আধুনিক অনেক ভালোগল্প সম্বন্ধে আজও কোন মত দিই নি— সেই অপরাধ হল নিবিড়— যথা বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’। ‘পথের পাঁচালী’র আখ্যানটি অত্যন্ত দেশী।’’ ‘পরিচয়’ পত্রিকায় লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ও দিকে, স্ত্রী রমাকে বিভূতিভূষণ লিখছেন, ‘‘যখন আমি ভাগলপুরে কাজ করি, তখনও বারাকপুরের জন্য মন কেমন করতো। তা থেকেই বোধহয় পথের পাঁচালীর উৎপত্তি।’’ বাংলা সাহিত্য যখন কল্লোল-স্রোতে প্লাবিত, তখন বিভূতিভূষণ মুখ ফিরিয়ে তাকিয়েছিলেন গভীর আরণ্যকের দিকে। সেখানেই তিনি খুঁজে পান দুই কিশোর-কিশোরী, অপু-দুর্গাকে। বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গেই যেন একাত্ম হয়ে গেল এই উপন্যাস। ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায় ১৯২৯ সালে এর প্রকাশ, চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ১৯৫৫-য়। কিন্তু এই দুই মুক্তির পথ এত সহজ ছিল না! অপুর পথচলা নির্ভর এই সাহিত্যের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে আছে বহু অজানা দিক। বিভূতিভূষণ-পুত্র তারাদাসের প্রচেষ্টায় ‘অপু ত্রয়ী’র শেষ খণ্ড রচনা কিংবা শেষ জীবনে বিভূতিভূষণ কর্তৃক রমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘সর্বজয়া’ নামে অভিহিত করা— এ সবই রয়েছে সেই তালিকায়। অন্য দিকে, সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রটি স্থায়ী হয়েছে বিশ্ব আঙিনায়। কিন্তু প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালেই চলে গিয়েছেন অপু, দুর্গা (ছোট এবং বড়), কাজল-সহ ‘অপু ত্রয়ী’র অনেক শিল্পীই। এ বছর ‘পথের পাঁচালী’ চলচ্চিত্রের মুক্তির ৬৪ এবং রচনা প্রকাশের ৯০ বছর। আজকের দিনেই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল বসুশ্রী, বীণা, ছায়া এবং শ্রী-তে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা স্নাতকোত্তরের ছাত্র সৃজন দে সরকার বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রামাণিক গ্রন্থাদি, দেখা-অদেখা ছবি, স্বাক্ষর, পোস্টার, ডাকটিকিট-সহ নানা গুণিজনের এই উপন্যাস এবং চলচ্চিত্র সম্পর্কে স্মৃতিচারণ সংগ্রহ করেছেন। এই সমস্ত বিষয় নিয়েই গোর্কি সদনে আয়োজিত হয়েছে একটি ভিন্ন স্বাদের প্রদর্শনী ‘পথের পাঁচালী: সাহিত্যে, চলচ্চিত্রে’। এ বছর ‘সর্বজয়া’ করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকী। এই প্রদর্শনীতে বিশেষ স্মরণে থাকছেন তিনিও। ২৭ অগস্ট সন্ধে ৬টায় এই অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন পবিত্র সরকার। উদ্যাপিত হবে আরও তিন পরিচালকের কাজ। ‘পথের পাঁচালী’ ছবিটির সঙ্গেই পরের চার দিনে প্রদর্শিত হবে ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন ও গৌতম ঘোষের চলচ্চিত্র ‘অযান্ত্রিক’, ‘ভুবন সোম’ এবং ‘মা ভূমি’। আইজ়েনস্টাইন সিনে ক্লাবের পক্ষে গৌতম ঘোষ জানালেন, ওদের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রদর্শনীটি চলবে ৩১ অগস্ট, ২-৮টা পর্যন্ত। সন্দীপ রায় এবং রায় পরিবারের পক্ষ থেকে এসেছে সহায়তা। সঙ্গে ‘অপু’ সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবব্রত ঘোষ, পার্থ দাশগুপ্ত, মলয়চন্দন সাহা, প্রবাল বড়াল, পৌষালী হালদার এবং শুভম ভট্টাচার্য-সহ বিশিষ্ট শিল্পীদের চোখে ‘পথের পাঁচালী’র দৃশ্যায়ন। সঙ্গে ‘পথের পাঁচালী’তে ছোট দুর্গা রুন্কি বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভাস্কর্যের একক
কলকাতার সরকারি আর্ট কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বডোদরার এমএস ইউনিভার্সিটিতে প্রদোষ দাশগুপ্ত ও শঙ্খ চৌধুরীর কাছে তাঁর ভাস্কর্যকলার শিক্ষা। ইউরোপে তিনি আলবার্তো গিয়াকোমেত্তি, হেনরি মুরের সংস্পর্শে আসেন। শর্বরী রায়চৌধুরী (১৯৩৩-২০১২) পরে বিশ্বভারতীর ভাস্কর্য বিভাগে যোগ দেন। তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রসগ্রাহী ছিলেন, উস্তাদ আলি আকবর খান (সঙ্গের ছবি) বা সিদ্ধেশ্বরী দেবীর প্রতিকৃতি ভাস্কর্যে সেই আন্তঃসম্পর্ক প্রতিফলিত। এ বার হিন্দুস্থান পার্কের আকার প্রকার গ্যালারিতে শুরু হয়েছে তাঁর একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী ‘স্কাল্পচার অ্যাজ় বডি ইন দ্য মিরর অব ডিজ়ায়ার’ (চলবে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত), কিউরেটর আর শিবকুমার।
ধর্ম ও রাজনীতি
১৯৪৭ সালের ৩ জুন ঘোষিত হল বড়লাট মাউন্টব্যাটেনের দেশভাগ-পরিকল্পনা। তাঁর আগে-পরে মহাত্মা গাঁধী কী ভাবে ভারতের বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্যের সূত্র খুঁজেছিলেন, কী ভাবে তিনি দাঙ্গাবিধ্বস্ত নোয়াখালি, বিহার, কলকাতা ও দিল্লিতে শান্তি ফেরাতে ঐকান্তিক চেষ্টা করেছেন, তাই নিয়েই আজ ২৬ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে বলবেন ইতিহাসবিদ সুগত বসু। আধুনিক ভারতের ইতিহাসের সেই পালাবদলের মাহেন্দ্রক্ষণে ধর্ম ও রাজনীতির জটিল আন্তঃসম্পর্ক উন্মোচিত হবে তাঁর আলোচনায়। আয়োজক ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল।
ফুটবলের জনক
ভারতীয় হিসেবে ফুটবলে প্রথম কিক-অফ করেন তিনি। তিনিই প্রথম এই দেশে ভারতীয়দের ফুটবল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। ‘ভারতীয় ফুটবলের জনক’ নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী (১৮৬৯-১৯৪০) আসলে খেলাকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন সামাজিক সাম্যের হাতিয়ার হিসেবে। তাই ফুটবলের সঙ্গে ক্রিকেট, রাগবি, হকি, টেনিসের প্রসারেও উদ্যোগী হয়েছিলেন। তাঁর উৎসাহে প্রতিষ্ঠিত হয় আইএফএ, আবার কলকাতায় প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচটিরও আয়োজক তিনিই। বর্ণিল এই চরিত্রটির সার্ধশতবর্ষ স্মরণে তাঁকে নিয়ে বলবেন কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ অগস্ট সন্ধে ৬টায়, জীবনানন্দ সভাঘরে এই সভার দ্বিতীয় পর্বের বিষয় ‘বাংলা ক্রীড়াসাহিত্যের উদ্দেশ্য-বিধেয়’, আলোচনায় বিশ্বজিৎ রায়। আয়োজক অহর্নিশ পত্রিকা।
বাঙালি সত্তা
‘বিয়িং আ বেঙ্গলি’। বাংলায় অনুবাদ করলে বাক্যাংশটা ঠিক কী দাঁড়াবে? বাঙালি হওয়া কাকে বলে? না কি, একটা জীবন জুড়ে বাঙালি হলে সেই জীবনটা কী রকম হয়? ২৭ অগস্ট সন্ধে ৬টা থেকে রবীন্দ্রসদনে এই প্রসঙ্গেই বলবেন অমর্ত্য সেন। ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ়ের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে। অমর্ত্য সেন পরিচিতির বহুত্বে বিশ্বাস করেন— বাঙালি সত্তাকেও কি তিনি বহু রূপেই দেখেন? ধর্ম, বর্ণ, বিত্ত কি বাঙালি সত্তাকে ভেঙে দেয়, না কি বাঙালিত্ব এমনই কিছু— চর্যাপদ থেকে শঙ্খ ঘোষ অবধি যার বিস্তার— যা এই পরিচিতিগুলোকে ছাপিয়ে যেতে পারে? তাঁর বক্তৃতায় এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে কলকাতা।
প্রণবেন্দু সন্ধ্যা
তিনি বিশ্বাস করতেন, কবিতা হল ‘‘দ্য সোশ্যাল অ্যাক্ট অব আ সলিটারি পার্সন।’’ কবি প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৩৭-২০০৭) ছিলেন যাদবপুরে তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক, লিখেছেন ধারালো মরমি অথচ অন্তঃসলিলা অজস্র কবিতা। এক ঋতু, সদর স্ট্রিটের বারান্দা কিংবা মানুষের দিকে, নিঃশব্দ শিকড়, রৌদ্রের নখরে প্রভৃতি তাঁর কাব্যগ্রন্থ। জীবৎকালে কোনও সারস্বত প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি পাননি। তবে হৃদয়বান পাঠক যে তাঁকে অবিরত স্পর্শ করে থেকেছেন তারই প্রমাণ উলুখড় কোমল গান্ধার ও দশমিক এই তিন লিটল ম্যাগাজিনের আগ্রহে অনুষ্ঠেয় ‘প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত সন্ধ্যা’। স্মারক বক্তৃতায় সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, প্রকাশ পাবে প্রণবেন্দুর গদ্যসংগ্রহ। আছে কবিতাপাঠ, আলোচনা। ২৬ অগস্ট সন্ধে ৬টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে।
সৌভ্রাতৃত্ব দিবস
চার পাশের অসহিষ্ণু পরিবেশের বিপরীতে দাঁড়িয়ে সমরেশ বসুর ছোটগল্প ‘আদাব’ অবলম্বনে অভিনীত হতে চলেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নাটক ‘বহমান সেই রাত’। চিনে প্রেরিত ভারতীয় মেডিক্যাল মিশন যাত্রার ৮১তম বর্ষ উপলক্ষেই এই নাটক, ডা. দ্বারকানাথ কোটনিস স্মৃতিরক্ষা কমিটির উদ্যোগে। ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫.১৫-তে রামমোহন লাইব্রেরি হলে। দিনটি পালিত হবে ‘সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্তর্জাতিক সৌভ্রাতৃত্ব উদ্যাপন দিবস’ হিসেবে। আছে আলোচনাও, রাজশেখর বসু বলবেন ‘শতবর্ষের আলোয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বর্বরোচিত জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড’ বিষয়ে।
শাশ্বত বাংলা
