ছটপুজোয় সরোবরের জলে গেল পরিবেশ আদালতে হলফনামা

আদালতে জমা দেওয়া ‘অ্যাকশন টেক্‌ন রিপোর্ট’-এ দাবি করা হয়েছিল, রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো আটকাতে বিকল্প জলাশয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্থানীয় পুর প্রতিনিধি, ভক্তদের প্রতিনিধি, পুলিশ, পরিবেশবিদদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৮
Share:

ছটপুজো রবীন্দ্র সরোবরে। ছবি: সুমন বল্লভ।

ছটপুজোর সময়ে রবীন্দ্র সরোবরের নিরাপত্তা এবং সরোবরে ঢোকা ও বেরোনোর বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ২৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিবেশ আদালতে হলফনামা দিয়েছিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি। কিন্তু তার পরেও যে ভাবে পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করে শনিবার সরোবরে ছটপুজো হল এবং প্রশাসন কার্যত নিষ্ক্রিয় থাকল, তাতে পরিবেশকর্মীরা মনে করছেন, হলফনামায় যা বলা হয়েছিল, রাজ্য নিজেই তা মানল না।

Advertisement

আদালতে জমা দেওয়া ‘অ্যাকশন টেক্‌ন রিপোর্ট’-এ দাবি করা হয়েছিল, রবীন্দ্র সরোবরে ছটপুজো আটকাতে বিকল্প জলাশয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্থানীয় পুর প্রতিনিধি, ভক্তদের প্রতিনিধি, পুলিশ, পরিবেশবিদদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সেখানে পুণ্যার্থীরা পরিবেশ আদালতের রায় মানার ক্ষেত্রে সম্মতি জানিয়েছেন।

রবীন্দ্র সরোবরে এ বার যাতে কোনও ভাবেই ছটপুজো না-হয়, তার জন্য রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। বলা হয়েছিল, ‘আইনই শেষ কথা এবং আইন যে সবার উপরে তা সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে।’ বলা হয়েছিল, ‘সরোবর রক্ষায় নবগঠিত কমিটি এবং কেএমডিএ যদি পুলিশ ডাকার প্রয়োজন বোধ করে, তা হলে মুখ্যসচিব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি।’ এ দিনের ঘটনার পরে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত উত্তর দেননি মেসেজেরও।

Advertisement

আরও পড়ুন: পুলিশ ছিল না কেন, ক্ষুব্ধ প্রাতর্ভ্রমণকারীরা

আদালতে অন্য একটি মামলায় কাল, সোমবার মুখ্যসচিবের উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে এ বিষয়টি উঠলে পরিবেশ আদালত কী মন্তব্য করবে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। কারণ, এর আগে বায়ুদূষণ রোধে ব্যর্থ হওয়ার জন্য একাধিক বার সরকারকে জরিমানা করেছে ওই আদালত। বিশেষ করে পরিবেশ আদালত ইঙ্গিতও দিয়েছিল, এ বার সরোবরে ছটপুজো হলে রাজ্যকে বড়সড় জরিমানার মুখে পড়তে হতে পারে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘প্রতি বার যে জরিমানার টাকা দেওয়া হয়, তা করদাতাদের টাকা। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।’’ পরিবেশকর্মী নব দত্ত বলছেন, ‘‘পরিবেশবিধি মানার ক্ষেত্রে রাজ্যে যে আইনের শাসন নেই, তা স্পষ্ট।’’ পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবর দেখভালের জন্য হাইকোর্ট গঠিত কমিটি কিছু দিন আগে ভেঙে দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। কিন্তু যে কমিটি তৈরি হল, তার সদস্যেরা কোথায় ছিলেন?’’

পরিবেশকর্মীরা মনে করাচ্ছেন, কিছু দিন আগেই এক মামলার শুনানিতে পরিবেশ আদালতের এক বিচারপতি ‘ভর্ৎসনা’ করে বলেছিলেন, ‘এমন শুধু পশ্চিমবঙ্গেই হয়!’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement