Kolkata Karcha

শিশুহাতে যার সার্থকতা 

গানটির জনপ্রিয়তা লোকাল ট্রেনের শিল্পী থেকে বাংলা ব্যান্ডের গায়নে, মেলায়, ঘরোয়া আসরেও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২২ ০৮:২৬
Share:

বিকেল হতেই কচি কচি হাত টেনে নিয়ে যায় পাতাবাহার দিয়ে সাজিয়ে। অমসৃণ রাস্তায় এক বার গড়িয়ে পড়ে মূর্তি তো আর এক বার পিছলে যায় চিনি-কলার ছোট্ট থালা বা জল-ভরা গ্লাস। তবু উৎসাহের ঘাটতি নেই। খেলনা রথে চড়ে ভাই-বোনের সঙ্গে কলকাতার অলিগলির এ মাথা থেকে ও মাথা ঘুরলেন জগন্নাথদেব। রথযাত্রা বলে কথা!

Advertisement

কলকাতার রথের ইতিহাস অতি প্রাচীন। শহরের অন্যতম আদি নিবাসী শেঠ পরিবারের বিশাল রথের যাত্রাপথের স্মৃতি নিয়ে আজও রয়েছে লালদিঘি থেকে বৈঠকখানা পর্যন্ত দীর্ঘ রাজপথ, যার আজকের নাম বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিট। কিন্তু শিশুদের জন্য আলাদা, ছোট, খেলনা রথের ব্যবস্থা শহরে কবে থেকে শুরু হল, তার ঠিক তথ্য না থাকলেও, জানা যায় যে সিমলে কাঁসারিপাড়ার প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী তারকনাথ প্রামাণিকের উত্তরসূরি প্রমথনাথ প্রামাণিক তাঁর পুত্র রাখালদাস প্রামাণিকের সন্তান শিবেন্দ্রকুমারকে (জন্ম ১৯৩৭) একটি ছোট রথ উপহার দেন শিবেন্দ্রের শৈশবে। ছোটরা তো বড় রথ টানতে পারবে না, বাড়ির শিশুদের রথযাত্রার আনন্দের ভাগ দিতেই বুঝি এই ছোট রথের ব্যবস্থা। এই বাড়ির বড় রথটির মতোই, প্রায় চার ফুট উচ্চতার এই ছোট রথটিও সম্পূর্ণ পিতলের তৈরি।

ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বাড়ির ছোটদের রথ কিনে দেওয়ার প্রচলন বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে এই ছোট রথ তৈরির সঙ্গে যুক্ত কারিগরদের সংখ্যাও। অন্য পেশার মানুষরাও মরসুমি জীবিকা হিসেবে এই রথ তৈরি করেন, প্রতিমাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কিছু শিল্পী-কারিগরও এই কাজ করেন। মানিকতলা অঞ্চলের ক্যানাল ইস্ট রোড থেকে বজবজ-নুঙ্গি পর্যন্ত নানা জায়গায় তৈরি হয় কাঠ বোর্ড আর রঙিন কাগজের তৈরি এই রথ। উত্তম পাল, গোপাল মাইতিরা এক-এক জন হাজার বা তারও বেশি সংখ্যায় রথ জোগান দিয়েছেন এ বার, চাহিদা অনুযায়ী।

Advertisement

কোভিড-অতিমারিতে গত দু’বছর ব্যবসা মার খেলেও এ বার পরিস্থিতি ও বাজার দুয়েরই উন্নতি হওয়ায় ভাল কাজ পেয়েছিলেন এঁদের অনেকেই। কালীঘাট মন্দিরে যাওয়ার মূল তোরণের পাশেই প্রতি বছর রথ তৈরি করেন পিন্টু সাহা, নিজেরই নতুন নতুন নকশা থেকে। রথের ঠিক দু’-তিন দিন আগে থেকে সাজিয়ে বসেন বিক্রির জন্য। কাঠের উপর তেলরং করা, আকর্ষণীয় এই ছোট রথগুলির (ছবিতে) নকশা কখনও মন্দিরস্থাপত্য, আবার কোথাও পৌরাণিক পুষ্পক দ্বারা প্রাণিত। আলোর মালা লাগানোর ব্যবস্থাও থাকে রথে। আড়াইশো টাকা থেকে ছ’শো টাকা পর্যন্ত পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে এ বার তাঁর তৈরি রথগুলি।

কাঠের এই মজবুত রথই হোক, কিংবা কাঠ-কাগজ-ধাতুর মিশেলে নড়বড়ে খুদে রথগুলি— শিশুহাতে সার্থকতা পেল গতকাল। মহানগরের রসনাসভায় খোঁজ পড়ল জিলিপি, পাঁপড়ের। এ বার উল্টোরথের অপেক্ষা।

স্মরণে, বরণে

বাঙালি মাত্রেরই চেনা ছিল তাঁর ব্যারিটোন। ‘আকাশবাণী কলকাতা, খবর পড়ছি...’ শোনা মাত্র বঙ্গমনে পূরণ হয়ে যেত শূন্যস্থানটুকু: দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবিতে)। ১৯৬০ থেকে আকাশবাণীর অনুষ্ঠান ঘোষক পদে, বেতার-সংসারে ছিলেন তিন দশকেরও বেশি, গড়েছিলেন একান্ত নিজস্ব এক ঘরানা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তা উত্তুঙ্গ উচ্চতা ও মরমি গভীরতা ছুঁয়েছিল, ১৯৭২-এ পদ্মশ্রী সম্মান তারই অর্ঘ্য। সমৃদ্ধ করেছেন বাচিক শিল্পজগৎকে— জৌলুসের লোভে আবৃত্তিতে চটজলদি অতিনাটকীয় অভিব্যক্তির বিরোধী ছিলেন। ২৫ জুন ছিল তাঁর জন্মদিন, ২৪ জুন সন্ধ্যায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল ‘দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি সংসদ’। তাঁর নামাঙ্কিত স্মৃতি সম্মানে ভূষিত হলেন দিলীপ ঘোষ ও সৌমিত্র মিত্র, স্মারক বক্তৃতায় পবিত্র সরকার বললেন আবৃত্তির নন্দনতত্ত্ব নিয়ে।

দ্বিপাক্ষিক

বাড়ির পুজোয় প্রতিমা গড়তে কৃষ্ণনগর থেকে শিল্পীদের এনে নিজের তালুকে বসিয়েছিলেন নবকৃষ্ণ দেব। সেই শিল্পী-পাড়াই কালক্রমে কলকাতার কুমোরটুলি। শহরের দুর্গোৎসবের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে নদিয়ার মৃৎশিল্পীরা; বহু সর্বজনীন ও বাড়ির পুজোর প্রতিমা কুমোরটুলি থেকে এলেও, অনেকে নিজ উদ্যোগে শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিমা নিয়ে আসেন। সেই ব্যবস্থাকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নদিয়ার মৃৎশিল্পী ও কলকাতার দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করেছিল ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ ও ‘শান্তিপুর পূর্ণিমা মিলনী’। গত ২৫-২৬ জুন মহানির্বাণ মঠে কথা হল এই উদ্যোগের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা, প্রতিমার দাম-সহ নানা বিষয়ে। এ বছর পুজোর উদ্যোগ শুরু হয়ে গিয়েছে, তবু শিল্পী ও পুজো উদ্যোক্তাদের এই যোগাযোগ জরুরি ছিল।

মঞ্চ ভরে

ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়ের দেখানো পথে দলের ৪৬ বছর পূর্তিতে ‘সমন্বয় কালচারাল ফেস্টিভ্যাল’ করতে চলেছে ‘রঙ্গকর্মী’। ৭ থেকে ৯ জুলাই প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ ঊষা গাঙ্গুলি মঞ্চে মঞ্চস্থ হবে ‘অন্তর্মুখ’ নাট্যদলের আগুন বৃষ্টির গল্প, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়-শ্রীপর্ণা সেন রায়ের কবিতা-কোলাজ, অলকানন্দা রায় ও সহশিল্পীদের নিবেদনে চণ্ডালিকা, সঙ্গীতশ্রদ্ধার্ঘ্য ঊষার আলো, ডলস থিয়েটার-এর পুতুলনাট্য চি চি ল্যান্ড; ১০ জুলাই রবীন্দ্র সদনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সৌতি চক্রবর্তী নির্দেশিত হিন্দি প্রযোজনা আভি রাত বাকি হ্যায়। অন্য দিকে, ‘থিয়েটার কমিউন’-এর প্রতিষ্ঠাতা, অভিনেতা-নির্দেশক নীলকণ্ঠ সেনগুপ্তের স্মৃতিতে তাদের পঞ্চাশ পূর্তি উদ্‌যাপন করছে নাট্যদলটি, ১-৩ জুলাই। তৃপ্তি মিত্র সভাঘরে নির্বাচিত নাট্যাংশ পাঠ হল কাল। অরুণ মুখোপাধ্যায় ও দেবাশিস মজুমদার ভূষিত হবেন নীলকণ্ঠ স্মারক সম্মানে, রয়েছে নাট্যাভিনয়ও।