জীবনীগ্রন্থ রচনায় অধ্যাপক বিজিতকুমার দত্ত ছিলেন আশ্চর্য স্বচ্ছন্দ। চৈতন্যদেবের জন্মের পাঁচশো বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি রচনা করেন চৈতন্যজীবনকথা। আবার রামমোহন রাজেন্দ্রলাল ও বঙ্কিমচন্দ্রের জীবনীও লিখেছেন তিনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি সঙ্কলন করেছেন বিদ্যার্থী অভিধান। তাঁর স্মরণে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রবর্তন করে বিজিতকুমার দত্ত স্মারক বক্তৃতা। এ বার ২৮ অগস্ট সন্ধে ৬টায় আকাদেমি সভাঘরে ‘শাশ্বত বাংলা’ শীর্ষকে বলবেন রণবীর সমাদ্দার। সভামুখ্য জয় গোস্বামী।
অন্য যামিনী রায়
১৯২৯ সাল। মুকুল দে তখন সরকারি আর্ট স্কুলের অধ্যক্ষ। যামিনী রায়ের একক প্রদর্শনী আয়োজিত হল সেখানে, আর এতেই তিনি প্রথম বাংলার পটভিত্তিক চিত্রকলা উপস্থাপিত করেন। তাঁর ছবি সবারই দেখা, কিন্তু ড্রয়িং মূলত অদেখা। এ বার সাউথ সিটি মল-এর বিপরীতে ‘গ্যালারি চারুবাসনা’য় দেখা যাচ্ছে যামিনী রায়ের ড্রয়িংয়ের এক প্রদর্শনী, কিউরেটর জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। এটি চলবে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ২-৮টা। এ যেন অন্য যামিনী রায়, যেখানে তিনি তাঁর পরিচিত ছবির আঁটসাঁট আঙ্গিকের অর্গলমুক্ত, অনেক স্বাধীন আর গতিময়। উপরে তারই একটি।
দেবজ্যোতির ছবি
‘‘যে গান আমি স্বরলিপির ছকে বেঁধে উঠতে পারি না, তাকেই আমি আমার ছবিতে প্রকাশ করি।’’ সঙ্গীতস্রষ্টা ও পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র সুপরিচিত। কিন্তু শিল্পী দেবজ্যোতি? ২০১২-র পর এ বার ১৩০টি ছবি আর ৫টি ইনস্টলেশন নিয়ে তাঁর একক প্রদর্শনী ‘শ্যাডোজ় অব সংস’ শুরু হচ্ছে ৩০ অগস্ট দ্য হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্টস সেন্টারে, চলবে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সঙ্গীতকে যে আলাদা আলাদা কুঠুরিতে বন্ধ করে রাখা যায় না, তা ছবিতে ফুটিয়েছেন দেবজ্যোতি। নীচে তারই একটি ছবি।
রাজনীতির দিশা
বিশ্বজুড়ে এখন জনপ্রিয়তাবাদী (পপুলিস্ট) রাজনীতির জোয়ার। ইংল্যান্ডের জেরেমি করবিন, ফ্রান্সের মারিন ল পেন, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প, হাঙ্গেরির ভিক্টর ওর্বান এবং তুরস্কের এর্দোয়ান, এঁরা সবাই এই রাজনীতিকেই আঁকড়ে ধরেছেন। এর লক্ষণ উগ্রজাতীয়তাবাদী মানসিকতা, বহিরাগত বা শরণার্থীকে দেশের শত্রু ভাবা এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা। ভারতেও মোদী, কেজরীবাল বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো জনপ্রিয়তাবাদী নেতাদেরই জয়জয়কার। এর গতিপ্রকৃতি বুঝতে কলকাতা রিসার্চ গ্রুপ (সিআরজি) ৩১ অগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর রোজ়া লুক্সেমবুর্গ স্টিফটুং-এর সহায়তায় সল্টলেকের সোজোর্ন হোটেলে আয়োজন করেছে ‘পপুলিজ়ম অ্যান্ড পপুলিস্ট পলিসিজ় ইন সাউথ এশিয়া’ আলোচনাচক্র। প্রথম দিন মৌলানা ভাসানি প্রসঙ্গে বলবেন সৈয়দ বদরুল আহসান এবং বদ্রিনারায়ণ তিওয়ারি বলবেন জাতপাতকেন্দ্রিক রাজনীতি নিয়ে।
রোমহর্ষক মিশর
ইংরেজি ভাষায় মিশরের ইতিহাস নিয়ে অজস্র বই থাকলেও বাংলা সাহিত্যের প্রচলিত ঘরানা থেকে আলাদা এক ধারায় সেই অভাব মেটালেন লন্ডনপ্রবাসী শল্যচিকিৎসক অনির্বাণ ঘোষ, তাঁর হায়রোগ্লিফের দেশে বইতে (বুক ফার্ম)। ইতিহাসের শুকনো রেফারেন্স বই নয়, টানটান স্বাদু গল্পের মোড়কে পরিবেশনা এই বইয়ের সম্পদ। পিরামিড, মমি, স্ফিংস, ফারাও, মিশরীয় মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে হায়রোগ্লিফিক শেখা ও গুপ্তধন আবিষ্কারের নানা রোমহর্ষক আখ্যান। পাতায় পাতায় শ’আড়াই সুমুদ্রিত ছবি। আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ৩১ অগস্ট সন্ধে ৬টায় রিড বেঙ্গলি বুক স্টোরে।
দুই দশক
কুড়ি বছর অশোকনগর নাট্যমুখ-এর। ‘‘একটা যাপন ভেসে ওঠে চোখের সামনে... কত ডেডিকেশন, পরিশ্রম, অবহেলা, নাক-কুঁচকানি... তবু ভাবনার রূপায়ণে আমরা সক্রিয় এবং ফোকাসড বরাবর!’’ জানালেন কর্ণধার অভি চক্রবর্তী। ১ সেপ্টেম্বর অশোকনগর শহিদ সদনে তাদের রেপার্টরির চারটি নাটক। চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৮.৩০। উদ্বোধনে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র ডিরেক্টর সুরেশ শর্মা। মঞ্চে থাকবেন অমর মিত্র প্রবীর গুহ সুব্রত ঘোষ প্রমুখ। বর্ষীয়ান অশোক মুখোপাধ্যায়কে জীবনকৃতি সম্মান প্রদানের পাশাপাশি ব্রাত্য বসুকে অর্পণ করা হবে দ্রোণাচার্য সম্মান। সম্মানিত হবেন পৌলমী বসুও। থাকছে সঙ্গীতা চক্রবর্তী অভিনীত ও সত্যব্রত রাউত নির্দেশিত ‘গান্ধারী’ এবং শেষে অভি চক্রবর্তীর নির্দেশনায় ‘লোহার দাম’।
মেদেয়া
‘‘যেহেতু আমার এতদিনকার অভিনীত চরিত্রগুলির মতো একেবারেই নয় চরিত্রটি, একটু ভয়ই পেয়েছিলাম প্রথমে, পরিচালক শুধু সাহসই জোগাননি, উন্মোচন করে দিয়েছেন চরিত্রটির মনের আনাচকানাচ, জটিলতা। সন্তানহত্যা নয়, বরং রাষ্ট্রের মানুষের চিরকালীন প্রতিবাদ খুঁজে পেয়েছি আমার চরিত্রটার মধ্যে।’’ বলছিলেন সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়, নতুন প্রযোজনা ‘মেদেয়া’ সম্পর্কে, নামভূমিকায় আছেন তিনিই (সঙ্গের ছবি)। তথাগত-ধর্মাশোক-চতুষ্পাপ ইত্যাদির ধারাবাহিকতায় গ্রিক পুরাণ থেকে ইউরিপিদিস-কৃত কাঠামোয় রঙ্গপট-এর এ বারের ধ্রুপদী নাট্য। রতনকুমার দাশের ভাষান্তরটির পরিমার্জনা-পরিকল্পনা-প্রয়োগে তপনজ্যোতি, নির্দেশক হিসেবে জানালেন তাঁর ভাষ্য: ‘‘এই প্রযোজনায় বড় হয়ে উঠেছে রাষ্ট্র ও এককের সংঘাত, দেশ ও দেশপ্রেমের সংজ্ঞা, শরণার্থী-নাগরিকত্ব-মানুষের পরিচয়হীনতা, জন-জাতি-ধর্মের গোপন সংঘর্ষ।’’ প্রথম দু’টি অভিনয় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে, ১ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টে ও সন্ধে সাড়ে ৬টায়।