প্রতীকী ছবি।
অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল কলকাতার আতশবাজি মেলা। শনিবার এই মেলা বন্ধের কথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায়। মেলা বন্ধের কারণ হিসেবে বিপুল অর্থ খরচের কথাই উল্লেখ করেছেন তিনি। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু হয়েছিল এই মেলা। তারপর থেকেই দেওয়ালির সাত দিন আগে কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে বসত আতশবাজি মেলার আসর। শতাধিক স্টল থাকত এই মেলায়। পাইকারি দরে বিক্রি করা হত হরেক কিসিমের আতশবাজি। গত বছর করোনা সংক্রমণের দাপটে প্রথমে সেই মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তে আতশবাজি উন্নয়ন সমিতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের থেকে মেলা করার অনুমতি পায়। করোনা বিধি মেনে ৩০টি স্টল নিয়ে মেলা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর আতশবাজি ব্যবসায়ীরা খরচের কারণে এই মেলার আয়োজন করতে পারছেন না।
মেলার আয়োজন করতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে ১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা ভাড়া বাবদ দিতে হয়। সঙ্গে বিদ্যুৎসংযোগ আনতে আতশবাজি উন্নয়ন সমিতিকে খরচ করতে হয় আরও সাত লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও প্রত্যেকটি স্টল করতে কম করে এক লক্ষ টাকা খরচ হয়। এমনকি কলকাতা পুলিশ ও পশ্চিমবঙ্গ দমকল বাহিনীর জন্য অস্থায়ী শিবির গড়তেও লক্ষাধিক টাকা খরচ হয় বলেই জানিয়েছে আতশবাজি উন্নয়ন সমিতি। মেলার পরিকাঠামো গড়তেই প্রায় এক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়। গত বছর থেকে শুরু হওয়া কোভিডের দাপটে আতশবাজির ব্যবসা তলানিতে ঠেকেছে। ২০২০ সালে যে প্রতীকী আতশবাজি মেলা হয়েছিল, তাতেও ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই। তাই এ বছর আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে সরাসরি মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা বলেন, ‘‘এ বার আতশবাজি মেলা থেকে সে ভাবে লাভ করা যাবে না। কারণ কোভিড বিধি মেনে মেলায় স্টল তৈরি করতে গেলে খরচের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। তাই মেলা করে আতশবাজি ব্যবসায়ীদের কোনও লাভই হবে না। বরং খরচ হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। তাই এ বছর মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ তবে জেলাস্তরে ছোটখাটো আতশবাজি মেলা হলে যে সমিতির কোনও আপত্তি নেই, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।