বান্ধবীকে স্পুটনিক ভি টিকা দেন দেবাঞ্জন ফাইল চিত্র।
কসবার সেই টিকাকরণ শিবির থেকেই নিজের বান্ধবীকেও টিকা দিয়েছিলেন ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব। শুধু বান্ধবী নয়, আরও চার বন্ধু ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও সেখান থেকেই টিকা দেওয়া হয়। প্রতারণার খবর সামনে আসার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
আনন্দবাজার অনলাইনকে ট্যাংরার বাসিন্দা বছর ২৭-এর তরুণী বলেন, ‘‘আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। আমাদের সঙ্গে এ রকম কেন করল? খুব রাগ হচ্ছে। আবার মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, আমাদেরও কি ভুয়ো টিকা দিয়েছে? না কি আমাদের ঠিক টিকা দিয়েছে। খবরটা শোনার পর থেকে কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না।’’ তরুণী জানিয়েছেন, টিকা নেওয়ার পর মেসেজ আসেনি বলে গত সপ্তাহেও তিনি ফোন করেছিলেন দেবাঞ্জনকে। তাতে নাকি তাঁকে দেবাঞ্জন বলেন, কিছুদিনের মধ্যেই মেসেজ চলে আসবে। এই মুহূর্তে হাতে ব্যথা ছাড়া তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি বলেই জানিয়েছেন তরুণী। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তিনি শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
আনন্দবাজার অনলাইনকে তরুণী আরও বলেন, ‘‘আমি রাজ্যের বাইরে একটি বহুজাতিক সংস্থায় চাকরি করি। চলতি মাসের ৮-৯ তারিখ দেবাঞ্জন টিকা নিয়ে নেওয়ার কথা বলে। সেই মতো ১০ জুন আমি ও আরও চার বন্ধু টিকা নিতে যাই। আমার বাবাও সঙ্গে গিয়েছিলেন।’’
তরুণীর দাবি, তাঁকে দেবাঞ্জন স্পুটনিক ভি টিকা নিতে বলেন। দেবাঞ্জনের বোন নাকি তরুণীকে বলেছিলেন, তাঁকেও বাড়িতে স্পুটনিক টিকা দিয়েছেন দেবাঞ্জন। সেই শুনে তরুণী স্পুটনিক নেন। এমনকি তাঁর বাবার কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় টিকা নেওয়ার সময় না হলেও তাঁকে দ্বিতীয় টিকা দিয়ে দেন দেবাঞ্জন। পরের দিন অর্থাৎ ১১ জুন তরুণীর মা এবং বাকি বন্ধুদের বাবা-মায়েরাও কসবার ওই ভুয়ো শিবির থেকেই টিকা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তরুণী।
ছোট থেকে তাঁদের বন্ধুত্ব। অথচ একবারের জন্যও তরুণীর মনে হয়নি দেবাঞ্জন ভুয়ো আইএএস। তরুণী জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যখনই দেবাঞ্জন দেখা করতে আসতেন, তখনই নীলবাতি লাগানো গাড়িতে আসতেন। সঙ্গে দেহরক্ষী থাকত। তাঁদের সঙ্গে থাকাকালীন ফোন এলে গোপনীয়তা রক্ষা করতেও দেখা যেত দেবাঞ্জনকে।