গানের ওপারে

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের সুপারিশে গ্রামোফোন কোম্পানি বার করেছিল তাঁর রেকর্ড। নাচেও ‘গীতবিতান’-এর সর্বোচ্চ ডিগ্রি ছিল বুলবুল সেনগুপ্তের। তালিম ছিল শাস্ত্রীয় গানে। পড়াশোনাতেও গুণী, নন্দিতা কৃপালনীর বিচারে জাতীয় বৃত্তি পেয়েছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীতে। গান শিখিয়েছেন বৈতানিকে, ছিলেন রবীন্দ্রভারতীর বিভাগীয় প্রধান, ‘থিয়োরি’ নিয়ে জেরবার ছাত্রছাত্রীদের দিতেন রসসন্ধান। তাঁর গাওয়া ‘দৈবে তুমি কখন নেশায় পেয়ে’, ‘এবার উজাড় করে লও হে’, ‘আর রেখো না আঁধারে’ রেকর্ডগুলি স্মৃতি, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘মিউজিক ২০০০’ প্রকাশিত সিডি আজও মেলে, সেটুকুই সান্ত্বনা। ২২ জুন প্রয়াত হলেন এই শিল্পী ও শিক্ষক।

সহজ সুরে

১৯৭২ সালে অরুণ চক্রবর্তীর ‘তু লাল পাহাড়ির দেশে যা’ কবিতাটি প্রচলিত ঝুমুর গানের সুরে, বাঁকুড়ার সুভাষ চক্রবর্তীর কণ্ঠে রেকর্ড হয়ে বেরোয় ’৭৯-তে। শ্রীরামপুর রেল স্টেশনের পাশে একটি মহুয়া গাছের অবস্থানগত অসঙ্গতির ভাবনা থেকে কবিতাটির সৃষ্টি, কালক্রমে অনুবাদে বিস্তৃতি পেয়েছে ভারতের অন্যান্য ভাষা ও কয়েকটি বিদেশি ভাষায়। আর গানটির জনপ্রিয়তা লোকাল ট্রেনের শিল্পী থেকে বাংলা ব্যান্ডের গায়নে, মেলায়, ঘরোয়া আসরেও। এ গানের পঞ্চাশ বছর পূর্তিই উপজীব্য সহজিয়া ফাউন্ডেশন আয়োজিত দশম ‘সহজিয়া উৎসব’-এর। ৮ জুলাই বিকেল ৫টায় রবীন্দ্র সদনে, থাকবেন দেবদাস বাউল মনসুর ফকির কার্তিক দাস বাউল শুভেন্দু মাইতি স্বপন বসু-সহ এই সময়ের বিশিষ্ট গায়কেরা। ‘সহজিয়া সম্মান’-এ ভূষিত হবেন অরুণ চক্রবর্তী ও ঝুমুরিয়া সুভাষ চক্রবর্তী।

