ্রহণ করবেন, তা এখনও জানানো হয়নি। ব্যবহৃত টোকেন কী ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হবে, তা-ও স্পষ্ট নয়। মেট্রোয় করোনা যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা কর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হলেও সিংহভাগ কর্মীই এখনও তা পাননি। ফলে, টোকেন ব্যবহার হলে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন মেট্রোর কর্মীদের বড় অংশ। যদিও মেট্রোর কর্তাদের দাবি, যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েই টোকেন চালু করা হচ্ছে। এ নিয়ে বিভিন্ন স্টেশনের আধিকারিকদের নিয়ে এক দফা বৈঠকও সম্পন্ন হয়েছে।