মদ খেয়ে অফিসে কি না, যাচাই শুরু বিমানবন্দরে

ডিজিসিএ-র নির্দেশ, মদ্যপান করে কেউ ডিউটিতে আসছেন কি না, তা নজরে রাখতে হবে। এত দিন ওই পরীক্ষা শুধু পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ক্ষেত্রেই করা হত।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

কর্মী-অফিসারেরা কেউ মদ্যপান করে কাজে এসেছেন কি না, তা যাচাই করতে শ্বাসের পরীক্ষা চালু হয়ে গেল কলকাতা বিমানবন্দরে।

Advertisement

‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)-এর নির্দেশ অনুযায়ী, বিমানবন্দরের এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) বা অ্যাপ্রন কন্ট্রোল-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে যাঁরা কাজ করেন, এ বার থেকে প্রতিটি শিফটেই ঢোকার মুখে সেই অফিসারদের ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ পরীক্ষা করতে হবে। এই আওতায় উড়ান সংস্থার কর্মী ও অ্যাপ্রন এলাকায় (যেখানে বিমান এসে দাঁড়ায়) কাজ করা সব ধরনের কর্মীকেই আনা হচ্ছে বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর।

ডিজিসিএ-র নির্দেশ, মদ্যপান করে কেউ ডিউটিতে আসছেন কি না, তা নজরে রাখতে হবে। এত দিন ওই পরীক্ষা শুধু পাইলট ও বিমানসেবিকাদের ক্ষেত্রেই করা হত। এ বার বিমান পরিবহণের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত অন্যদেরও এই পরীক্ষা হবে। তবে ডিজিসিএ জানিয়ে দিয়েছে, সবাইকে নয়, প্রতি শিফটে কমপক্ষে ১০ শতাংশ কর্মী-অফিসারের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করলেই হবে। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট ডিজিসিএ-র কাছেও পাঠাতে হবে।

Advertisement

গত ২ অক্টোবর, মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিন থেকেই কলকাতায় এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য আচমকাই নির্দেশ এসেছিল সেপ্টেম্বর মাসের শেষে। কিন্তু তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবু কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে তা বিক্ষিপ্ত ভাবে চালু করা হয়েছিল। কলকাতা বিমানবন্দরে চিকিৎসা পরিষেবা দেয় মেডিকা হাসপাতাল। বিমানবন্দরে সেই পরিষেবার দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুজিত বক্সী বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে কাজ করা বেশির ভাগ এজেন্সি, উড়ান সংস্থা এবং এটিসি অফিসারদের এই পরীক্ষা করার জন্য নতুন দু’টি যন্ত্র কেনা হয়েছে। একটি আগে থেকেই ছিল।’’

ঠিক হয়েছে, প্রতিটি শিফটের শুরুতে এই পরীক্ষা করা হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রধান সেই শিফটে কাজ করতে আসা কর্মী-অফিসারদের মধ্যে বাছাই করা ১০ শতাংশকে ওই পরীক্ষার জন্য পাঠাবেন। ওই পরীক্ষার জন্য আপাতত তিনটি জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে বলে সুজিতবাবু জানিয়েছেন। অ্যাপ্রন কন্ট্রোলের দফতর, মেডিক্যাল রুম এবং টার্মিনালের ভিআইপি লাউঞ্জ।

ডিজিসিএ-র নির্দেশ, যে ঘরে এই পরীক্ষা হবে, সেখানে ক্যামেরা বসিয়ে পরীক্ষার ভিডিয়ো করতে হবে। যে কেউ এই কাজ করলে হবে না। এক জন চিকিৎসক, নার্স, বা প্যারা-মেডিক্যাল কর্মীকে দিয়ে ওই কাজ করাতে হবে। প্রতি শিফটে এই পরীক্ষা করার জন্য ওই হাসপাতালের তরফে আরও প্যারা-মেডিক্যাল কর্মী নিয়োগ করা হবে বলেও সুজিতবাবু জানিয়েছেন।

ডিজিসিএ জানিয়েছে, বিমানের ইঞ্জিনিয়ার ও দমকলকর্মীরা ছাড়াও যাত্রিবাহী বাসচালক, কেটারিং, জ্বালানি ও অন্যান্য গাড়ির চালক, মার্শাল, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার্স (যাঁরা বিমানে সিঁড়ি লাগান, যাত্রীদের মালপত্র ওঠানো-নামানোর কাজ করেন), এরোব্রিজ অপারেটার-দেরও এই পরীক্ষা করতে হবে। এঁদের অনেকেই সরাসরি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অথবা গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সংস্থার অধীনে কাজ করেন।

কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ডিজিসিএ-র নিয়ম মেনে ব্রেথ অ্যানালাইজার পরীক্ষা চালু হয়েছে। এক দিনে ৪০ জনেরও বেশি কর্মীর এই পরীক্ষা হয়েছে। গত ২ অক্টোবর থেকে ইতস্তত যে পরীক্ষা হচ্ছিল, তাতে অবশ্য পাশ না করার কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’

কলকাতার পাশাপাশি দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, আমদাবাদ ও জয়পুরেও ২ অক্টোবর থেকে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement