ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। —ফাইল চিত্র।
ধোঁয়া-দূষণের হাত থেকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ও সংলগ্ন এলাকাকে বাঁচাতে ওই স্মৃতিসৌধের তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কারা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করছে, তাদের চিহ্নিত করতে কলকাতা পুরসভা ও রাজ্য পূর্ত দফতরকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই মতো চলতি মাসের শুরুতে হলফনামা দিয়ে পুরসভা জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মতো তারা ময়দান এলাকায় একটি সমীক্ষা করেছিল। কিন্তু ওই এলাকা ২৮ বর্গকিলোমিটার হওয়ায় পুরো পরিস্থিতি বোঝা যায়নি। তাই সমস্যার বাস্তব মাত্রা বুঝতে তারা সমীক্ষার কাজে একটি সংস্থা নিয়োগ করতে দরপত্র আহ্বান করবে। তারই ভিত্তিতে পুর কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে আবেদন করেছেন, দরপত্রে নির্বাচিত সংস্থাকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়ার দিন থেকে সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত যেন পুরসভাকে ছ’মাস সময় দেওয়া হয়।
যদিও পুরসভার এই ‘দীর্ঘ সময়’ নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এক পরিবেশবিদের বক্তব্য, ‘‘দরপত্র আহ্বানের দিন থেকে নয়, বরং কাজের বরাত দেওয়ার পর থেকে ছ’মাস সময় চেয়েছে পুরসভা। একটা অনির্দিষ্ট কাল সময়ের কথা বলা হচ্ছে এখানে।’’
অন্য দিকে, এই মামলায় রাজ্য পরিবহণ দফতর তাদের হলফনামায় জানিয়েছে, তারা ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডের বিকল্প জায়গা বেছে নেওয়ার জন্য একাধিক বৈঠক করেছে। সেখানে বিভিন্ন সময়ে পূর্ত দফতর, কলকাতা পুলিশ, কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ, সেনা, কলকাতা পুরসভা, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, কেএমআরসিএল, ‘প্রাইভেট বাস অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-সহ একাধিক পক্ষের প্রতিনিধিরা ছিলেন। সেই আলোচনায় প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাব ছিল, সাঁতরাগাছি এবং হাওড়ার ফোরশোর রোড ও ডিউক রোডের জমিতে সরকারি বাস এবং পরিবহণ দফতরের অধীনস্থ এন্টালি, করুণাময়ী এবং নিউ টাউন-রাজারহাট এলাকার জমিতে বেসরকারি দূরপাল্লার বাস রাখার ব্যবস্থা করা হোক।
সেই মতো হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স, পূর্ত দফতর, রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ একাধিক পক্ষের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়। সেখানে দেখা যায়, সাঁতরাগাছি টার্মিনাসে ১৭০টি বাস রাখা যাবে। করুণাময়ী সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাসে এবং ফোরশোর রোডে বহুস্তরীয় (মাল্টি লেভেল) বাস রাখার ব্যবস্থা তৈরির ব্যাপারে পূর্ত দফতর রিপোর্ট দেবে বলে ঠিক হয়। পাশাপাশি, ধর্মতলায় ‘মাল্টি মোডাল ট্রান্সপোর্ট হাব’-এর রূপরেখা তৈরির জন্য রাইটসকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রথম কিস্তিতে তাদের প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে পরিবহণ দফতর জানিয়েছে। যদিও মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘২০০২ সাল থেকে এই মামলা চলছে। ২০০৭ সালে হাই কোর্ট রায়ও দিয়েছিল। কিন্তু তা এখনও রূপায়িত হয়নি।’’