কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।
সোমবারই নবান্নের বৈঠকে রাজ্যের একাধিক জেলার সরকারি হাসপাতালের ‘রেফার রোগ’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেফার করার প্রবণতা কমানোর নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, রেফার করার জন্য সময় নষ্টের জেরে কোনও গর্ভবতীর মৃত্যু হলে দায়ী থাকবেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকই। জেলার হাসপাতাল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কড়া অবস্থান নিলেও পরের দিনই খাস কলকাতায় এক বালককে রেফার করার অভিযোগ উঠল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার হোগলা গ্রামের বাসিন্দা সফিউদ্দিন আখুনের ছেলে শাহারুল আখুন গত ২১ নভেম্বর সকালে পাড়ার দোকানে গিয়ে একটি বাঁশি কেনে। ফুঁ দিয়ে বাজাতে গিয়ে বাঁশিটি কোনও ভাবে তার শ্বাসনালিতে ঢুকে যায়। সফিউদ্দিন বলেন, ‘‘কাশির দমকের সঙ্গে শোঁ-শোঁ শব্দ শুনে ভয় পেয়েছিলাম। প্রথমে বারুইপুরের একটি হাসপাতালে যাই। সন্ধ্যায় ন্যাশনাল মেডিক্যালে ভর্তি করি।’’ তাঁর অভিযোগ, রাতে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান করার পরে শুধু স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছিল শাহারুলকে। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ওই বালকের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাই অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে।
এর পরে এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ শাহারুলকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে ইএনটি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসক দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, পুনরায় পরীক্ষায় দেখা যায়, ডান দিকের শ্বাসনালিতে ফুসফুসের একেবারে কাছে আটকে রয়েছে ওই বাঁশি। দীপ্তাংশু বলেন, ‘‘ভর্তির পরেই তড়িঘড়ি ব্রঙ্কোস্কোপি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুপুর দেড়টার মধ্যে বাঁশি বার করা হয়েছে। ছেলেটি সুস্থ রয়েছে।’’
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, শহরের পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের একটি হল ন্যাশনাল মেডিক্যাল। সেখানে ব্রঙ্কোস্কোপির মতো পরিষেবা কেন থাকবে না? আর যদি ওই পরিষেবা থাকে, তা হলে ছেলেটিকে অন্যত্র পাঠাতে হল কেন? বিষয়টি জানতে ন্যাশনালের অধ্যক্ষ অজয় রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা করা হলে, তিনি প্রথমে ফোনটি ধরেন। কিন্তু পরিচয় জেনেই ফোনটি কেটে দেন। জবাব দেননি মেসেজেরও।