বহুরূপে সম্মুখে

বাংলার বহুরূপী-কথা উঠে এসেছে বইয়ে, চলচ্চিত্রের দৃশ্যকল্পে, কিন্তু বহুরূপীদের নজরকাড়া রূপ ও সজ্জা মূলগত ভাবে ‘ফোটোজেনিক’ হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নিয়ে আলোকচিত্র-নির্ভর কাজ ছিল না তেমন। সেই কাজটি করেছেন বিদ্যুৎ গোস্বামী ও দেবরাজ দাস, বীরভূম বর্ধমান মুর্শিদাবাদ-সহ বাংলার বহুরূপীদের জীবন ও শিল্পকে তুলে ধরেছেন স্থিরচিত্রে, দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে। তারই ফল এই বই, বহুরূপী: আ জার্নি উইদ দ্য প্রফেশনাল বহুরূপী কসপ্লেয়ারস অব বেঙ্গল। শুধু ৬৮টি ছবিই নয়, রয়েছে বহুরূপী শিল্পীদের সাক্ষাৎকার, ‘শ্রীনাথ বহুরূপী’ প্রসঙ্গ, এই শিল্পের ইতিহাস ও বর্তমান পরিস্থিতি। আগামী কাল ৩ জুলাই বিকাল ৫টায় বইটির প্রকাশ-অনুষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সভাঘরে, প্রকাশক ‘প্রাচ্য পাশ্চাত্য’র আয়োজনে। বহুরূপী শিল্প ও শিল্পীদের নিয়ে আলোচনা করবেন সংস্কৃতিজগতের বিশিষ্টজন। নীচে দেবরাজ দাসের ছবিতে দুর্গারূপী বহুরূপীকে মহিলাদের চাল দেওয়ার মুহূর্ত, বই থেকে নেওয়া।

অন্য চোখে

আলোকচিত্রের তত্ত্ব বিজ্ঞাননির্ভর। কিন্তু বিজ্ঞান, বিশেষত গণিতশাস্ত্র যদি প্রত্যক্ষ ভাবে এসে মেশে আলোকচিত্রের প্রয়োগে, কেমন হয়? ছয় দশকের ফোটোগ্রাফি-চর্চা শিক্ষাবিদ অধ্যাপক বিশ্বতোষ সেনগুপ্তকে নিয়ে এসেছে সেই ‘ম্যাথমেটিক্যাল ফোটো আর্ট’-এর জগতে। প্রথাগত দৃশ্যকল্পের আলোকচিত্র থেকে ভিন্ন এই দেখা— কম্পিউটার-ভিত্তিক পরীক্ষানিরীক্ষায় গাণিতিক ফর্ম কার্ভ ফর্মুলা ও মডেলের ব্যবহারে; ফ্র্যাক্টালস, থ্রি-ডি, ভোরোনোই, স্টিপলিং ইত্যাদির প্রয়োগে আলোকচিত্রের রূপ ও রূপান্তর। ছবিগুলি সাম্প্রতিক কালে গ্রিস, ইটালি ও ফ্রান্স ভ্রমণকালে তোলা হয়েছিল, তারাই হয়ে উঠেছে শিল্পীর নিরীক্ষাভূমি (ছবিতে)। ‘ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফোটোগ্রাফিক আর্ট’ (ফিয়াপ)-এর সম্মানিত আলোকচিত্রী বিশ্বতোষবাবুর ষাটটি ছবি নিয়ে প্রদর্শনী চলছে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এর নর্থ গ্যালারিতে। দেখার সুযোগ ৫ জুলাই পর্যন্ত, দুপুর ৩টে থেকে রাত ৮টা।

পঞ্চাশ পেরিয়ে

দিনটা ছিল ২৫ জুন, ১৯৭২। জায়গাটা— ১৮ এন মদন বড়াল লেন। এটাই ঠিকানা ‘গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি’র, সংক্ষেপে ‘এপিডিআর’ বলে চেনেন সবাই। কপিলপ্রসাদ ভট্টাচার্য প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত তিলোত্তমা ভট্টাচার্য প্রমুখের উদ্যোগ— রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরোধিতা, রাজনৈতিক বন্দিমুক্তি ও মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে তার যাত্রা অব্যাহত আজও। পঞ্চাশ পূর্ণ হল সংগঠনের, গত ২৫ জুন সকালে সে উপলক্ষে হল দফতর থেকে হেদুয়া পর্যন্ত শোভাযাত্রা, বিকেলে মহাবোধি সোসাইটি হল-এ কথায় গানে সমিতির অর্ধশতাব্দীর যাত্রা ফিরে দেখা, সেই সঙ্গে সমসময়ের বিপন্নতা থেকে উত্তরণের পথসন্ধানও। “মানুষ তবুও কিছু প্রতিবাদ করে, ক’রে যায়—” কবি-কলমের সত্যকে যাপনে প্রতিভাত করার নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement