দুই নেতার রসায়নেই কি শহরে দু’রকম কর্মবিরতি

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ যেমন বিবৃতি জারি করেছিল, তেমনই কর্মবিরতি দেখা গিয়েছে। জরুরি বিভাগ সচল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪৮
Share:

কর্মবিরতির জেরে বন্ধ বহির্বিভাগ। হাতে মাইক নিয়ে চলছে তারই ঘোষণা। বুধবার, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি সরকারের আনা বিলের বিরোধিতায় ডাকা কর্মবিরতি এ রাজ্যে কতখানি সফল হবে, সেটাই ছিল প্রশ্ন। দিনের শেষে যা দাঁড়াল, তা হল, আক্ষরিক অর্থেই কর্মবিরতি পালন করল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শুরু হয়েও তা ধরে রাখা যায়নি। দেরিতে পরিষেবা পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এসএসকেএমে। কিন্তু এন আর এস এবং আর জি করের ক্ষেত্রে সেই অভিযোগটুকু নেই। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, কলকাতা পুলিশ এলাকার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমন ভিন্ন ছবির পিছনে শান্তনু সেন ও নির্মল মাজির ‘মধুর’ সম্পর্ক একটি বড় কারণ।

Advertisement

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ যেমন বিবৃতি জারি করেছিল, তেমনই কর্মবিরতি দেখা গিয়েছে। জরুরি বিভাগ সচল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন। কিন্তু বহির্বিভাগের রোগীদের জন্য এক নম্বর গেটে ছিল হাত-মাইকে পরিষেবা না পাওয়ার ঘোষণা।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারের দরজা প্রথমে বন্ধ ছিল। চিকিৎসক মহলের খবর, সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ফোন করেন তৃণমূলের এক ‘প্রভাবশালী’ চিকিৎসক নেতা। বার্তা স্পষ্ট, বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা যাবে না। এর পরে বহির্বিভাগে টিকিট দেওয়া শুরু হতে দেরি হয়নি।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, এন আর এসে সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন নির্মল। আর জি করে আবার শান্তনুর পরিবর্তে নতুন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হয়েছেন সুদর্শন ঘোষদস্তিদার। আর যে ন্যাশনালে কর্মবিরতির মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন হবে না, সেখানকার রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু।

এই আবহে এ দিন নির্মলের মন্তব্যও তাৎপর্যপূর্ণ। আগাম ঘোষণা ছাড়াই দুপুরে আচমকা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ওই কর্মসূচিকে সমর্থন জানান আইএমএ-র রাজ্য সভাপতি নির্মল। তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা বলেন, ‘‘রোগীদের পরিষেবা দেওয়া যাতে ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকব। ধর্মঘট না করেও আন্দোলন হয়। স্বাস্থ্য ক্ষেত্র চটকল শ্রমিকদের মতো ধর্মঘটের জায়গা নয়।’’ এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি শান্তনু। ন্যাশনালের মতো অন্যত্র সে ভাবে কর্মবিরতি না হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটা বৃহত্তর স্বার্থের আন্দোলন। রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। আশা করব, সকল শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আইএমএ-র অবস্থানকে সমর্থন করবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement