আলোকচিত্রশিল্প একটি স্বয়ংসিদ্ধ নন্দনক্ষেত্ররূপে স্বীকৃত। কিন্তু এই শিখরে পৌঁছতে ভাঙতে হয়েছে অনেক পথ। গত শতাব্দীর প্রথম কুড়ি বছরেও ভারতীয় স্থিরচিত্রে অলংকরণ শিল্পের প্রভাব ছিল প্রখর। আবার আশি-নব্বইয়ের দশকে দেখা যায় চলছে বিস্তর নিরীক্ষা, মনোযোগ নিবদ্ধ ডকুমেন্টেশনের দিকে। ভারতচিত্রের এই আমূল পটপরিবর্তনের মূল হোতা বুঝি ত্রিশের দশক। সে দশকের শেষার্ধে এক মহিলা আলোকচিত্রীর আত্মপ্রকাশ। তিনিই মনোবীণা রায়। সে সময়ের মুষ্টিমেয় মহিলা-চিত্রীদের তালিকায় যমজ বোন মনোবীণা-দেবলীনা অগ্রণী সারিতে। পরের কয়েক দশক অক্লান্ত ছবি তুলে গিয়েছেন মনোবীণা। সে ছবি পরাধীন দেশের প্রদর্শনীগুলিতে এবং নব্য ভারতের অভিজাত সাপ্তাহিকী ও অত্যাধুনিক ফ্যাশন-পত্রিকার আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। সে সকল ছবিতে যে মনোবীণা সৃষ্টি করেছেন ফটোগ্রাফির নতুন ভাষা। সে ভাষার দৃশ্যকল্প বড়ই সপাট, রং-তুলির ললিতকলা থেকে ভিন্ন। সে ছবি দৃষ্টি কাড়ে, ভাবায়, মননকে অভিনব রসে সিঞ্চিত করে। এবং শোনায় শতেক উপাখ্যান।
অভিভাবক
বাঙালির জীবন আর বাংলা সাহিত্যে নিরন্তর তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি, সজাগ প্রকাশ। তাঁকে ছাড়া আর কাকেই বা আমাদের দৈনন্দিন সঙ্কট কবুল করতাম আমরা? ‘‘যখনই সংকট ঘনিয়ে ওঠে আমাদের বঙ্গদেশ থেকে সারা দেশে, আমরা তাঁর স্বর শোনার অপেক্ষায় থাকি, অভিভাবকের মতো তিনি আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থায় সহিষ্ণুতার মানচিত্র চিনিয়ে দেন।’’— ওয়ার্ড অ্যান্ড ট্রুথ: রিডিং শঙ্খ ঘোষ বইটির ভূমিকা-য় জানিয়েছেন সম্পাদক অংশুমান কর। এটি শঙ্খ ঘোষের উপর প্রকাশিত প্রথম ইংরেজি গ্রন্থ (বীরুৎ জাতীয় সাহিত্য সম্মিলনী)। কবির জ্ঞানপীঠ প্রাপ্তি উপলক্ষে অনলাইন জার্নাল মিউজ় ইন্ডিয়া তাঁর উপর যে বিশেষ সংখ্যাটি প্রকাশ করেছিল, নতুন একটি লেখা-সহ এই বইটিতে আছে সেই সংখ্যারই অধিকাংশ লেখা, পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত রূপে। শঙ্খ ঘোষের কবিতা ও প্রবন্ধ নিয়ে লিখেছেন স্বপন চক্রবর্তী, শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। কবিকে নিয়ে কন্যা শ্রাবন্তী ভৌমিকের দীর্ঘ স্মৃতিচারণের পাশাপাশি আছে সুমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সন্দীপন চক্রবর্তীর নেওয়া কবির দীর্ঘ সাক্ষাৎকার। আছে তাঁর কিছু বাছাই কবিতার ইংরেজি অনুবাদও, অনুবাদক ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ ফেব্রুয়ারি, কবির জন্মদিনে বইটি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
দ্বিশতবর্ষে
দু’শো বছরে পৌঁছেও দেখা যাচ্ছে, অক্ষয়কুমার দত্ত (১৮২০-১৮৮৬) সম্পর্কে উপাদান বা আলোচনা নিতান্তই সীমিত। আজও তাঁর সমস্ত রচনা সঙ্কলিত হয়নি। কোরক সাহিত্য পত্রিকার বইমেলা ২০২০ সংখ্যাটি তাঁকে নিয়েই নির্মিত। সম্পাদক তাপস ভৌমিক যথার্থই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তিনি কি সত্যই অনাগ্রহের যোগ্য?’’ এই সংখ্যায় প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন আশীষ লাহিড়ী বদরুদ্দিন উমর-সহ অনেকেই। আছে তাঁর মনন ও ভাবনাজগৎ নিয়ে আলোচনা, সম্পাদক হিসেবে তাঁর ভূমিকা, পরিভাষাবিদ ও প্রাবন্ধিক হিসেবে গুরুত্বের কথা, দেবেন্দ্রনাথ রাজনারায়ণ বসু বিদ্যাসাগর ও বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে তাঁর পারস্পরিক সম্পর্ক, অক্ষয়কুমারের বইয়ের আলোচনা ও জীবনপ্রসঙ্গ এবং সব শেষে পুনর্মুদ্রণ অংশে স্মরণ ও মূল্যায়ন। আদ্যন্ত আধুনিকমনস্ক মানুষটিকে নিয়ে এই কাজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
চলচ্চিত্র উৎসব
জোকার, প্যারাসাইট, প্যাটারসন, ইয়ং আহমেদ, পেন অ্যান্ড গ্লোরি... কান-বার্লিন-ভেনিস ফেস্টিভ্যাল থেকে আগত সারা দুনিয়ার সাড়া-তোলা সব ছবি— এ বার দেখতে পাওয়া যাবে দমদম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। মূল উদ্যোক্তা ব্রাত্য বসু। বললেন ‘‘দমদমের সর্ব স্তরের মানুষজনের জন্যেই এ-উৎসব। কলকাতা-সহ এ-দেশের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রোৎসব হয়, সে দিক থেকে এ ধরনের ফেস্টিভ্যাল নতুন কিছু নয়। নতুনত্ব এখানেই, শহরেরই একটা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের মানুষকে আন্তর্জাতিক সিনেমার স্বাদ এনে দেওয়া, তাঁদের শিল্পচর্চার সুযোগ করে দেওয়া, এ জন্যে তাঁদের দূরে কোথাও যেতে হচ্ছে না।’’ সিনেমার হাত ধরে হালফিল সমাজ-সংস্কৃতির হদিস নিয়ে পৃথিবী এখন দমদমের দোরগোড়ায়, ৩-৬ ফেব্রুয়ারি দমদম রবীন্দ্রভবনে। উদ্বোধনী ছবি অনুমিতা দাশগুপ্তের ‘বহমান’, আজ সন্ধে সাড়ে ৬টায়। উদ্বোধন করবেন অনুরাগ কাশ্যপ।
কথাকার
‘‘যাঁদের হাতে বাংলা ছোটগল্প নতুন করে প্রাণবন্ত হয়েছে আপনি তাঁদের মধ্যে একজন।’’ অশ্রুকুমার সিকদার এক চিঠিতে লিখেছিলেন আলপনা ঘোষকে, তাঁর ‘অশোকজাতক’ উপন্যাসটি পড়ে অভিভূত হওয়ার কথাও সে-চিঠিতে জানিয়েছিলেন অশ্রুকুমার। আটাত্তর-ছোঁয়া আলপনা-কে নিয়ে ‘শহর’ পত্রিকার যে বিশেষ সংখ্যাটি বেরোলো, তাতে সম্পাদক অজিত রায়ের মন্তব্য: ‘‘বাংলা ভাষায় নতুন তল্লাট, নতুন ভূগোল, নতুন মানুষজন ও কলকারখানা, মফস্বলের কলোনি-জীবন, পাশাপাশি ঝাড়জঙ্গল পাহাড় অধিত্যকা পেশ করার বাবদ তাঁর সাহিত্যকৃতি অবশ্যই সবিশেষ মনোযোগের দাবিদার।’’ তাঁকে নিয়ে লিখেছেন দেবেশ রায় মীরাতুন নাহার যশোধরা রায়চৌধুরী গোপা দত্তভৌমিক রুশতী সেন প্রমুখ। লিখেছেন তাঁর পরিবারের মানুষরাও। আছে আলপনার নিজের গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ-কবিতা-অনুবাদ-চিঠিপত্র-কথাবার্তা, এবং বায়ো-বিবলিয়োগ্রাফি।
কবিতার মন
তাঁর সমস্ত অনুভূতিই তাঁর জীবনভর রচিত কবিতার মধ্যে সব থেকে দীর্ঘস্থায়ী স্রোত হয়ে থেকে গিয়েছে, আবার সে স্রোতের ভিতর গানের ধুয়োর মতো এসে পড়েছে নিসর্গের সৌন্দর্য। মফস্সলে শৈশব-বয়ঃসন্ধি পেরোনো সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর নিজের সঙ্গেই কথা বলতে থাকেন কবিতায়: ‘‘ইতিমধ্যে তার আশৈশবের পরিচিত শহরটা বদলাতে বদলাতে/ অপরিচিত হয়ে গেল নাকি অথচ স্মৃতির তুমুল বাদলে তার/ দিনগুলো ঝাপসা হয়ে আছে...’’। সিগনেট প্রেস থেকে সদ্য প্রকাশিত হল তাঁর আশ্চর্য কাব্যগ্রন্থটি, ভাঙা পথের রাঙা ধুলায়, যেখানে গদ্যের শরীরে কবিতার মন, জীবন সেখানে স্মৃতি আর মনে পড়াটাই ভ্রমণ। ‘‘রাতের শব্দহীন নিরবয়ব বিজনতা চোখ জুড়ে রয়েছে সে শৈশবের/ স্মৃতিলগ্ন একটা শব্দকে সারা দ্বিপ্রহরে কোথাও খুঁজে পায়নি... ’’। নিসর্গ, সমাজের নিত্য টানাপড়েন, বেঁচে থাকার অপরিহার্য অভিজ্ঞতাগুলি একটু একটু করে ফুটে উঠেছে গোটা কাব্যগ্রন্থ জুড়ে। শতাব্দী ব্যেপে এক বিরাট কালপর্বের ইতিহাস যেন তার বিষাদ আর আনন্দ নিয়ে উঠে এসেছে এ কাব্যগ্রন্থে... কবি হিসেবে সৌমিত্র অনতিশীতের হাওয়ায় দুলতে-থাকা বোগেনভেলিয়ার ফুল ঝরে পড়া দেখতে থাকেন, তাঁর ‘সুন্দরের কথা মনে পড়ে’।
টক ঝাল মিষ্টি
বাঙালি যখন ব্যবসা করে, তখন তা শুধু হিসেবখাতার নীরস যোগ-বিয়োগে আটকে থাকে না। তাঁরা সেই সাফল্যে সাহিত্যও মিশিয়ে দেন। কুন্তলীন, জবাকুসুম তেলের বিপুল আকর্ষণ, সুগন্ধির বিজ্ঞাপন ইত্যাদিতে এ কথার ভূরি ভূরি প্রমাণ। এমন কত নাম বাঙালির ইতিহাসে বিদ্যমান। তারই বুঝি একটি মুখরোচক চানাচুর। গত ৭০ বছর ধরে বাংলার স্বাদকোরকের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। টালিগঞ্জের স্টুডিয়োপাড়ায় আঁতুড়ঘর, তাই মুখরোচকের ভক্তলিস্টি কিংবদন্তিতে ছয়লাপ। অপরেশ লাহিড়ি, সত্যজিৎ রায়, উত্তমকুমার। মুখরোচকের বিখ্যাত ট্যাগ-লাইনটি নাকি উৎপল দত্তের উপহার। ‘মুখে দিলেই মেজাজ খুশ’। এ হেন বাঙালি প্রতিষ্ঠানের বিজয় অভিযান নিয়ে সাকসেস স্টোরি লিখেছেন অনিলাভ চট্টোপাধ্যায়। বইয়ের নাম গল্পটা মুখরোচক, প্রকাশক গ্রেমাইন্ড পাবলিকেশন। অনিলাভ সুসাংবাদিক, বাংলার খাদ্যরসিক এক পত্রিকার সম্পাদকও। তাঁর স্বাদু কলমে উঠে এসেছে জনপ্রিয় চানাচুর-ব্র্যান্ডের শতেক অজানা চিত্র। কোত্থেকে এল মুখরোচকের বিখ্যাত ম্যাজিক মশালা, কেমন করে ভোল বদলাল মুখরোচকের প্যাকেজিং, বিখ্যাত পাপড়ি-র আইডিয়া এল কী ভাবে। জানা গেল, মুখরোচকের মিষ্টির এমন সোয়াদের রহস্য।
রাতের কলকাতা
মেঘনাদ গুপ্ত ছদ্মনামে হেমেন্দ্রকুমার রায় রাতের কলকাতা (প্রথম প্রকাশ ১৯২৩) নামে একটি বই লিখেছিলেন। সেখানে কলকাতার নৈশ জীবনের বাস্তবচিত্র আঁকা হয়েছে। বোঝা যায়, লেখক লেখার খাতিরে বিপদের ঝুঁকি নিয়েও রাতের কলকাতার বিভিন্ন স্থান পরিভ্রমণ করে এই বই লিখেছিলেন। প্রায় একশো বছর আগের কলকাতার গণিকা জীবন, গুন্ডা আখড়া, চিনে পাড়া, নাট্যশালা, শ্মশান ইত্যাদি বিচিত্র অন্ধকার জগতের রোমহর্ষক অজানা সামাজিক ইতিহাস জানার মূল উৎস এখনও বটতলার চটুল বইগুলো। কিন্তু সে লেখা নিতান্ত সত্য-মিথ্যের মিশেলের ফিকশন। কিন্তু এই বইটি খাঁটি নন-ফিকশন। আর সেখানেই এই বইয়ের গুরুত্ব। প্রায় ফটোগ্রাফের মতো অতীত কলকাতার রাত্রি রহস্যকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন নিখুঁত ভাবে। অতীতের বইটিকে টীকা, অসংখ্য দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র ও অলঙ্করণ-সহ নব রূপে কলকাতার রাত্রি রহস্য নামে প্রকাশ করেছে বুকফার্ম (সম্পাদনা ও টীকা কৌশিক মজুমদার)। অন্য দিকে হেমেন্দ্রকুমার রায়ের যাবতীয় অপার্থিব গল্প দুই মলাটে নিয়ে এল বুক ফার্ম ভয় সমগ্র-তে (সম্পা: পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়), যেখানে প্রথম বারের জন্য গ্রন্থিত হয়েছে তাঁর এগারোটি হারিয়ে যাওয়া লেখা।
ধাতব সরস্বতী
হাওড়া কদমতলার লোহালক্কড়ের ব্যবসায়ী অনিলকুমার মজুমদার তাঁর চারুকলায় আগ্রহী মেজো ছেলে অরুণকুমারকে রবীন্দ্রভারতীতে ভর্তি করেছিলেন। অরুণ রবীন্দ্রভারতী থেকে ভিসুয়াল আর্টে ডক্টরেট করার পর প্রথমে সেখানেই লেকচারার, পরে হাওড়া সেন্ট টমাস চার্চ স্কুলে বরিষ্ঠ শিল্প শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। হাওড়ার জনপদে শৈশব তারুণ্যে ইতিউতি ঘোরার ফলে রাস্তাপাশের লোহালক্কড় ও কলকব্জা, কারখানার ফেলে দেওয়া লোহার ছাঁট বাবরিকে কাজে লাগিয়ে শিল্পসৃজনের বীজ বুঝি অরুণের মননে তখন অজান্তেই অঙ্কুরিত হয়েছিল। দেড় যুগ পর ধাতু ভাস্কর্যে সরস্বতী প্রতিমা সৃজনে মেটাল কোলাজ শিল্পী অরুণকুমার মজুমদার অতীত কীর্তিকে মনে করালেন। ২০০২-এ মধ্য হাওড়ার ইছাপুরের সংঘমিত্র ক্লাবে লোহালক্কড় শিকল ব্লেড যন্ত্রাংশ সহ হরেক ধাতবে সৃষ্টি দুর্গা প্রতিমা করে সকলকে অবাক করেছিলেন। এ বারে কদমতলা ভাই ভাই সংঘের ন’ফুটের সরস্বতী প্রতিমা গড়লেন হাতা খুন্তি বালতি চামচ লোহালক্কড়ের ছাঁট বাবরি গাড়ির যন্ত্রাংশ-সহ হরেক ধাতব জিনিস দিয়ে। প্রায় সাড়ে তিন বছরের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের ফসল এই মূর্তি।
বিজ্ঞানমনস্ক
বাংলা থেকে আফ্রিকা, ওড়িশা থেকে ইন্দোনেশিয়া অথবা বসু বিজ্ঞান মন্দির থেকে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট-এর গবেষণাগার পর্যন্ত ব্যাপ্ত ছিল যাঁর কাজের পরিধি সেই বিশিষ্ট বিজ্ঞানী রতনলাল ব্রহ্মচারীর স্মরণে গড়ে উঠেছে ‘রতনলাল ব্রহ্মচারী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’। তাঁর ছাত্রছাত্রী, সহকর্মী এবং গুণগ্রাহী মিলে দমদম ব্রতচারী নায়ক মণ্ডলীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সংস্থার প্রথম অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন ৯ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৪টেয়। দমদমের কিশোর ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হল