ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভায় একসঙ্গে বদলি করা হল ম্যানেজার ক্যাডারের ২৪ জন আধিকারিককে। এত জন একই পদের আধিকারিককে একসঙ্গে বদলি করার এমন ঘটনা পুরসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছেন অনেকে। কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
মাসকয়েক আগে ডিজি (ডিরেক্টর জেনারেল) ক্যাডারের সমস্ত আধিকারিককেও একসঙ্গে বদলি করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে একই পদে বছরের পর বছর একই আধিকারিক দায়িত্বে থাকায় কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে বার বার প্রশ্ন উঠছে। মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, ‘দুর্নীতিমুক্ত’ পুরসভা গঠন করাই তাঁর লক্ষ্য। মেয়রের সেই ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতেই ডিজিদের পাশাপাশি এত জন ম্যানেজারকে একসঙ্গে বদলি করা হল বলে মনে করছেন পুর আধিকারিকেরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, এক-এক জন ম্যানেজার একই বিভাগে এবং একই পদে টানা ১০, ১৫ বা ২০ বছর থাকায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছিল। যদিও পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘এটা রুটিন বদলি।’’ ওই শীর্ষ আধিকারিক বিষয়টিকে রুটিন বদলি বলে দাবি করলেও একসঙ্গে এত জন ম্যানেজারের বদলি আগে কখনও হয়নি বলেই পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই বদলি ঘিরে আবার অন্য প্রশ্নও উঠেছে। একসঙ্গে এত জনের বিভাগের অদলবদল হলে তাতে পুরসভার কাজের গতি ঠিক থাকবে তো? কারণ, নতুন বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ম্যানেজারেরা প্রথম দিকে ফাইলের কাজ কতটা দ্রুত গতিতে শেষ করতে পারবেন, তা নিয়ে তাঁরা কেউ কেউ নিজেরাও সংশয়ে আছেন।
পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ম্যানেজার পদে কাজ করে আসা কোনও আধিকারিকের কিন্তু সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাজকর্ম নখদর্পণে থাকার কথা। কিন্তু নতুন কোনও আধিকারিক সেই দায়িত্ব নিলে কাজকর্ম বুঝে নিয়ে থিতু হতে বেশ কিছুটা সময় লেগে যেতে পারে। ফলে কাজের গতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
নয়া বদলি নীতিতে দেখা যাচ্ছে, অতীতে একসঙ্গে একাধিক বিভাগের দায়িত্ব সামলানো ম্যানেজারেরা এ বার থেকে কেবল একটি বিভাগ সামলাবেন। পুর আধিকারিকেরা মনে করছেন, শুধু একটি বিভাগের দায়িত্ব আসায় সেই বিভাগের কাজে আরও বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারবেন নতুন ম্যানেজারেরা।
পুরসভার কর্তারা মনে করছেন, পুর আধিকারিকেরা সকলেই যথেষ্ট অভিজ্ঞ। নতুন বিভাগে বদলি হওয়ায় কাজের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। কাজের গতি ও স্বচ্ছতা ফেরাতেই এই সিদ্ধান্ত।