ঘরে। প্রয়াত বিজ্ঞানীর ৮৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আছে বছর ব্যাপী কর্মসূচি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞানমনস্কতা ও পরিবেশ সচেতনতা জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে নানা পরিকল্পনার কথা বলবেন বিজ্ঞানীর প্রাক্তন সহকর্মী তথা আইএসআই-এর অধ্যাপক সব্যসাচী ভট্টাচার্য। সংস্থার তরফে রতনলাল ব্রহ্মচারীকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে আর্কাইভ— সে প্রসঙ্গে বলবেন কিশোর শতপথী। স্মৃতিচারণ করবেন প্রবীর সরকার। প্রদর্শিত হবে বিজ্ঞানীকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র।
দীপানোভা
সারা বিশ্বে যা ডেথ ভল্ট নামে পরিচিত, ভয়ঙ্কর সুন্দর সেই প্রোদুনোভা ভল্টটাই অনায়াসে দিতে পারেন ভারতের দীপা কর্মকার। তাই তিনি জিমনাস্টিক্সের ওয়ান্ডার উয়োম্যান। আগরতলার এই বাঙালিনি রিয়ো অলিম্পিক্সে চতুর্থ হওয়ার পর দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে নতুন পাতা জুড়ে দিয়েছেন। মানুষকে নতুন করে উদ্বেল করেছেন জিমন্যাস্টিকস নিয়ে। দীপাকে নিয়ে লেখক-সাংবাদিক সুভেন রাহার বই দীপানোভা (প্রকাশক: সিটাডেল)। দীপার জীবন সংগ্রাম, কঠিন লড়াই, কেরিয়ারের নানা মোড়, সাফল্য, যন্ত্রণা, চোটের সঙ্গে লড়াই, কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীর সাধনা— সবটাই আদতে ‘ফরওয়ার্ড শর্ট লেগ’ থেকে দেখছেন দীপার পিতৃতুল্য সুভেন। সাবলীল ভাষায় দীপার জীবন প্রবাহ তুলে ধরেছেন বইতে। পঁচিশটি অধ্যায়ে কিছু বিতর্কিত বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে, রয়েছে অজানা খুঁটিনাটি। ‘ভিলেজের সেই দিনগুলি’ পর্বে অলিম্পিকের ঘটনাবহুল ক্ষণগুলির উত্তাপ আবার স্পর্শ করা যায় যেন। দর্শনীয় ছবি অসংখ্য। দীপার খেলোয়াড় জীবনের সেরা বিন্দুগুলির বিবরণ আছে। দীপার সঙ্গে সাক্ষাৎকার ও র্যাপিড ফায়ার অংশে তাঁকে আরও কাছ থেকে চিনে নেওয়া যায়। ভূমিকা লিখেছেন মাউন্ট এভারেস্ট বিজয়িনী বাচেন্দ্রী পাল।
/polopoly_fs/1.1103668.1580659210!/image/image.jpg
গোয়েন্দাপীঠ
‘‘যে-সাতটি কাহিনি এই বইয়ে স্থান পেয়েছে, তার প্রত্যেকটিই চাঞ্চল্যকর।’’ লিখছেন অনুজ শর্মা, কলকাতার নগরপাল— সুপ্রতিম সরকারের চতুর্থ বইয়ের মুখবন্ধে। কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সুপ্রতিম এর আগে লালবাজার নিয়ে তিনটি বই লিখেছেন, এ বার তার কলমে পাওয়া গেল আবার গোয়েন্দাপীঠ/ শ্বাসরোধী সাত কাহিনির সাতসতেরো (আনন্দ)। তবে এ বার আর তাঁর বই শুধু লালবাজারের চৌহদ্দিতে সীমাবদ্ধ নয়, কলকাতা পুলিশের দু’টি মামলার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশেরও কয়েকটি বিখ্যাত মামলার নেপথ্যকাহিনি এই বইয়ে স্থান পেয়েছে। নোয়াপাড়ার সুদীপা পাল থেকে দমদমের সজল বারুই মামলা রয়েছে তার মধ্যে। স্রেফ ঘটনার বিবরণ বা তদন্তের খুঁটিনাটি নয়, বইয়ের পাতায় পাতায় রয়েছে অপরাধ-মনস্তত্ত্বের উন্মোচন। কল্পনার গোয়েন্দাকাহিনিতে লেখকের যে স্বাধীনতা থাকে, বাস্তবের কাহিনি নিয়ে লেখায় তা থাকে না। এই সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সুপ্রতিম কাহিনি বুনেছেন সাবলীল দক্ষতায়, তাকে করে তুলেছেন মনোগ্রাহী। এ বই রহস্যরসিক পাঠকের।
ঐতিহ্য সংরক্ষণ
কলকাতার ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করতে হলে কলকাতার ঐতিহ্যকে সংরক্ষিত করতে হবে এবং মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করতে হবে সচেতনতা। এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রয়াত ঐতিহাসিক নিশীথরঞ্জন রায় শুরু করেছিলেন ‘হেরিটেজ-রক্ষা’ আন্দোলন। গড়ে তুলেছিলেন ‘সোসাইটি ফর দ্য প্রিজারভেশন অব আর্কাইভাল মেটিরিয়ালস অ্যান্ড মনুমেন্টস অব ক্যালকাটা’-র মতো প্রতিষ্ঠান। মানুষের মধ্যে কলকাতার ঐতিহ্য সম্বন্ধে আগ্রহ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘সোসাইটি’ যে সব কর্মসূচি বাস্তবায়িত করে তার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতার ঐতিহ্য-কেন্দ্রিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিভিন্ন সময় প্রদর্শনীর আয়োজন। প্রদর্শনীগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে কলকাতার ঐতিহ্য বিষয়ে উৎসাহ জাগাতে সহায়ক হয়েছে। এমনকি সাড়া পড়েছে সরকারি তরফেও—তৈরি হয়েছে হেরিটেজ সংরক্ষণ আইন। সোসাইটির এ বারের প্রদর্শনীর বিষয়: ‘কলকাতার বাণিজ্যের উত্তরাধিকার’। গগনেন্দ্র প্রদর্শশালা, ৬-৮ ফেব্রুয়ারি, প্রতি দিন ২-৮টা।
খেলাঘর
নরওয়ের হেনরিক ইবসেনের নরওয়েজিয়ান ভাষায় লেখা নাটক ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয় ‘আ ডলস হাউজ়’ নামে। ঊনবিংশ শতাব্দীর দাম্পত্য ও সামাজিক বিধিব্যবস্থার সমালোচনার কারণে বিখ্যাত হয়ে ওঠে নাটকটি। পঞ্চাশের দশকে শম্ভু মিত্রের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয় বহুরূপী’র স্মরণীয় প্রযোজনা ‘পুতুলখেলা’। নাটকটি আবার মঞ্চস্থ করা শুরু হয়েছে গত বছর মে মাস থেকে ‘খেলাঘর’ নামে, ‘প্রাচ্য’-র প্রযোজনায় বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায়। শম্ভুবাবুর শিল্পিত পথ ধরেই বিপ্লব নতুন ভাবে মঞ্চায়নের সময় মনে রেখেছিলেন ‘আমাদের মধ্যবিত্ত যাপনে নারী-পুরুষের ক্ষমতা বিন্যাসের অসাম্যকে ঢেকে রাখার শিক্ষিত বুদ্ধিবাদী সুযোগসন্ধানী প্রয়াসকে’। আমেরিকার বাল্টিমোর থেকে বাংলাদেশের যশোর হয়ে বেঙ্গালুরু ছুঁয়ে মোট ২৬টি উপস্থাপনার পর আবার কলকাতায় ‘খেলাঘর’ ফিরে আসছে ৯ ফেব্রুয়ারি মধুসূদন মঞ্চে সন্ধে সাড়ে ৬ টায়।
এ বার ক্রেয়নে
শিল্পী কে জি সুব্রহ্মণ্যনের জন্ম ৫ ফেব্রুয়ারি। তাঁর জন্মমাসে দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাসে আয়োজিত প্রদর্শনী তাঁর স্মরণেই উৎসর্গ করা হয়। এ-বছর তাঁকে উৎসর্গীকৃত প্রদর্শনীটি শিল্পী লালুপ্রসাদ সাউয়ের, শিরোনাম ‘মাই প্লে উইদ ক্রেয়নস’। চেনা পথকে নতুন করে দেখেছেন শিল্পী, আর এই পথে ক্রেয়ন তাঁর সঙ্গী। মোট ৪৫টি ছবি নিয়ে এই প্রদর্শনী, যার সবক’টিই ক্রেয়ন মাধ্যমে। যে ‘বাবু-বিবি’ এত দিন ছিল মূলত টেম্পারায়, এ বার তাদের ফুটে ওঠা ক্রেয়নে। কোথাও আবার তাঁর চিত্রিত চেনা মুখ অচেনা নতুন হয়ে দেখা দিয়েছে। শিল্পীর জন্ম সিউড়িতে, সেখানকার মাটির লাল রং— তাঁর কথায় ‘‘আমার জন্মভূমির সেই রং-ই ফিরে এসেছে এসব কাজে।’’ উদ্বোধন ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৬টায়, কে জি সুব্রহ্মণ্যন-কন্যা উমা পদ্মনাভনের হাতে। চলবে ১ মার্চ অবধি (মঙ্গলবার বাদে)।
বিসর্জন
‘কে বলিল হত্যাকাণ্ড পাপ!’ বা ‘এ জগৎ মহা হত্যাশালা।’... কে না জানে, এমন বাক্যের অধিকারী একমাত্র রঘুপতি-ই। রবীন্দ্রনাথের ‘বিসর্জন’ নাটকটি আজ এই মুহূর্তেও অসম্ভব প্রাসঙ্গিক, গোটা ভারত জুড়ে যা ঘটে চলেছে, তাতে রঘুপতি-র সংলাপই প্রতিনিয়ত আহত করে আমাদের চেতনাকে: ‘চলেছে নিখিল বিশ্ব হত্যার তাড়নে’। তাই কবির এই নাটকটিকেই আশ্রয় করে নতুন নাটক মঞ্চস্থ করেছেন অঞ্জন দত্ত, নাম: ‘রঘুপতি’। বললেন ‘‘মানবধর্ম নয়, নিছক ধর্ম বা ধর্মের নিগড়ই হয়ে উঠেছে এখন এ-দেশের চালিকা শক্তি। এই ধর্ম বা ধর্মের সংগঠনই দেশ শাসন করে চলেছে, শুধু প্রজাকেই নয়, রাজাকেও ওই ধর্ম মেনেই চলতে হচ্ছে। রঘুপতি-ই ওই ধর্মের আধার, তার নামেই তাই আমার নাটকের নাম।’’ রঘুপতি-র ভূমিকায় স্বয়ং অঞ্জন (উপরের ছবি)। আসন্ন অভিনয় ৮ ফেব্রুয়ারি জ্ঞানমঞ্চে সন্ধে ৭টায়।
কলকাতা কথকতা
দেশবিদেশের কলকাতাপ্রেমী মানুষ আর কলকাতার বিশিষ্ট সংগ্রাহকরা মিলে জীবন্ত করে তুলেছেন ‘কলকাতা কথকতা’ নামে একটি আসরকে। ‘হারিয়ে যাওয়া অতীতের গল্প’ শোনাতে তাঁরা একটি পত্রিকার কথা ভেবেছিলেন। প্রকাশিত হয়েছে ‘কলকাতা কথকতা’ নামে সেই পত্রিকা। শুরুতেই অমিত রায়ের তথ্যবহুল লেখা ‘কলকাতার পুরনো বই ব্যবসার ইতিবৃত্ত’। কলকাতায় বই কেনাবেচার আদি পর্বের উজ্জ্বল বৃত্তান্ত। কত বিচিত্র বিষয়কে দুই মলাটে নিয়ে এসেছেন সম্পাদক চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়— ব্যারাকপুরের ইতিকথা, দশাবতার তাস, বাংলায় রামায়ণ চর্চা, গুরুসদয় সংগ্রহশালা, খেলার পুতুল, চুক্তি শ্রমিকদের কালাপানি যাত্রা, কলকাতা ও বাংলার দেশলাই, সঙ্গে পরিমল রায় ও অন্য অনেক চেনা-অচেনা সংগ্রাহকের কথা, তাঁদের সংগ্রহের নানা ছবি। দুর্লভ ছবি আর পুরনো বিজ্ঞাপন এই পত্রিকার পাতায় পাতায়। চমৎকার পরিকল্পনা, এখন প্রয়োজন এ কাজটি আগামীতেও এগিয়ে নিয়ে চলা।
সন্দীপনের কবিতা
এক সময় তিনি লিখেছিলেন ‘‘ছোট গল্প ও কবিতা কাছাকাছি চলে আসছে নাকি? আমি খবর রাখি না। স্টেটসম্যান পড়া আমি ছেড়ে দিয়েছি।’’ তিনি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়। ন্যারেটিভ ভেঙে বাংলা গল্প উপন্যাসের আঙ্গিকে দিয়েছিলেন নতুন মাত্রা। বিশ্বাস করতেন ভাষা ব্যবহারই আধুনিক সাহিত্য। ফর্ম নয়। ভাষার পিছনে পিছনে আসবে ফর্ম। গল্প উপন্যাস লিখেছেন সেই বিশ্বাসে বিশ্বস্ত থেকে। লিখেছেন টুকরো গদ্য, পোলেমিকস। এ সব পাওয়া যায় তাঁর রচনা সংগ্রহে। কিন্তু তাঁর বেশি প্রিয় ছিল কবিতা। বলতেন, শুধু মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পড়লে লিখতে পারতাম না। জীবনানন্দ দাশ পড়ে তবেই লিখতে পেরেছি। কবিতা কিছু লিখেওছিলেন লিটল ম্যাগাজিনের পাতায়। সে সব হয়ে গিয়েছিল দুষ্প্রাপ্য। এই প্রথম তাঁর কবিতা বিভিন্ন পত্রিকা থেকে উদ্ধার করে ‘ভালো বই’ প্রকাশনা একটি ক্ষীণকায় হলেও ক্ষুরধার গ্রন্থ ঈশ্বর ও জ্যোৎস্না প্রকাশ করেছে।
জন্মশতবর্ষে ব্যতিক্রমী শিল্পীর প্রদর্শনী
প্রতি দিন মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের বাসস্থান থেকে সরকারি আর্ট স্কুল পর্যন্ত হেঁটে যেতে যেতে শহরের দৈনন্দিন জীবনের চলমান মুহূর্ত তাঁকে প্রভাবিত করত। পরে তাঁর কাজে বার বার ফুটে উঠেছিল দৈনন্দিন জীবনবোধ, টানাপড়েন কিংবা সংগ্রামের নানা জীবন্ত মুহূর্ত। এ দেশে ছাপচিত্রের ইতিহাসে তিনি এক কিংবদন্তি। হরেন দাসের জন্ম ১৯২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অধুনা বাংলাদেশের দিনাজপুরের এক সাধারণ পরিবারে। মাতৃগর্ভে থাকাকালীনই তাঁর পিতৃবিয়োগ ঘটে। জন্মের পরেই মা-ও মারা যান। তাঁকে লালন পালন করেন কাকা বলরাম দাস ও কাকিমা। ছোট থেকেই ছিল ছবি আঁকার নেশা। তাই কখনও স্লেটে, কখনও মাটির দেওয়ালে কখনও বা মেঝেতে চলত ছবি আঁকা। স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পরে হরেন দাসকে পাঠানো হয় সরকারি আর্ট স্কুলে। শুরু হয় জীবন সংগ্রাম। সেই সময় একটি লন্ড্রিতে কাজ করার বিনিময়ে রাতে সেখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছিলেন। এ ছাড়া দর্জির দোকানে তৈরি জামায় বোতাম বসানোর কাজও করতেন। দেশ ভাগের পরে হরেন দাস কলকাতায় এসে সরকারি আর্ট স্কুলে গ্রাফিক্স বিভাগে যোগ দেন। পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মান। ষাটের দশক থেকে ভারতীয় শিল্পকলায় ছাপচিত্রের নতুন উন্মেষ দেখে যায়। সে সময় যে ক’জন শিল্পীর কাজ ব্যতিক্রমী, তাঁদের অন্যতম হরেন দাস। শুধু উড এনগ্রেভিং কিংবা ছাপাই ছবি নয়, জল রং ও তেল রঙে ছবি আঁকায় তিনি ছিলেন বিশেষ পারদর্শী। তবু উড এনগ্রেভিং ছিল তাঁর ধ্যানজ্ঞান। শিল্পীর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ৩০ জানুয়ারি থেকে অ্যাকাডেমির সেন্ট্রাল গ্যালারিতে শুরু হয়েছে এক প্রদর্শনী। চলবে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। থাকছে শিল্পীর প্রায় ৬০টি কাজ। প্রতি দিন ১২-৮টা। সঙ্গে তাঁর ‘রামলীলা’ ছবির অংশ।